খেজুর খাওয়ার উপকারিতা ও ১৬টি আশ্চার্যজনক পুস্টিগুন

খেজুর খাওয়ার উপকারিতা ও দশটি আশ্চর্যজনক পুষ্টিগুণ নিয়ে আজকের আলোচনা করব আশা করি পুরো আর্টিকেল জুড়ে সঙ্গে থাকবেন আমরা অনেকেই জানি খেজুর খাওয়াচ্ছেন না এর পেছনে রয়েছে অনেক উপকারিতা এর সম্পর্কে আমরা হয়তো অনেকে জানিনা।
খেজুর-খাওয়ার-উপকারিতা
 
রোজা শেষে শরীরের প্রয়োজনীয় ভিটামিন যোগান দেওয়া এবং ক্লান্তি দূর করার জন্য খেজুরের গুরুত্ব অপরিসীম।খেজুরের মাঝে যে আশ্চার্যজনক পুস্টিগুন আছে, তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব।

পেইজ সূচীপত্রঃ খেজুর সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা

খেজুর খাওয়ার উপকারিতা

খেজুর অত্যন্ত সুস্বাদু পুষ্টিকর ও পরিচিত একটি ফল। খেজুরে আছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার, আয়রন ভিটামিন বি, ভিটামিন কে, ক্যালশিয়াম, ম্যগনেশিয়াম, পটাশিয়াম, জিংক ও ম্যঙ্গানিজ  সহ নানান  পুষ্টিগুণ। এসব আমাদের শরীরের জন্য খুবই প্রয়োজন। বয়স ৩০ এর উর্ধ্বে হলে মস্তিষ্কের স্মৃতি শক্তি ও ধারণ ক্ষমতা কমতে থাকে।

শুধু তাই নয় কর্মশক্তি ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাস,  দৃষ্টিশক্তি হীন, হৃদরোগ ও পেশির সমস্যা, স্ট্রোকের ঝুঁকি বৃদ্ধি, হিমোগ্লোবিনের সমস্যা, ডায়াবেটিস ও ত্বকের নানা সমস্যা হওয়ার ঝুঁকি দেখা দেয়। এসব সমস্যার সমাধানের সবচেয়ে ভালো উপায় ও দামি অস্ত্রই হল খেজুর।নিম্নে খেজুর খাওয়ার উপকারিতা ও আশ্চর্যজনক পুস্টিগুন সম্পর্কে আলোচনা করা হলো।

খেজুর মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বাড়ায়

খেজুরে আছে বিভিন্ন ধরনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যেমন আইসোমারটাইট, ফ্লাভোন্যেডস ও ফোলেনিক  যৌগ, যা মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বাড়ায়। এসব যৌগগুলো আমাদের মস্তিষ্ককের কোষগুলোকে ফ্রী রেডিকেলের ক্ষতি থেকে রক্ষা করে। একটি পরিসংখ্যানে দেখা গেছে- যারা প্রতিনিয়ত খেজুর খায় অন্যদের তুলনায় তাদের দক্ষ ভালো হয়। খেজুরে আছে ভিটামিন বি, যা মেজাজ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।


এছাড়া আছে ভিটামিন ব.১২ ও ফুলেট নামক উপাদান, যা আমাদের স্মৃতিশক্তি ও মনোযোগ বাড়ায়। আরও রয়েছে আইরন,  ক্যালসিয়া্‌ ম্যাগনেসিয়াম, পটাশিয়াম ও খনিজ পদার্থ যা ব্রেনের  কোষ গুলোকে সর্বদা সক্রিয় রাখে সক্রিয় রাখে। আপনার বয়স যদি ৩০ এর উর্ধ্বে হয় আর আপনি যদি স্মৃতিশক্তি লোভ করতে না চান তাহলে প্রতিদিন খাদ্য তালিকায় খেজুর রাখতে পারে।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়

খেজুর খাওয়ার উপকারিতা ও পুষ্টিগুণ রয়েছে অনেক বেশি। খেজুরে আছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট, ফাইবার, আইরন, ভিটামন এ, ভিটামিন বি ১্‌২, ভিটামিন কে, ক্যালসিয়া্‌ ম্যাগনেসিয়া্ম, পটাশিয়াম, জিংক ও ম্যাঙ্গানিজসহ নানা প্রয়োজনীয় উপাদান। খেজুর আমাদের শুধু পুষ্টি যোগান দেয় তাই নয়, আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতাও বাড়ায়। 

খেজুরে আছে ভাইবার যা আমাদের হজম প্রক্রিয়াকে সহজ করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে দৈনিক খাদ্য তালিকায় খেজুর রাখলে আমাদের পরিপাকতন্ত্র সুস্থ থাকবে এবং খাবারের পুষ্টি উপাদান গুলো ভালোভাবে শোষিত হবে। তাছাড়াও খেজুর হরমোনের সমস্যা কমাতে অত্যন্ত কার্যকর।
 
