শসা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা-শসার ২০টি আশ্চার্য পুস্টিগুন
শসা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে অনেকেই জানেনা। আমরা শসার পুষ্টি
উপাদান না জেনেই সময় অসময়ে শসা খেয়ে থাকে। কোন কিছু খাওয়ার আগে তার উপকারিতা
ও অপকারিতা সম্পর্কে জানা দরকার।
আপনি যদি শসা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানতে চান, তাহলে আমার লেখা
আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন। আমার লেখা আর্টিকেলে শসা খাওয়ার উপকারিতা ও
অপকারিতা এবং শসার আশ্চর্য পুষ্টিগুণ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব। চলুন তাহলে
জানা যাক-
পোস্ট সূচীপত্রঃ শসার ২০টি আশ্চর্য পুষ্টিগুণ
শসা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
শসা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে আমাদের জানা দরকার। পুষ্টিতে
পরিপূর্ণ সবজির মধ্যে শসা অন্যতম। শসা আমাদের শরীরে অনেক উপকার করে থাকে। শসাতে
রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি উপাদান। শসার এই পুষ্টি উপাদান সম্পর্কে আমা্রা
অনেকেই জানিনা। শসা খাওয়ার উপকারিতা অনেক। বছরের প্রায় সব সময়ই শসার চাষ হয়।
শসাতে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের পুষ্টিগুন।
রূপচর্চা থেকে শুরু করে রোগ নিয়ন্ত্রণে শসার অনেক উপকার রয়েছে। শসার পুষ্টিগুণ
সম্পর্কে বলে শেষ করা যাবে না। শসা একটি উন্নত মানের সবজি। আমরা বিভিন্নভাবে শসা
খেয়ে থাকি। শসা তে শুধু পুষ্টি গুণে ভরপুর তাই নয়। শসাতে অনেক ঔষধি গুণ
রয়েছে। আপনাদের সুবিধার জন্য শসার উপকারিতা গুলো নিচে আলোচনা করা হলো-
- পানি শূন্যতা দূর করেঃ একটি শসার মধ্যে ৯০ ভাগ পানি থাকে। তাদের পরিবারের কারো যদি পানি শূন্যতা দেখা দেয় তা আপনি পানি শূন্যতা দূর করার জন্য শসা খাওয়াতে পারেন। শসা শরীরের পানি শূন্যতা দূর করতে কার্যকরী ভূমিকা রাখে। শসা খাওয়ার ফলে আপনার ক্ষুধার চাহিদা ও মিটবে পানির পিপাসা দূর হবে।
- শসা শরীরের জ্বালাপোড়া দূর করেঃ শসা শরীরে জ্বালাপোড়া দূর করতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে।অতিরিক্ত রোদে কাজ করলে কিংবা দীর্ঘ সময় ধরে আগুনের কাছে থাকলে শরীর জ্বালাপোড়া করতে থাকে। এ সময় আপনি যদি একটি শসা খান তাহলে ভিতর থেকে শরীর ঠান্ডা হয়ে আসবে। শসার মাঝে একটি গ্লোকোজের মতো ঠান্ডা উপাদান বিদ্যমান। তাই আমাদের প্রতিদিন শসা খাওয়া জরুরি।
- শরীরের বিষাক্ত পদার্থ দূর করেঃ শসা আমাদের শরীরের জমে থাকা বিষাক্ত পদার্থকে দূর করতে সাহায্য করে। শরীরের বিষাক্ত পদার্থ দূর করত আপনি শসার জুস খেতে পারেন। এক শসার জুস আপনার শরীরে প্রশান্তি এনে দিবে।
- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিঃ শসাতে রয়েছে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিকারী উপাদান। আপনি যদি নিয়মিত শসা খান তাহলে অন্য কোন রোগ আপনাকে সহজে আক্রান্ত করতে পারবে না। কেননা শসা রোগের জীবানুর সাথে লড়াই করে জীবাণুগুলোকে ধ্বংস করে দেয়। ফলে সহজে রোগ হতে পারে না।
- ভিটামিনের অভাব পূরণ করেঃ শসাতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ, ভিটামিন বি ও ভিটামিন সি হয়েছে। এই ভিটামিন গুলো আমাদের শরীরে নানান উপকার করে থাকে। ভিটামিন এ রাতকানা রোগে সহায়তা করে। ভিটামিন বি খাদ্যের অভাব পূরণ করে এবং ভিটামিন সি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় পাশাপাশি ত্বকের উজ্জ্বলতা আনে।
- ত্বকের যত্নে শসাঃ ত্বকের যত্নে শসা অনেক কার্যকরী। শসাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম, সিলিকন ও ম্যাগনেসিয়াম। যা আমাদের ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। আপনি যদি নিয়মিত শসা খান তাহলে আপনার ত্বকে কখনো উস্কো-খুশকো ভাব থাকবে না।
- কুষ্ঠ কাঠিন্য দূর করেঃ শসাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার। যা আমাদের খাদ্য হজম করতে সহায়তা করে। নিয়মিত শসা খাবারের ফলে কুষ্ঠ কাঠিন্য দূর হয়। আপনার যদি কোষ্ঠকাঠিন্য ব্যাধি থাকে, তবে আপনি নিয়মিত শসা খেতে পারেন।
- ক্যান্সার প্রতিরোধে শসাঃ শসা তে রয়েছে ক্যান্সার প্রতিরোধক উপাদান। আপনি যদি নিয়মিত শসা খান তাহলে ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে না। তাই আমরা মরণব্যাধি ক্যান্সার রোগের আক্রান্ত থেকে মুক্ত হতে নিয়মিত খাবারের তালিকায় শসা রাখতে ভুলবো না।
- ডায়াবেটিস রোগীর জন্যঃ ডায়াবেটিস রোগীর জন্য শসা অত্যন্ত উপকারী। শসাতে রয়েছে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট যা শরীরের অতিরিক্ত কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে। ডায়াবেটিস রোগীরা যদি নিয়মিত শসাখান তাহলে ডায়াবেটিস অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আসবে।
- উচ্চ রক্তচাপ কমাতেঃ আপনাদের মাঝে যদি কারো উচ্চ রক্তচাপ বা হাই প্রেসার থাকে, তাহলে তাকে নিয়মিত শসা খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তোলা উচিত। কেননা শসাতে এমন একটি উপাদান রয়েছে যা নিয়মিত খাবারের ফলে উচ্চ রক্তচাপ কমাতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে।
- মেদ কমাতে সাহায্য করেঃ অনেকেই মেদ কমার যন্ত্রণায় হিমশিম খাচ্ছে। নিয়মিত ব্যায়াম ও শরীর চর্চার মাধ্যমে মেদ কমানো সম্ভব। তাছাড়া আপনি যদি প্রতিদিন খাবারের তালিকায় শসা রাখেন তাহলে আপনার মেদ অনেকটাই কমে আসবে। শসাতে এমন একটি উপাদান রয়েছে, যা আমাদের শরীরের অতিরিক্ত চর্বি কমাতে সাহায্য করে।
