পুদিনা পাতার উপকারিতা ও ১০ টি আশ্চার্যজনক পুস্টিগুন
পুদিনা পাতার উপকারিতার ও এর আশ্চার্য জনক পুস্টিগুনের কথা জানলে অবাক হবেন। আমরা
কম বেশি সবাই পুদিনা পাতার সাথে পরিচিত। কিন্তু পুদিনা পাতার পুস্টি গুন সম্পর্কে
অনেকে হয়তো জানি না। দেখতে অনেকটা বনপাতার মত কিন্তু গুনেমানে ভরপুর এই পুদিনা
পাতা।
গুনে ভরা এই পাতাটি প্রতিদিন খাবারের তালিকায় রাখলে সুস্থ্য থাকার পথ অনেকটাই সহজ
হবে। পুদিনা পাতার উপকারিতা ও আশ্চার্যজনক পুস্টিগুন সম্পর্কে আপনি কি
জানতে চাচ্ছেন, তবে আজকের এই আর্টিকেল জুড়ে সঙ্গে থাকুন।
পেইজ সূচিপত্রঃ পুদিনা পাতার উপকারিতা
- পুদিনা পাতার উপকারিতা ও পুস্টিগুন
- পুদিনা পাতা চাষ করবেন কিভাবে
- পুদিনা পাতার জুসের কার্যকারিতা
- পুদিনা পাতার উপকারিতা, শিশুরোগে এর ব্যবহার
- অ্যান্টিক্যানসারে পুদিনা পাতার ব্যবহার
- মাথাবেথা কমাতে ও মাইগ্রেনের সমস্যা কমাতে সাহায্য করে
- পুদিনা পাতা আপনার খাবারের স্বাদ যুক্ত করবে
- পুদিনা পাতা সংরক্ষন করবেন কিভাবে
- পুদিনা পাতার অপকারিতা
- পুদিনা পাতার উপকারিতা নিয়ে লেখকের মন্তব্য
পুদিনা পাতার উপকারিতা ও পুস্টিগুন
পুদিনা পাতা্র উপকারিতা ও পুস্টগুন অনেক আমরা জানিনা। আমরা কম বেশি সবাই পুদিনা
পাতাকে চিনি। কিন্তাতু এর ব্যবহার হয়তো জানিনা। পুদিনা পাতার উপকারের কথা বলে শেষ
করা যাবে না।পুদিনা পাতায় আছে অনেক উপকারিতা ও ঔসধিগুন। তাই এই পাতাকে ঔসুধি পাতা বলা
হয়। কিডনি ও লিভার সমস্যার সব থেকে ভালো ঔষধ হিসেবে কাজ করে।
আপনি জানলে অবাক হবেন পুদিনা পাতার মাঝে এতো বেশি পুস্টি গুন রয়েছে। পুদিনা
পাতায় সব ধরনের ভিটামিন ও মিনারেল রয়েছে। এটি আগা ও ডোগা সহ খাওয়া যায়। অনেক
ডাক্তার আছেন যারা লিভার ও কিডনি রোগিকে পুদিনা পাতার জুস খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে
থাকেন।নিয়মিত পুদিনা পাতা খাবারের ফলে অনেক রোগীই সুফল পেয়েছেন।
লিভার ও কিডনি রোগ ছাড়াও ঠান্ডা,কাশি,হাপানি সহ বিভিন্ন রোগের ঔষধ হিসেবে পুদিনা
পাতার জুস খেয়ে থাকেন। আপনি জেনে রাখবেন, পুদিনা পাতায় এমন এক যৌগ
আছে যা মানুষ ও প্রাণীর জিআই ট্র্যাকের টিস্যুগুলোকে শিথিল করে। ফলে আপসেট
স্টমাকের সমস্যা দূর হয়। পুদিনা পাতার সক্রিয় উপাদান হচ্ছে মেন্থল।যা মাইগ্রেনের
সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে।
বিজ্ঞানিরা লিস্টেরিয়া এবং সালমোনেলার মতো ব্যাক্টেরিয়ার উপর পুদিনার তেল পরীক্ষা
করেছেন। তারা বলেন, পুদিনার তেল ব্যবহারের পর এসব ব্যাকটেরিয়ার ব্রীদ্ধি বন্ধ
হয়েছে। এ সব ব্যাক্টেরিয়া ত্বকের সংক্রমনের জন্য দায়ী। আপনার ত্বকের প্রাকৃতিক