খেজুরে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ও মিনারেল থাকায় নানান ধরনের রোগ নিরাময় করার ক্ষমতা রাখে। ভিটামিন সি এর অভাবে রক্ত শুন্যতা দেখা দেয়। খেজুরে আয়রনের উপস্থিত থাকায় রক্তের হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বাড়ায় যা এ্যনিমিয়া বা রক্তশুন্যতা  রোগের জন্য অত্যন্ত কার্যকর।  নির্মিত খেজুর খেলে রক্তশূন্যতা দূর হয়, এবং শরীরের রক্ত সরবরাহ করে। 

খেজুর ফোলেটের একটি ভালো উৎস হওয়ার কারণে ২০ থেকে ২৫ মিলিগ্রাম ম্যাগনেসিয়াম, ভিটামিন বি ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান শরীরের লাল রক্ত কণিকা তৈরি ও হিমোগ্লোবিনের স্তর বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

খেজুর ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়

খেজুর এর স্বাস্থ্যগত উপকারিতা অনেক স্বাস্থ্য সচেতন মানুষের কাছে খেজুর সুপার ফুট হিসেবে পরিচিত। যারা প্রক্রিয়াজাত চিনি বা মিষ্টি খেতে চায় না তাদের জন্য খেজুরি সেরা। খেজুর ফাইবারের একটি উৎস হওয়ায় কোলনের স্বাস্থ্য উন্নতি করে এবং কোলন ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়। অনেক সময় আমাদের শরীরে জ্বালাপোড়া শুরু করে। 


একটি খেজুরি পারে এ জ্বালাপোড়া দূর করতে। খেজুরে আছে এন্টি ইনফ্লামেটরি বৈশিষ্ট্য, যা জ্বালাপোড়া প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। এছাড়াও রয়েছে ভিটামিন ও খনিজ পদার্থ, যা আমাদের দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং ক্যান্সারের কোষ সনাক্ত করে ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়াই করে।
 
মনে রাখতে হবে ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগী খেজুরের উপর নির্ভর করলেই চলবে না। স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে হবে, ধূমপান পরিহার করতে হবে, নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে এবং এবং ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা নেওয়া উচত।

হার্ডের সমস্যা দূর করে

আপনার যদি হার্ডের সমস্যা থেকে থাকে, তাহলে প্রতিদিন সকালে খাবারের আগে খেজুর খাবেন। একটি খেজুর আপনাকে হার্ডের সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে সাহায্য করবে। হৃদরোগের ঝুকির প্রধান কারণ হচ্ছে উচ্চ এল ডি এল কোলেস্টেরল। খেজুরে বিদ্যমান ফাইবার, যা এল ডি এল কোলেস্টোরেলের মাত্রা কমিয়ে হৃদরোগের ঝুকি কমায়।

খেজুরে বিদ্যমান পটাশিয়াম, যা শরীরের রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করবে। এছাড়া আছে ম্যগনাশিয়াম, যা পেশির কাজ করার ক্ষমতা বাড়িয়ে রক্ত জমাট বাধার ঝুকি কমায়। এছাড়া খেজুরে থাকা ভিটামিন বি ৬, ভিটামিন কে, ক্যালশিয়াম আমাদের হার্ডের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে।

খেজুর হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ বাড়ায়

খেজুরে আছে আয়রন যা আমাদের শরীরের রক্তের হিমোগ্লোবনের পরিমাণ বাড়ায়, রক্ত সরবরাহ বৃদ্ধি করে। খেজুরে যে আয়রন আছে তা ২০০ গ্রাম প্রায় ১.৮ মিলিগ্রাম। আইরনের ঘাটতি থাকলে রক্তশূন্যতা দেখা দেয় এবং ভিটামিন সি এর অভাবে ও রক্তশূন্যতা হতে পারে। খেজুর ফলেটের একটি ভাল উপাদান হওয়ার কারণে, ২০ থেকে ২৫ মিলিগ্রাম ম্যাগনেসিয়াম সহ ভিটামিন বি ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে। 
খেজুর-হিমোগ্লোবিনের-পরিমাণ-বাড়ায়

যা শরীরের লাল রক্ত কণিকা তৈরি করে এবং হিমোগ্লোবিনের স্তর বজায় রাখে নিয়মিত খেজুর খেলে রক্ত চলাচলে কোন বাধা সৃষ্টি হয় না। ফলে হৃদরোগ ও স্টক রোগের ঝুঁকি কমে। গবেষণায় দেখা গেছে পর্যাপ্ত পরিমাণে খেজুর খেলে যকৃত ভালো থাকে ও শক্তিশালী হয়। খেজুরের মাঝে সকল প্রকারের পুষ্টি উপাদান বিদ্যমান। সুতরাং আমাদের দৈনিক খাদ্য তালিকায় খেজুর রাখা উচিত।

কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে

দূর করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। খেজুরে আছে প্রচুর পরিমাণে ভাইবার। সাহায্য করে। প্রতিদিনের খাদ্য তালিকা খেজুর রাখলে কোষ্ঠকাঠিন্যের ঝামেলা থাকবে না। যারা বদহজমের সমস্যায় ভুগছেন, তারা যদি রাত্রে খেজুর ভেজে রেখে সকালে খালি পেটে খান, তাহলে ভালো ফল পাবেন। প্রতি ২০০ গ্রাম খেজুরে ১৩.৪ গ্রাম ফাইবার থাকে, যা কোষ্ঠকাঠিন্য ও বদহজমের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে।

খেজুর খুসখুসে কাশি দূর করে

পরিবারের কারো যদি কাশি হয়ে থাকে তবে, ঔষধ হিসেবে খেজুর রাখতে পারেন। কেননা খেজুরে রয়েছে আনেক ঔষধি গুন। তাছাড়া ভিটামিন, মিনারেল সহ আরো অন্যান্য খনিজ পদার্থ রয়েছে খেজুরের মাঝে। বিভিন্ন ধরনের ফলের মাঝে যতগুলো ভিটামিন মিনারেল বিদ্যমান একটিমাত্র খেজুরেই সব কয়টি ভিটামিন ও মিনারেল বিদ্যামান। তাই খেজুর কে কিংফ্রট বলা হয়।

 
খেজুরে আছে অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়া উপাদান, যা ব্যাকটেরিয়া দমন করতে সাহায্য করে। ব্যাকটেরিয়া আক্রমণের ফলে আমাদের ঠান্ডা, জ্বর, কাশি ইত্যাদি হতে দেখা যায়। এমন কি খুশখুসে গলা ব্যথা করে, বারবার কাশি উঠে, হাচি উঠে এসব থেকে নিরাময় পেতে হলে আমাদের খেজুর কে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। 

খেজুরের মাঝে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে, যা আমাদের শ্বাসতন্ত্রের প্রদাহ কমায় এবং কাশির সাথে খুসখুসে গলা ব্যথা কমাতে সাহায্য করে। ঠান্ডা কাশি নিরাময়ে খেজুর কিভাবে খাবেন ভাবছেন, আসুন জেনে নেই -পরিষ্কার একটি গ্লাসে কিছু খেজুর ভিজিয়ে নেই সারারাত্রি ভিজে রাখার পর সকালবেলা খালি পেটে খেলে ঠান্ডা কাশি দূর করতে সাহায্য করবে।

গর্ভবতী মায়েদের জন্য উপযোগী

খেজুর গর্ভবতী মায়েদের জন্য অত্যন্ত উপযোগী খাবার। খেজুরে আছে ফাইবার, মিনারেল, ভিটামিন এ, ভিটামিন বি ৬, ভিটামিন ১২, আইরন, পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম সহ অন্যান্য উপাদান। যা গর্ভবতী মায়েদের এবং শিশুর সুস্থতায় খুবই উপকারী। একজন গর্ভধারিনী মা প্রতিদিনের খাবারের তালিকায় খেজুর রাখতে পারেন। 

এ খেজুর গর্ভবতী মায়ের সব ধরনের ভিটামিনের অভাব পূরণ করবে, খাবারের হজম শক্তি বৃদ্ধি করবে, উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সাহায্য কর্বে, কোষ্ঠ কাঠিন্য প্রতিরোধ করবে, এমনকি গর্ভবতী মায়ের প্রসব বেদনা কমাতে সাহায্য করবে। শিশু স্বাস্থ্যের জন্য মায়ের বুকের দুধ উৎপাদন করতে সাহায্য করবে। একজন গর্ভবতী মা নিয়মিত খেজুর খাওয়ার বিকল্প নাই।
 
নিয়মিত খেজুর খেলে শরীরের রক্তচাপরিক মাত্রায় থাকে এতে গর্ভবতী মা এর শরীরের পাশাপাশি মন বেশ ভালো থাকে তার অনাগত সন্তানের সুন্দর গঠন হয়। কিন্তু গর্ব অবস্থায় শেষের দিকে আসলে প্রতিদিন 60 থেকে 80 গ্রাম খেজুর খাওয়া ভালো। সাবধান গর্ভবতী মায়েরা যেন অতিরিক্ত খাবার না খান-

কেননা অতিরিক্ত খাবারের ফলে হজমে বিঘ্ন ঘটতে পারে এবং এবং শর্করার মাত্রা বেড়ে যেতে পারে সেইসাথে ওজনও বেড়ে যেতে পারে। কেননা অতিরিক্ত ওজন বাড়ানো মা ও শিশু উভয়ের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। সেদিকে খেয়াল রেখে খাবার খাওয়া উচিত।