- চোখের জ্যোতি বৃদ্ধি করেঃ শসাতে ভিটামিন এ থাকায় নিয়মিত শসা খাওয়ার ফলে চোখের জ্যোতি বৃদ্ধি হয়। ভিটামিন এ আমাদের রাতকানা রোগে সহায়তা করে। আপনি যদি নিয়মিত শসা খান তাহলে কখনো রাতকানা রোগে আক্রান্ত হবেন না
- চোখের নিচের কালো দাগ দূর করেঃ আমাদের মাঝে অনেকেরই চোখের নিচে ড্রাক থাকে বা কালো দাগ দেখা যায়। এ ড্রাক সাইকেল দূর করতে আমরা অনেকেই অনেক ধরনের প্রসাধনী ব্যবহার করে থাকি। চোখের নিচে কালো দাগ দূর করতে আমরা ঘরোয়া উপায়ে শসা কে ব্যবহার করতে পারি। ঘরোয়া উপায়ে যদি কালো দাগ দূর করতে পারি তাহলে এটা স্থায়ী হয়।
- ছানি পড়া দূর করেঃ অনেকের চোখে ঝাপসা দেখে, ছানি পড়ার কারণে চোখ দিয়ে ভালোভাবে দেখতে পায় না। শসার ঔষধি গুন চোখের ছানি পড়া দূর করতে সহায়তা করে। নিয়মিত শসা খাবারের ফলে চোখের ছানি পড়া রোগ হবে না।
- বাতের ব্যথা দূর করেঃ শসাতে রয়েছে সিলিকা নামক উপাদান। যা আপনার গেটে বাতের ব্যথা দূর করতে সাহায্য করবে। দ্রুত ফলাফলের জন্য আপনি শসার সাথে গাজর মিসড করে জুস খেতে পারেন এতে করে দেহের ইউরিক এসিড নেমে আসে। ফলে বাতের ব্যথা দূর করতে দ্রুত কার্যকরী হয়।
- মাথা ধরা দূর করেঃ ঘুম থেকে ওঠার পর অনেকের মাথা ঝিমঝিম করে এবং মিটমিট করে ব্যথা করে। নিয়মিত যদি এমন অবস্থা হতে দেখা যায়। তাহলে আপনি রাত্রে ঘুমানোর আগে একটি শসা খেয়ে নিতে পারেন। এতে করে আপনার আর মাথা ব্যথা থাকবে না।
- চুলের যত্নে শসাঃ আমরা চুলের যত্নে শসা কে হেয়ার প্যাক হিসেবে ব্যবহার করতে পারি। চুলের যত্নে শসা অনেক উপকারী। আপনি যদি আপনার চুলের জন্য হেয়ার প্যাক হিসেবে, শসা ব্যবহার করেন। তাহলে আপনার চুলের গ্রোথ বাড়বে, চুল লম্বা ও ঝলমলে হবে। মসৃণ ও রেশমি চুলের জন্য শসার বিকল্প নাই।
- নখের যত্নে শসাঃ সুন্দর নখ দেখতে কার না ভালো লাগে। সবাই চাই তার হাতের নখগুলো দেখতে সুন্দর হোক। আপনি যদি আপনার নখকে সুন্দর রাখতে চান তাহলে আপনার প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় শশা রাখবে। নিয়মিত শসা খাবারের ফলে আপনার হাতের নখগুলো দেখতে অনেক সুন্দর হবে।
শসা খাওয়ার অপকারিতা
শসা খাওয়ার অপকারিতা অনেকেই জানেনা। শসা খাওয়ার উপকারিতার পাশাপাশি অপকারিতা ও
রয়েছে। আমাদের সবার জেনে বুঝে শসা খাওয়া উচিত। কিছুতেই বেশি খাওয়া স্বাস্থ্যের
জন্য ছয় ক্ষতিকর। তাই আমাদের সময় বুঝে নিয়ম মেনে শসা খাওয়া উচিত। এতে
কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া থাকবে না। সব কিছুর একটি ক্ষতিকর দিক আছে।
আরো পড়ুনঃ কালোকেশি গাছের উপকারিতা ও ঔষধিগুন
শসা ও এর বিকল্প নয়। যদিও এটির অনেক পুষ্টিকর এবং ঔষধি গুণ আছে, তেমনি আছে অনেক
ক্ষতিকর দিক। চলুন তাহলে জানা যাক, শসার অপকারিতা বা ক্ষতিকর দিক গুলো কি কি?
