অলিভ অয়েলের উপকারিতা ও ১০টি আশ্চার্যজনক পুস্টিগুন
অলিভ অয়েলের উপকারিতা ও এর আশ্চর্যজনক পুষ্টি গুণের কথা জানলে আপনি অবাক হবেন। আপনি কি অলিভ অয়েল সম্পর্কে জানতে চান, তাহলে সঠিক জায়গায় এসেছেন। অলিভ অয়েল সম্পর্কে আপনারা হয়তো অনেকে জানেন না।
অলিভ অয়েলের মাঝে কি পুষ্টিগণ রয়েছে কতটুকু ব্যবহার করতে হবে। আপনি যদি এ
সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চান, তাহলে আমার লেখা আর্টিকেলের সঙ্গে থাকুন।
পেইজ সূচিপত্রঃ অলিভ অয়েলের ব্যবহার ও পুস্টিগুন
- অলিভ অয়েলের উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা।
- ত্বকের যত্নে অলিভ অয়েল
- চুলের যত্নে অলিভ অয়েলের ব্যবহার
- রক্তের শর্করা কমাতে অলিভ অয়েলের পুস্টিগুন
- স্ট্রোক ও ক্যানসার প্রতিরোধে অলিভ অয়েলের ব্যবহার
- স্নায়ুকোষ সুরক্ষা ও হতাশা কাটাতে অলিভ অয়েলের ব্যবহার
- কোষ্ঠকাঠিন্য ও ব্রেস্ট ক্যানসার নিরাময়ে অলিভ অয়েল
- আলিভ অয়েলে বিদ্যমান উপাদান গুলো কিকি
- অলিভ অয়েলের দাম বা বাজার মূল্য
- অলিভ অয়েলের উপকারিতা নিয়ে লেখকের শেষ কথা
অলিভ অয়েলের উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা।
অলিভ অয়েলের উপকারিতা ও পুস্টিগুন অনেক বেশি। অলিভ মানে জলপাই, জলপাই থেকে মূলত এই তেল তৈরী হয়। তাই এই তেলের নাম অলিভ অয়েল। অলিভ দেখতে সবুজ ও কালো রঙের হয়ে থাকে। বিশ্বের উন্নত দেশগুলোতে তথা ভু-মধ্যসাগরীয় এলাকায় ঐতিহ্যবাহি অলিভ গাছ চাষ করা হয়। তবে বাংলাদাশেও চাষ করা হয়,পরিমানে কম।
আপনি কি জানেন, অলিভ অয়েলের মাঝে অনেক পুস্টিগুন বিদ্যমান। বাজারে পাচ রকমের অলিভ অয়েল পাওয়া যায়। এগুলোর মাঝে এক্সট্রা ভার্জিন অয়েল সবচেয়ে ভালো। এক্সট্রা ভার্জিন অয়েল, অলিভ থেকে পিষে প্রথম বের করা তেলটিকেই এক্সট্রা ভার্জিন অয়েল বলে। এক্সট্রা ভার্জিন অয়েল ত্বকের জন্য খুবই উপকারী। এই তেলে প্রচুর পরিমানে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট আছে।
আরো পড়ুনঃ মেথির আশ্চার্যজনক উপকারিতা
পরিশোধিত না হওয়া্র কারনে এর মাঝে সকল পুস্টিগুন সংরক্ষিত থাকে। ত্বকের কোষগুলোকে সুন্দর ও সজিব রাখতে অলিভ অয়েলের বিকল্প নাই। ত্বককে ময়েশ্চারাইজড করতে, এবং তারুণ্য ধরে রাখতে অলিভ অয়েলের জুড়ি মেলা ভার।এক্সট্রা ভার্জিন ওয়েল হলো সবচেয়ে কম প্রক্রিয়া জাত, তাই এটি খুবই স্বাস্থ্যকর হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