ভাবে উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে আনতে পুদিনা পাতার তেল অত্যন্ত কার্যকরি।
আরো পড়ুনঃ কলা খাওয়ার উপকারিতা
পুস্টির দিক বিবেচনা করলে পুদিনা পাতায় অনেক উপকার পাওয়া যায়। পুদিনা পাতা একটি
সুগন্ধি ও প্রানবন্ত সবুজ পাতা। পুদিনা পাতার উপকারের কথা বলে শেষ করা যাবে না।
প্রাচীন কাল থেকেই এই পাতার ব্যবহার চলে আসছে।যা অনেকারি অজানা।
এক টেবিল চামুচ পুদিনা পাতায় রয়েছে-
- ক্যালোরিঃ ৩ গ্রাম
- প্রোটিনঃ ০ গ্রাম
- চর্বিঃ ০ গ্রাম
- কার্বোহাইড্রেটঃ ০ গ্রাম
- ফাইবারঃ ১ গ্রাম
- চিনিঃ ০ গ্রাম
পুদিনা একটি ক্যাফেইনমুক্ত উপাদান। যা আপনার পেশিকে শিথল করতে সাহায্য করবে। আপনি
যদি ঘুমাতে যাওয়ার আগে পুদিনা পাতা খান, তবে আপনার ভালো ঘুম হবে। তাছাড়া পুদিনা
পাতার তেলের গন্ধ আপনাকে ভালো ঘুমাতে সাহায্য করবে। গবেষকরা বলেছেন, পুদিনার
গন্ধের গুনেই অনেক রোগ সেরে যায়।
গবেষণায় দেখা গেছে যে, কোষ্ঠকাঠিন্য, গ্যস, পেটেবেথা ও ডায়রিয়ার মতো সমস্যার
সমাধান দিতে পারে পুদিনা পাতা। এই জন্য পুদিনা পাতাকে সকল রোগের মহৌষধ বলা হয়।
ঔষধি গুনে ভরা এই পাতার জুড়ি মেলা ভার। তাই আপনাকে বলছি, সহজ লভ্য এই পাতাটি
আপনার হাতের নাগালেই রাখতে ভুলবেন না কিন্তু।
পুদিনা পাতা চাষ করবেন কিভাবে
এটি চাষ করা খুবই সহজ। ইচ্ছে করলেই হাতের কাছে পাওয়া জায়। বাসা বাড়ির প্রয়োজনে
আক্সট্রা জমিতে লাগার প্রয়োজন পড়ে না। আপনি টবে কিম্বা বাড়ির ছাদে কিম্বা বাড়ির
আশে পাশে পড়ে আছে এমন জায়গাতে পুদিনা পাতা চাষ করতে পারেন। তাছাড়া নস্ট হয়ে গেছে
এমন বালতি, ট্রেতে ও চাষ করতে পারেন। পুদিনা পাতা সারা বছরে পাওয়া যায়।
এটি ছায়াযুক্ত স্থানে চাষাবাদ করা যায়। পুদিনা পাতা চাষে বেশি আলোর শুরু প্রয়োজন
পড়ে না। ইচ্ছে করলেই আপনি ঘরের ভিতরে ট্রেতে করে লাগাতে পারেন। ট্রেতে মাটির
পরিমান ১০ থেকে ১২ ইঞ্চি পুরু হলেই চলবে। আপনি কোন ঝামেলা ছাড়ায় পুদিনা পাতার
লতাকে কাটিং করে আপনার টবে কিম্বা মাটতে লাগাতে পারেন।
মাটি ছাড়া পানিতে পুদিনা পাতা চাষের আরো একটি নতুন পদ্ধতি আপনার সাথে শেয়ার করতে
পারি। এতে করে সুন্দর ও তপতাজা পুদিনা পাতা হাতের নাগালেই পাওয়া যাবে। বাজার থেকে
আনার কোন ঝামেলা থাকবে না। তাহলে চলুন জানা যাক কিভাবে মাটি ছাড়া পানিতে পুদিনা
পাতা চাষ করবো-
পানি ছাড়া পুদিনা পাতার চাষ পদ্ধতি
- কিছু পুদিনা পাতার গাছ সংগ্রহ করি।
- ঢাকনা সহ একটি প্লাস্টিকের বাটি নেই।
- বাটির ঢাকনাতে লোহার আলপিন গরম করে বেশ কিছু ছিদ্র করি।