আপনাদের সুবিধার জন্য শসার অপকারিতা গুলো নিচে আলোচনা করা হলো।
- মাত্রাতিরক্ত শসা খেলে আপনার পেট ফুলে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকবে।
- অধিক পরিমাণে শসা খাওয়ার ফলে গ্যাস হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
- আপনি যদি রাতে শশা খেয়ে ঘুমান, তাহলে এটি সঠিকভাবে হজম হয় না। তাই রাতে ঘুমানোর আগে শসা না খাওয়াই ভালো। কারণ এটি হজম প্রক্রিয়ায় বাধা সৃষ্টি করতে পারে।
- শসাতে পানি প্রক্রিয়া বেশি থাকায় কিডনি রোগীর জন্য ক্ষতিকর। তাই কিডনি রোগীকে শসা খেতে দেওয়া উচিত নয়।
- অতিরিক্ত শসা খাবারের ফলে আপনার ক্ষুধা মন্দা সৃষ্টি হতে পারে।
- শসাতে কিউকুর বিটাসিন নামক উপাদান আছে। তাই শসা বেশি খাবারের ফলে শরীরের টক্সিন এর পরিমাণ বেড়ে যায়। যা শরীরের জন্য খুবই ক্ষতিকর।
- শসা অতিরক্ত খাবারের ফলে শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান নাও পেতে পারেন। যা বিভিন্ন ভাবে আপনার শরীরে ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
- বাজারের শসা গুলো খেলে অনেক সময় ক্ষতি হতে পারে। কারণ এতে অনেক রাসায়নিক ব্যবহার করে থাকে।
- শসা তে প্রচুর পরিমাণে খাইবার থাকায় অতিরিক্ত খেলে আপনার পছন্দের সমস্যা হতে পারে।
- কাঁচা শসা অনেক সময় হজম নাও হতে পারে। বিশেষ করে যাদের পেট ব্যথার সমস্যা থাকে তাদের জন্য শসা এড়িয়ে চলা ভালো।
- কিছু মানুষের শসা এলার্জি থাকে। তার খাবারের ফলে শরীরে বিভিন্ন রকমের চর্মরোগ দেখা দেয়। তাদের জন্য শসা না খাওয়াই ভালো।
- শসা একদম কম ক্যালরিযুক্ত খাবার তাই একে একক খাবার হিসেবে খাওয়া সঠিক না।
গর্ভাবস্থায় শসা খাওয়া যাবে কি?
গর্ভাবস্থায় খাওয়া যাবে কি এটা অনেকেই জানে না। আসুন জেনে নেই গর্ভাবস্থায় শসা
খাওয়া সম্পর্কে। গর্ভাবস্থায় শসা খাওয়া খুবই জরুরী। কেননা শসার কিছু উপকারী
বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা গর্ভবতী মা এবং শিশুকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। গর্ভবতী
মায়ের জন্য শসা একদম নিরাপদ। শসা একজন গর্ভবতী মায়ের শারীরিক ও মানসিক দিক
দিয়ে গভীর ভাবে পরিবর্তন আনে।
চিকিৎসকগণ গর্ভবতী মহিলাকে শসা খাওয়ার উপদেশ দিয়ে থাকেন। শসা খাবারের ফলে
গর্ভবতী মহিলার মন মেজাজ ভালো ও চাঙ্গা থাকে। শসাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে
ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, সিলিকা, জিংক, আইরন, ভিটামিন বি-৬ সহ আরো অনেক পুষ্টি
উপাদান। গর্ভবতী মহিলাকে সুস্থ রাখতে শসা অত্যন্ত কার্যকরী। গর্ভবতী মহিলাকে শসা
মানসিক চাপ থেকে দূরে রাখে।
শসাতে প্রচুর পরিমাণে পানি থাকায় গর্ভবতী মহিলার শরীরে পানি শূন্যতা দূর করে।
কোন গর্ভবতী মায়ের যদি কোষ্ঠকাঠিন্য থাকে তাহলে নিয়মিত শসা খাবারের ফলে
কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হবে। গর্ভবতী মহিলার যদি উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা থাকে তাহলে শসা
খাবারের ফলে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করবে। তাই বলতে পারি গর্ভবতী
মায়ের জন্য শসা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
খালি পেটে শসা খাওয়ার উপকারিতা