অলিভ অয়েল প্রাকৃতিক পদ্ধতি ব্যবহার করে নিস্কাশন করা হয়। অলিভ অয়েল বিশুদ্ধতা গুনাবলিতে ভরপুর, তাই যেমনি স্বাদ তেমনি সুগন্ধে ভরা। অলিভ অয়েল শুধু ত্বকের সুরক্ষায় নয়, আপনি চাইলে রান্নার কাজে ব্যবহার করতে পারেন।আপনি যদি রান্নায় অলিভ অয়েল ব্যবহার করেন, তাহলে আপনার রান্নার স্বাদ বহুগুনে বৃদ্ধি পাবে।
সালাদ ও ভর্তায় আপনি এক্সট্রা ভার্জিন অয়েল ব্যবহার করবেন।দেখবেন কি সুন্দর একটা ফ্লেবার বের হয়েছে। এই তেল শিশু থেকে শুরু করে সবাই ত্বকের যত্নে ব্যবহার করতে পারেন। অলিভ অয়েল ব্যবহারের ফলে নানা রোগ নিরাময় হয়। তাই অলিভ অয়েলের উপকারিতা ও পুস্টিগুনের কথা বলে শেষ করা যাবে না।
ত্বকের যত্নে অলিভ অয়েল
ত্বকের যত্নে অলিভ অয়েলের উপকারিতা ও পুস্টিগুন অনেক বেশি। অলিভ অয়েল ত্বকের যত্নে খুবই গুরুত্বপূর্ন। রূপচর্চা থেকে শুরু করে সকল অঙ্গের সুরক্ষায় অলিভ অয়েল ব্যবহার করা যায়। আমরা অলিভ অয়েলের উপকারের কথা জেনে কিংবা না জেনে ব্যবহার করে থাকি। অলিভ অয়েল ভিটামিন ই তে পরিপূর্ণ।
এটি শরীরের বিভিন্ন রকমের সমস্যা যেমন বলিরেখা, একন, মেসতার মতো কঠিন সমস্যার মোকাবেলা করে, একই সাথে ত্বকের ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়তা করে। অলিভ অয়েল ত্বকের কোলাজন বৃদ্ধিতে সাহায্য করে, ফলে ত্বকের হারিয়ে যাওয়া উজ্জ্বলতা ফিরে আসে। কমে যায় মলিনতা। অলিভ অয়েলে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ডি ও ভিটামিন কে রয়েছে যা ত্বকের নানা ধরনের ক্ষত সারিয়ে তুলতে সাহায্য করে।
আরো পড়ুনঃ পুদিনা পাতার জুস খাওয়ার উপকারিতা
আমরা প্রতিদিন কমবেশি সবাই অলিভ অয়েল ব্যবহার করে থাকি। গ্রীস্মকালের তুলনায় শীতকালে বেশি ব্যবহার করি। শীতকালে ত্বকের যত্নে অলিভ অয়েলের জুড়ি নাই। অলিভ অয়েলে ভিটামিন এ,ভিটামিন ই, ভিটামিন ডি ও কে আছে। যা ত্বকের সবচেয়ে বেশি গভিরে পৌছে দিয়ে ত্বককে সর্বোচ্চ সুরক্ষা দেয়। আপনি যদি অলিভ অয়েল ব্যবহার করতে ইচ্ছা করেন,তাহলে মইয়শারাইজার হিসেবে ক্রিমের সাথে মিলিয়ে ব্যবহার করলে বেশ উপকার পাবেন।
চুলের যত্নে অলিভ অয়েলের ব্যবহার
আপনি অবশ্যই জেনে রাখবেন, চুলের যত্নে অলিভ অয়েল খুবই কার্যকরি। আমাদের অনেকেরই আছে, চুল পড়ে যায়, চুল ভেঙ্গে যায়, অকালে চুল পেকে যায়, চুল দেখতে উশকো-খুশকোর মতো জটিল সমস্যাকে সহজেই দূর করে। অলিভ অয়েলে আছে প্রচুর পরিমানে অ্যান্টিওক্সিডেন্ট, প্রটিন ও অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল যা চুলের রক্ষাবাচক বলা হয়।