- এমনিভাবে ছিদ্র করি যেন পুদিনা গাসের লতা ঢুকানো যায়।
- এখন লতার উপরি ভাগের কিছু পাতা রেখে ,নিচের পাতাগুলো ছিড়ে নেই।
- এরপর পাতা ছিড়া নিচের অংশ বা ডাটা ঢাকনার ছিদ্রে ঢুকে দেই।
- ডাটাগুলো সমান না থাকলে, সমান করে কেটে নেই।
- এখন খালি বাটিটি পানি দিয়ে পূর্ন করি এবং ঢাকনাটি লাগিয়ে দেই।
- কয়েক দিনের মধ্যে নতুন পাতা গজানো শুরু হয়ে গেছে। এভাবে মাটি ছাড়া পুদিনা পাতা চাষ করা সম্ভব।
পুদিনা পাতার জুসের কার্যকারিতা
পুদিনা পাতার জুসের কার্যকারিতা ও পুদিনা পাতার উপকারিতা আজকের আলোচ্য বিষয়। আমরা
কম বেশি সবাই আম, জাম, কলা, কমলা, পেপে, পেয়ারা, আনারস সহ বিভিন্ন ফলের জুস খেয়ে
থাকি। এদের কোনটাতে বা রয়েছে ভিটামিন এ, ভিটামিন বি, ভিটামিন সি, ভিটামিন ই ও
ভিটামিন কে। তাছাড়া ও রয়েছে ফাইবার, মিনারেল, আয়রন,ম্যাঙ্গানিজ সহ নানা ধরনের
ভিটামিন।
আরো পড়ুনঃ মেথির উপকারিতা সম্পর্কে জানুন
আর শুধু পুদিনা পাতার জুসে রয়েছে, ভিটামিন এ, ভিটামিন সি ও ভিটামিন বি কমপ্লেস।
আরো রয়েছে ফাইটিনিউট্রিয়েন্ট ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা খাদ্য হজম করতে সাহায্য
করে। এ ছাড়া পেটবেথা, খিচুনি ও পেটের নানা প্রকার জটিল সমস্যা সমাধানে পুদিনা
পাতার জুস বিশেষ কার্যকরি ভূমিকা পালন করে।আপনি জানলে আরও অবাক হবেন যে, পুদিনা
পাতার জুস পিরিয়ডের ব্যাথা সারাতে ম্যাজিকের মতো কাজ করে।
পুদিনা পাতার জুস কোলন ক্যানসার ও ফুস্ফুস ক্যানসার নামক ভয়াবহ রোগ সারাতে
কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।পুদিনা পাতার জুসে রোজমেরিনিক এসিড বিদ্যমান, যা আপনার
শরীরের অ্যালার্জি কমাতে অত্যন্ত কার্যকরি। পুদিনা পাতায় আছে ভিটামিন সি,
যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। পুদিনা পাতার জুস আপনার নিঃশ্বাসকেই সতেজ করে না,
মুখে থাকা জীবানু দূর করতে সাহায্য করে।
আপনি রমজান মাসে সারাদিন রোজার ক্লান্তি দূর করতে এবং প্রয়োজনীয় পুস্টির চাহিদা
পুরুন করতে ইফতারিতে পুদিনা পাতার জুস রাখতে পারেন। এতে আছে অনেক ঔসুধি গুন।
পৃথিবীতে যত প্রকার ঔষধি পাতা রয়েছে ,পুদিনা পাতা তাদের মধ্যে অন্যতম।
পুদিনা পাতার পুস্টিগুন ও শিশুরোগে এর ব্যবহার
পুদিনা পাতার পুস্টিগুন ও শিশুরোগে এর কার্যকারিতা জানলে আপনি চমকে যাবেন। আপনার
শিশুর অতিসার যেমন পাতলা পায়খানা, পেট ফোলা, পেট মোচড় দিয়ে উঠা, অল্প অল্প আমাশয়,
বমি বমি ভাব, শিশু কিছুই খেতে চাচ্ছে না। এমন অবস্থায় আপনি ৮/১০ ফোটা পুদিনা
পাতার রস অল্প একটু চিনি ও লবন মিশিয়ে এক ঘন্টা পর পর আপনার শিশুকে খাওয়াতে
পারেন।