খালি পেটে শসা খাওয়ার উপকারিতা অনেক বেশি। আমরা শসা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
দুটোই জেনেছি। খালি পেটে শসা খাবারের ফলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি
পায়। নিয়মিত শসা খাবারের ফলে। পেটে জ্বালাপোড়া দূর হয়। খালি পেটে শসা খেলে
পুষ্টির পরিমাণ বেশি পাওয়া যায়। খালি পেটে শসা খাবারের ফলে পেটের এসিডিটিক
সমস্যা দূর হয়। আপনি যদি খালি পেটে শসা খান তাহলে খাবারের প্রতি রুচি
বহুগুনে বেড়ে যাবে।
আরো পড়ুনঃ পেটের চর্বি কমানো উপায়
দৈনিক খালি পেটে শসা খেলে আপনার কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা থাকবে না। আপনাদের মাঝে
যাদের ডায়াবেটিস সমস্যা আছে তারা প্রতি নিয়মিত খালিপেটে শসার জুস খেতে পারেন।
এতে করে অনেক উপকার পাওয়া যায়। খালি পেটে শসা খাবারের ফলে শরীরের ক্ষতিকারক
টক্সিন বের হয়ে যায় এবং সাথে সাথে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। একটি শসা
আপনাকে সুস্থ ও সতেজ রাখতে বিশেষভাবে সহায়তা করে।
ওজন কমাতে শসার কার্যকারিতা।
ওজন কমাতে শসা বিশেষভাবে কার্যকরী। নিয়মিত শসা খাবারের ফলে আপনার শরীরের
অতিরিক্ত জমে থাকা চর্বি নিরসন হয়। শসা আপনার ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণ করে। সকালে খালি
পেটে শসা খাবারের ফলে অনেকক্ষণ আর ক্ষুধা লাগে না। ফলে বারবার খাবার প্রবণতাকে
কমিয়ে দেয়। ফলে আপনার শরীরের ওজন কমাতে সাহায্য করে। ওজন কমাতে শসার বিকল্প নাই।
অনেকেই ওজন কমানোর জন্য মাতোয়ারা হয়ে ওঠে।
ওজন কমানোর নানা বিজ্ঞাপন দেখে ঔষধ কিনতে আগ্রহী হন। আবার অনেকেই এই ঔষধ কিনে
খেতে থাকেন। দেখা যায় ওজন কমানোর জন্য ঔষধ খেয়ে অন্য রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়েছে।
তাই ওজন কমানোর ঔষধ খাওয়া উচিত নয়। ওজন কমানোর জন্য আপনাকে খাদ্য নিয়ন্ত্রণে
আনতে হবে। অধিক ক্যালরিযুক্ত খাবার কম খেতে হবে। নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে এবং
প্রতিদিনের খাবারের তালিকায় শসা রাখতে হবে। তবে আপনার ওজন অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে
আসবে।
শসা খাওয়ার নিয়ম ও সঠিক সময়
শসা খাওয়ার নিয়ম ও সঠিক সময় সম্পর্কে জানা দরকার। আমরা অনেকেই সময় ও অসময়ে
শসা খেয়ে থাকি। কিন্তু শসা খাওয়ার নিয়ম এবং পরিমাণ সম্পর্কে জানি না। শসা
খাওয়ার নিয়ম ও সঠিক সময় সম্পর্কে জেনে শসা খাওয়া উচিত। শসা খাওয়ার সঠিক
নিয়ম ও সময় সম্পর্কে সবার সচেতন হওয়া দরকার।
আরো পড়ুনঃ ত্বক ও চুলের যত্নে মুলতানি মাটির ব্যবহার
- খাবার শসা খাবার সঠিক সময় হচ্ছে সকাল ও দুপুরে খাবারের সময়। আপনি যদি সকালে খালি পেটে শসা খেতে পারেন তাহলে আপনার জন্য আরো উপকার বয়ে আনবে।
- আবার সকালে যাদের খালি পেটে শসা খেলে অসুবিধা মনে হয় তারা সকালের পরিবর্তে দুপুরে খাবেন।
- রাতে ঘুমানোর আগে শসা খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। কারণ ঘুমানোর আগে শসা খেলে হজমের ক্ষেত্রে বাধা সৃষ্টি করে।
- আপনি যদি শসার সঠিক পুষ্টি উপাদান পেতে চান তাহলে আপনাকে সঠিক নিয়মে এবং সঠিক সময়ে শসা খেতে হবে।