নিয়মিত অলিভ ইয়েল ব্যবহারের ফলে আপনার চুলের যাবতীয় সমস্যা সমাধান করবে। আপনার চুল হবে লম্বা ও দিঘল কালো। সুন্দর মশ্রিন ও সিল্কি চুল নারী মনে এনে দিবে প্রশান্তির ছোয়া। চুলের যত্নে অলিভ অয়েলকে শক্তিয়াআলি প্রতিকার বলা হয়। কিভাবে চুলের যত্নে অলিভ অয়েল ব্যবহার করবেন তা এখান থেকে জেনে নিন।
শুস্ক চুলের জন্য ঃ একটি পরিস্কার পাত্রে পরিমান মতো অলিভ অয়েল কুসুম গরম করে নিন। তার পর চুলে হাল্কা ভাবে ম্যাসাজ করে নিন।
১০ থেকে ১৫ মিনিট এভাবে ম্যাসাজ করতে থাকেন। থাকুন চুলের আগা থেকে গোড়া পর্যন্ত আলতোভাবে মেসেজ করুন ১৫ থেকে ২০ মিনিটের জন্য রেখে দিন এরপর প্রতিদিনের শ্যাম্পু ও কন্ডিশনার দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন
হেয়ার মাস্ক হিসেবেও এ তেল ব্যবহার করা যায়। ডিমের সাদা অংশের সাথে এক
টেবিল চামচ অলিভ অয়েল মিশিয়ে নিন এরপর মাস্কটি মাথার ত্বক থেকে চুলের শেষ
পর্যন্ত লাগিয়ে নিন। ১০ থেকে ১৫ মিনিট অপেক্ষা করুন, পরে চুল স্বাভাবিক পানি
দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
অলিভ অয়েল তেল কন্ডিশনার হিসেবেও ব্যবহার করতে পারেন। মসৃণ চকচকে চুলের জন্য শুকনো চুলের গোড়া থেকে ডগা পর্যন্ত অলিভ অয়েল ভালো করে মিশিয়ে নিন। এরপর একটি ভেজা তোয়ালে দিয়ে চুলগুলো মাথায় মুড়িয়ে আধা ঘন্টা রেখে দিন। এই ঘরোয়া পদ্ধতি নিলে চুল হবে মসৃণ ও চকচকে এছাড়া চুলের গোড়াতে তেলের পুষ্টি যোগান হয় তাদের চুল থাকে হাইড্রেট ও কন্ডিশনড।
রক্তের শর্করা কমাতে অলিভ অয়েলের ্পুস্টিগুন
রক্তের শর্করা কমাতে অলিভ অয়েল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। অলিভ অয়েল একটি মেনু সেতুরেটেড ফ্যাটের চমৎকার উৎস যা কোলেস্টেরল কমাতে পারে আপনার হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে পারে অলিভ অয়েল ডায়াবেটিসের ক্ষেত্রে রক্তের শর্করাকে নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। তবে খাবারে এটি যোগ করার সময় আপনার সতর্ক অবলম্বন করা উচিত। এতে প্রচুর পরিমাণে ক্যালরি রয়েছে।
আরো পড়ুনঃ মেথি খায়ার উপকারিতা জানলে চমকে যাবেন
এই তেল ব্যবহারে ইনসুলিন প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, একই সাথে রক্তের গ্লোকজের
মাত্রা কমে আনে। সাবধান অতিরিক্ত অলিভ অয়েল সেবনে হাইপোগ্লাইসেমিয়া বা
দুর্বলতার মতো জটিলতার ঝুঁকি বেড়ে যায়। পরিমিত অলিভ অয়েল ব্যবহার করায়
সর্বোত্তম। অলিভ অয়েলে ক্যালরি থাকে 4000 যা দৈনিক ক্যালোর প্রয়োজন এর তুলনায়