এতে করে আপনার শিশু সুস্থ্য হয়ে উঠবে। আজ কাল ডাক্তারের কাছে গেলে নানা ভোগান্তির
মুখোমুখি হতে হয়। সিরিয়াল দাও, লাইনে দাঁড়াও, পেস্ক্রিপশন পরে ঔষধ। আপনিই
বলেন,পুদিনা পাতার ঘরোয়া পদ্ধতিতে আপনার শিশু সুস্থ্য হয়ে উঠবে তাতে ভালো হয় না।
নিশ্চয় ভালো হবে। এতে করে ডাক্তারের কাছে যাওয়ার কোন ভোগান্তি ছাড়ায় আপনার শিশু
পুরোপুরি সুস্থ্য হয়ে উঠবে, এতে করে আপনার টাকাও বাচবে।
আরো পড়ুনঃ ব্রণ সারাতে মেথির যাদুকরি ম্যজিক
শিশুর বয়স অনুযায়ী মাত্রাটা বেশি করে নিবেন। তাহলে বেশি কার্যকরি হবে। শুধু
শিশুরাই নয়, এতে কিশোর, যুবক, বৃদ্ধ, আবাল বনিতা সহ সবাই পুদিনা পাতার এই
ঘরোয়া চিকিৎসা নিতে পারেন। এতে করে ১০০% সুফল পাবেন। পুদিনা পাতায় আছে মেন্থল। যা
আটকে থাকা কফ কে বের করতে সাহায্য করে। তাই দৈনন্দিন জীবনে পুদিনা পাতার ব্যবহার
অপরিহার্য।
আমাদের মাঝে অনেকে আছেন যাদের অতিরিক্ত খাবারের ফলে খাদ্য হজমে সমস্যা হয়, পেট
ফেপে থাকে, পেটে বেথা করে,বমি বমি ভাব এমন কি পাতলা পায়খানাও হতে পারে। যার কারনে
আপনার মুখে খাবারে অরুচি আসে। এই সময় পুদিনা পাতার শরবত সকাল বিকেল ৫/৭ দিন খেলেই
আপনার মুখে রুচি চলে আসবে। এ ক্ষেত্রে পাতার পরিমান ৮/১০ গ্রাম হতে হবে।
অ্যান্টিক্যানসারে পুদিনা পাতার ব্যবহার
অ্যান্টিক্যান্সারে পুদিনা পাতার ব্যবহার অপরিহার্য। পুদিনা পাতায় আছে মনোটারপিন
নামক উপাদান যা স্তন, লিভার ও প্যানক্রিয়াসের ক্যন্সার প্রতিরোধ করে। নিয়মিত খেলে
কোলন, ফুস্ফুস এবং ত্বকের ক্যান্সার থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। পুদিনা পাতার রস
শ্বাস-প্রশ্বাসের নালি খুলে দিতে সাহায্য করে। ফলে অ্যাজমা ও কাশির সমস্যা থাকে
না। পুদিনা পাতা গরম পানিতে ফুটিয়ে সেই পানির ভাপ নিতে পারেন।
এতে করে আপনি অ্যাজমা ও কাশি থেকে উপিশম পাবেন।পুদিনা পাতা আপনার নাক ও ফুস্ফুসের
জন্য তাজা বাতাসের শ্বাসের মতো। এটি আপনাকে সহজে শ্বাস নিতে সাহায্য করবে। ঠান্ডা
জনিত কারনে আপনার নাক বন্ধ হয়ে যেতে পারে পুদিনা পাতার গরম পানির ভাপ, আপনার বন্ধ
হওয়া নাক খুলে দিতে সাহয্য করবে। এটি আপনার নাকের জন্য প্রাকৃতিক ঔষধের মতো।
মাথাবেথা কমাতে ও মাইগ্রেনের সমস্যা কমাতে সাহায্য করে
মাথাবেথা কমাতে ও মাইগ্রেনের সমস্যা কমাতে পুদিনা পাতার জুড়ি নাই। যখন আপনার
মাথাবেথা করে, তখন পুদিনা পাতা আপনার অনেক উপকার করতে পারে। মাথাবেথার কারনে আপনি
পুদিনা পাতার তেল ব্যবহার করতে পারেন। এতে আপনার মাথাবেথা দূর হবে। তাছাড়া পুদিনা
পাতার পেস্ট বানিয়ে মাথায় লাগিয়ে দিলে মাথাবেথা দ্রুত উপশম হয়।