- বাজার থেকে শসা এনে পানির সাথে ভিনেগার মিশিয়ে কমপক্ষে ১৫ মিনিট ভিজিয়ে রাখতে হবে। কারণ কেনা শসা তে বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহার করা হয়।
- ভিনেগার মিশ্রিত পানিতে শসা ভিজিয়ে রাখলে ক্ষতিকর পদার্থ দূর হয়ে যায়। ফলে শসার পুষ্টিগুণ বজায় থাকে।
শসার পুষ্টিগুণ সমুহ
পুষ্টি উপাদানে ভরপুর শসা। শসা আমরা বিভিন্ন ভাবে খেয়ে থাকি। এর মাঝে অনেক
উপকারী উপাদান রয়েছে। আমাদের প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় শসা রাখা দরকার। শসাতে
থাকা পুষ্টি উপাদান সম্পর্কে অনেকেই জানেনা। শসা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে শসা খাওয়া উচিত। চলুন তাহলে জানা যাক শসাতে কি ধরনের
পুষ্টি উপাদান রয়েছে। আপনাদের সুবিধার্থে শসার পুস্টি উপাদানের তালিকা দেওয়া
হলো।
প্রতি ১০০ গ্রাম শসার পুস্টি উপাদান নিম্নে তুলে ধরা হলোঃ
ক্রমিক নম্বর | পুস্টি উপাদান | পুস্টি পরিমাণ |
---|---|---|
১ | ভিটামিন এ | ১০৫ আইইউ |
২ | ভিটামিন সি | ২.৮ মিলিগ্রাম |
৩ | ভিটামিন ই | ০.০৩ মিলিগ্রাম |
৪ | ক্যালোরি | ১৫কিলো |
৫ | প্রোটিন | ০.৬৫ গ্রাম |
৬ | কার্বোহাইড্রেট | ৩.৬৩ গ্রাম |
৭ | খাদ্য আশ | ০.৫ গ্রাম |
৮ | থায়ামিন | ০.০২৭ মিলিগ্রাম |
৯ | নিয়াসিন | ০.০৯৮মিলিগ্রাম |
১০ | ফোলেট | ৭ মাইক্রোগ্রাম |
১১ | জিংক | ০.২০ মিলিগ্রাম |
১২ | ফসফরাস | ২৪ মিলিগ্রাম |
১৩ | লৌহ | ০.২৮মিলিগ্রাম |
১৪ | পটাশিয়াম | ১৪৭ মিলিগ্রাম |
১৫ | ক্যালশিয়াম | ১৬ মিলিগ্রাম |
১৬ | সোডিয়াম | ২ মিলিগ্রাম |
১৭ | ম্যাগ্নেশিয়াম | ১৩ মিলিগ্রাম |
১৮ | ভিটামিন কে | ১৬.৪ মাইক্রোগ্রাম |
ত্বকের যত্নে শসার ব্যবহার
ত্বকের যত্নে শসা ব্যবহারে জুড়ি মেলা ভার। রূপচর্চায় এমন কোন ফেসপ্যাক নাই যে
শসার ব্যবহার নেয়। মূলত সব ফেসপ্যাক এ শসার ব্যবহার চলে। শসাতে
আছে ময়েশ্চারাইজিং উপাদান। শসা ব্যবহারের ফলে আপনার ত্বক হয়ে উঠবে আরো
উজ্জ্বল মসৃণ ও কমল। ত্বকের যত্নে শসা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। চোখের
নিচে সার্কেল দূর করতে শসা খুবই কার্যকরী।
আপনি শসার তৈরি পেস্টকে ঘরোয়া ত্বকে ব্যবহার করতে পারেন। এতে করে আপনার শতভাগ
কার্যকরী হবে। ত্বকের যেকোনো কালো দাগ এড়াতে আপনি শসার রসের সাথে গোলাপজল
মিশিয়ে ফ্রিজে রেখে দিন। এটি বরফ হয়ে গেলে সারা মুখে এপ্লাই করুন। এভাবে
নিয়মিত কয়েকদিন ব্যবহার করলে আপনার মুখের কালো দাগ দূর হয়ে যাবে।
শসার খাওয়ার উপকারিতা নিয়ে লেখকের মন্তব্য
শসা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা নিয়ে আজকের এই আলোচনা। আমার লেখা আর্টিকেলে শসা
খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সহ শসার আশ্চর্য পুষ্টিগুণ সম্পর্কে বিস্তারিত
আলোচনা করা হয়েছে। আমি আশা করব আপনি আমার এই আর্টিকেল পড়ে শসা খাওয়ার সম্পর্কে
সকল তথ্য জানতে পেরেছেন।
আমার লেখা আর্টিকেল পড়ে যদি আপনি উপকৃত হন তাহলে এ ধরনের নতুন নতুন তথ্য পেতে
আমার ওয়েবসাইট ভিজিট করুন। আর আমার লেখায় যদি আপনি কোন কষ্ট পেয়ে থাকেন তবে
আমাকে নিজ গুনে ক্ষমা করে দিবেন এতক্ষণে সঙ্গে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য
ধন্যবাদ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url