দুই দিনের সমান। তাই দিনের প্রধান খাবার গুলো অলিভ ওয়েলে রান্না করা থেকে
এড়িয়ে চলুন।
স্ট্রোক ও ক্যানসার প্রতিরোধে অলিভ অয়েলের ব্যবহার
স্ট্রোক প্রতিরোধে অলিভয়েলের উপকারিতা বর্ণনা করতে গিয়ে সম্প্রতি এক স্বাস্থ্য
বিজ্ঞানীগণ বলেন অলিভয়েলে প্রচুর পরিমাণে মেনুসেচুরেটেড উপাদান রয়েছে। যা
ব্যবহারে মানুষকে স্ট্রোকের মতো মরণ ব্যাধি থেকে রক্ষা করে। হৃদরোগের ঝুঁকির
পাশাপাশি ডায়াবেটিসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে অত্যন্ত কার্যকর। বেশ কয়টি গবেষণায়
সংবেদনশীলতার উপর আখ্যা দিয়েছেন। তাই আমাদের প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় অলিভ
অয়েল রাখা খুবই দরকার।
স্ট্রোকের পাশাপাশি ক্যান্সার রোগেও প্রতিরোধ করে অলিভ অয়েল। এর মধ্যে রয়েছে
অনেক ঔষধি গুন। খাদ্য তালিকায় অলিভ অয়েল থাকলে ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়ক হয়।
আসুন এখন থেকে প্রতিদিন অলিভয়েলের ব্যবহার বৃদ্ধি করি। ডায়েটেশিয়ান বলেছেন
প্রতিদিন খাবারে অলিভ অয়েল ব্যবহারে কোলেস্টেরলের মাত্রা স্বাভাবিক থাকে, ফলে
ক্যান্সারের প্রবণতা কমায়। আজকাল অনেক মানুষের উচ্চ রক্তচাপ দেখতে পাওয়া যায়।
উচ্চ রক্তচাপ কেবল মানুষের স্বাস্থ্য হানি ঘটায় না বরং মৃত্যু মুখে ও ঢেলে দেয়।
অলিভ অয়েল ব্যবহারে উক্ত রক্তচাপ কমে, ফলে শরীর সুস্থ থাকে।
স্নায়ুকোষ সুরক্ষা ও হতাশা কাটাতে অলিভ অয়েল
কোষ্ঠকাঠিন্য ও ব্রেস্ট ক্যানসার নিরাময়ে অলিভ অয়েলের উপকারিতা
আলিভ অয়েলে বিদ্যমান উপাদান গুলো কিকি
- ক্যালোরিঃ ১১৯ কিলো জুল
- পলি আনসেচুরেটেড ফ্যাটঃ মো্ট ক্যালরির ১১%
- সেচুরেটেড ফ্যাটঃ মোট ক্যালরির ১৪%
- মনোয়ান স্যাচুরেটেড ফ্যাটঃ মোট ক্যালরির ৭৩%
- ভিটামিন কে দৈনিক চাহিদার ৭%
- ভিটামিন ই দৈনিক চাহিদার ১৩%
- লিনোলিক অ্যাসিডঃ ১৫.০% তাছাড়াও আছে-
- টোটাল ফ্যাটঃ ১০০ গ্রাম-১৫৩%
- কোলেস্টেরলঃ ০মিলি গ্রাম-০%
- সোডিয়ামঃ ২মিলি গ্রাম-০%
- পটাশিয়ামঃ ১মিলি গ্রাম-০%
- টোটাল কার্বোহাইড্রেটঃ০গ্রাম-০%
- প্রোটিনঃ ০গ্রাম-০%
অলিভ অয়েলের দাম বা বাজার মূল্য
- ক্যাস্টার অলিভ অয়েল ১০০গ্রাম যার বাজার মূল্য ১১০ টাকা
- কালোজিরা অলিভ অয়েল ১০০গ্রাম যার বাজার মূল্য ২০০ থেকে ২৫০ টাকা
- সিটা এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েল প্রতি ১ লিটারে এর বাজার মূল্য ১১৫০ থেকে ১২৫০ টাকা
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url