আমাদের মাঝে অনেকে আছেন যাদের অতিরিক্ত পুস্টি হীনতা ও বিভিন্ন ধরনের দূশ্চিন্তার
মেজাজ খিড়খিড়ে হয়ে থাকে। একমাত্র পুদিনা পাতার ব্যবহারের কারনে আপনার পুস্টি
পুরুন এবং শান্ত মেজাজ করতে সাহায্য করবে। এতে করে আপনি চিন্তা মুক্ত থাকতে
পারেন। আসলে কি জানেন, পুদিনা পাতার উপকারের কথা বর্ননা করে শেষ করা যাবে না।
আরো পড়ুনঃ মেথি চুল ঘন,কালো ও লম্বা করে
আপনার পরিবারের কেহ উচ্চ রক্তচাপে ভুগছেন, তারা খাবারের তালিকায় পুদিনা পাতা যোগ
করুন। চিকিৎসা বিজ্ঞানিরা বলেছেন, পুদিনা পাতা উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রনে দারুন
ভূমিকা রাখে। শক্তি একটু কম বোধ করছেন, চিন্তার কোন কারন নাই। একমাত্র পুদিনা
পাতাই পারে, আপনার বুস্টারের মতো শক্তি যোগাতে। এটি আপনাকে জাগ্রত এবং পরপূর্ন
শক্তিশালি করে তুলবে।
পুদিনা পাতা আপনার খাবারের স্বাদ যুক্ত করবে
পুদিনা পাতা এমনি একটি পাতা যা রান্নার সাথে যোগ করলে আপনার রান্নার স্বাধ আর
বহুগুনে বাড়িয়ে দিবে। সুন্দর একটি ফ্লেবারের জন্য আপনি এটাকে রন্নার সাথে যোগ
করতে পারেন। পুদিনা পাতা একটি গোপন উপাদানের মতো যা আপনার খাবারকে আরও
উপভোগ্য করে তুলবে। পুদিনা পাতা শুধু একটি সুস্বাদু ভেজস নয়, পাশাপাশি স্বাস্থ্য
উপকারিতাও রয়েছে। তাই বলতেই হয়, পুদিনা পাতা সুস্থ্য এবং
স্বাস্থ্যের জন্য এক ও অভিন্ন উপাদান।
- যখনই সম্ভব আপনি তাজা পুদিনা পাতা নির্বাচন করুন। শুকনো পাতার তুলনায় তাজা পুদিনা পাতার গন্ধ বেশি।
- খাবারের আগে ভালোভাবে ধুয়ে নিবেন, যাতে করে পাতায় কোন প্রকার ময়লা ও কিটনাশকের নির্যাস না থাকে।
- পরিস্কার পুদিনা পাতাগুলোকে কেটে ছোট ছোট টুকরা করি, স্বাদ এবং সতেজতার জন্য খাবারের উপরে ছিটিয়ে দিন।
- সালাদের অতিরক্ত স্বাদ যুক্ত করার জন্য পরিস্কার পুদিনা পাতা টুকরো করে কেটে আপনার সালাদে যোগ করতে পারেন।
- পুদিনা পাতাগুলোকে খাবারের পানীয় গুলোর সাথে সংযোজন করে থাকেন।পুদিনা পাতা বরফ চা, লেবু পানিইয় গুলোর একটি নতুন সংযোজন।
- পুদিনা পাতা দিয়ে চা তৌরী করুন। পুদিনা পাতার সুন্দর ফ্লেবারে আপনার মনকে প্রশান্তি দিবে এবং আপনাকে সতেজ করে তুলবে, তাই পুদিনা পাতার চা খেতে ভুলবেন না।
- স্মুদিতে যোগ করুন, আপনার ঠান্ডা ও সতেজ স্বাদের জন্য আনারস ও কলার মতো ফলের সাথে যোগ করুন, এতে বিশেষ ভাবে কাজ করবে।
পুদিনা পাতা সংরক্ষন করবেন কিভাবে
পুদিনা পাতা সংরক্ষন করবেন কিভাবে এ কথা ভাবছেন, ভাবনার কোন কারন নেই। আমি
আপনাকে পুদিনা পাতা সংরক্ষনের উপায় বলে দিব। তাহলে শুনুন, পুদিনা পাতা তাজা
রাখতে ফ্রিজে সংরক্ষন করুন, পাতাগুলো একটি প্লাস্টিকের ব্যগের মধ্যে রাবার দিয়ে
মুড়িয়ে নিন। ফ্রিজে রেখে দিলে পাতাগুলো দির্ঘদিন পর্যন্ত তাজা থাকবে।
আরো পড়ুনঃ ডালিম পাতার উপকারিতা
তাহলে আর চিন্তা কিসের, বাজার থেকে পদিনা পাতা আনার পর, রান্নায় ব্যবহার করার
পরো যদি বেশি থাকে, তাহলে আপনি পুদিনা পাতাগুলো ডাটা থেকে ছড়িয়ে নিন। তার পর
আইস ট্রেতে পরিমান মতো পানি দিয়ে পাতাগুলো রেখে দিন। এবার ফ্রিজে রেখে দিন,
পাতাগুলোকে আইস কিউবের মতো করে জমতে দিন। এভাবে পুদিনা পাতা সংরক্ষন করা যায়
দির্ঘদিন।
দেখবেন পুদিনা পাতা নস্ট তো হচ্ছেই না , রান্নার স্বাদ ও গন্ধ অটুট
থাকছে। এভাবে আপনি বেশ কিছদিন নিশ্চিন্তে ব্যবহার করতে পারবেন। তবে নিরাপদ
ব্যবহারের জন্য এই নির্দেশনা গুলো অনুসরন করতে পারেন।
পুদিনা পাতার অপকারিতা
পুদিনা পাতায় তেমন কোন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই। কিন্তু অধিক মাত্রায় খাওয়া
মোটেই ঠিক নয়। আপনি পুদিনা পাতা ঔষধের সাথে যোগ করতে পারেন, পিপারমিন্ট তেল,
অ্যান্টাসিড, সাইক্লোস্পোরিন, উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রনের ঔষধ। আপনি অবশ্যই জেনে
রাখবেন,বেশির ভাগ মানুষের জন্যি নিরাপদ।
পুদিনার তেল ছোট শিশুদের কখনই দিবেন না। কারন এটি পরিমানে বেশি খাওয়া হলে
বিষাক্ত হতে পারে। শিশুদের ত্বকে জ্বালার মতো প্রদাহ হতে পারে। এতে করে
এলার্জির সম্ভাবনা রয়েছে।
অধিক পরিমানে পুদিনা পাতা বা পুদিনা পাতার তেল খাওয়া যৌন জিবনের জন্য মোটেও
ভালো নয়। কারণ এটি শরীরে যৌন উদ্দিপনা সৃষ্টিকারী হরমোন টেসটোসটের মাত্রা কমিয়ে
দেয়। যা আপনার শরীরকে ঠান্ডা করে যৌন আগ্রহ কমিয়ে দিবে।
পুদিনা পাতার তেল সরাসরি ত্বকে লাগালে ত্বক জ্বালা-পোড়া, লাল হয়ে যাওয়া বা রেশ
বাড়ানোর মতো সমস্যা হতে পারে।
পুদিনা পাতার উপকারিতা নিয়ে লেখকের মন্তব্য
বন্ধুরা আজ আমি আপনাদের সাথে পুদিনা পাতার উপকারিতা ও পুদিনা পাতার
কার্যকারিতা, পুদিনা পাতার ব্যবহার, পুদিনা পাতার সংরক্ষন সহ বিস্তারিত আলোচনা
করতে সক্ষম হয়েছি। আপনি যদি পুদিনা পাতা খেতে পছন্দ করেন, তাহলে অবশ্যই আপনাকে
পুদিনা পাতা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে রাখতে হবে।
বেশিপুদিনা পাতা খাওয়ার কিছু অপকারিতা রয়েছে। যদি অতিরিক্ত পুদিনা পাতা খান,
তআহলে প্রথমে এই বিষয়গুলো জেনে নিবেন। এতোক্ষনে আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য অসংখ্য
ধন্যবাদ। যদি আপনি এই ধরনের আর্টকেল পড়তে চান তাহলে নিয়মিত আমাদের
ওয়েবসাইট ফলো করুন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url