খেজুর ওজন নিয়ন্ত্রণ রাখে

খেজুর এমন একটি উপাদান যা আমাদের অতিরিক্ত ওজনকে নিয়ন্ত্রণ করে।খেজুরে আছে প্রচুর পরিমানে ফাইবার যা আমাদের ক্ষুধা কমায় এবং অতিরিক্ত খাবার খাওয়া থেকে দূরে রাখে ফলে ওজন নিয়ন্ত্রন থাকে। আমাদের মাঝে অনেকেই আছেন যারা ডায়েট কন্ট্রোল করতে চান, নিয়মিত এবং দুধের সাথে ভিজিয়ে খেজুর খেলে ওজন নিয়ন্ত্রণে আসবে। সকালে খালি পেটে খেতে হবে।

প্রতিদিন এভাবে খেলে আপনার ওজন নিয়ন্ত্রণে আসবে। খেজুরে প্রচুর পরিমাণে ক্যালরি এবং শর্করার পরিমাণ বেশি থাকায় অল্প খেজুর খেলেই পেট ভরে যায়। খেজুর খাওয়ার উপকারিতা চাইলে আপনি খালিও খেতে পারেন। আমাদের খাদ্য তালিকায় খেজুর রাখা উচিত আসন বন্ধুরা, আমরা প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় খেজুর রাখতে ভুলবো না।

ত্বককে মসৃণ ও উজ্জ্বল রাখে

খেজুর ত্বকে মসৃণ ও উজ্জ্বল রাখতে অত্যন্ত সহায়ক ভূমিকা পালন করে। খেজুরে আছে প্রাকৃতিক শর্করা,যা ত্বক কে মসৃণ ও উজ্জ্বল রাখে। আর ও আছে ফাইটোহরমোন, যা ত্বকের বলিরেখা দূর করতে বেশ কার্যকর। খেজুরে বিদ্যমান ভিটামিন সি ও ভিটামিন ডি কোলাজেন বুস্ট করে ত্বকের উজ্জলতা বাড়ায়। 

খেজুরে বিদ্যমান ইনফ্লামেটরি বৈশিস্ট আছে, যা ত্বকের প্রদাহ, জ্বালা-পোড়া,লালাভাব ও ফোলাভাব দূর করে। যদি আপনার ত্বকের উজ্জলতা হারিয়ে যায়,ত্বকে বয়সের ছাপ পড়ে, এবং ত্বক কুচকে যায়, এসব সমস্যা দূর করতে হলে নিয়মিত খেজুর খেতে হবে। আপনি যদি নিয়মিত খেজুর খান, তাহলে আপনার ত্বকের উজ্জলতা ফিরে আসবে।
 
নিয়মিত খেজুর খাবারের ফলে, ত্বক উজ্জল হবে, বয়সের ছাপ বলিরেখা, কুচকে যাওয়া সমস্যা দূর করবে। আপনার ত্বক কে করে তুলবে টান টান, কোমল ও মসৃণ। তাই  আমাদের ত্বকের সুস্থ্যতা বজায় রাখতে হলে দৈনি খাবারের তালিকায় খেজুর যোগ করতে হবে।

চুলের গোড়া শক্ত ও মজবুত করে

খেজুরে আছে প্রচুর পরিমানে প্রটিন, যা চুলের গোড়া শক্ত করে, ফলে চুল ঝরে পড়ে না, খেজুরে থাকা আইরন চুলের পাতলা হয়া থেকে রক্ষা করে। আর পটাশিয়াম চুলকে হাইড্রেড করে ও ত্বকের শুস্কতা দূর করে।খেজুর উপকারীতার জন্য গুরুত্ব না দিলেও , আপনার চুলের সৌন্দর্য বজায় রাখতে খেজুর কে আপনার দৈনিক খাদ্য তালিকায় রাখবেন।
চুলের-গোড়া-শক্ত-ও-মজবুত-করে
কেননা চুলকে নারীর সৌন্দর্যের প্রতীক বলা হয়। খেজুরে আছে ভিটামিন সি যা আপনার চুলকে লম্বা করতে সাহায্য করবে। প্রিয় বন্ধুরা, আপনারা যদি ঘন, লম্বা, ঝলমলে স্বাস্থ্যুজ্জল চুল পেতে চান, তাহলে আপনার প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় খেজুর রাখতে ভুলবেন না। কেননা সবচেয়ে বেশি পুস্টিগুন সম্পুর্ন ফল্টি হচ্ছে খেজুর।তাই খেজুরকে সুপারফুট ও বলা হয়।

খেজুর  খাওয়ার উপকারিতা ও আশ্চর্যজনক পুস্টিগুণে  

খেজুরে রয়েছে নানা উপকারিতা ও পুষ্টিগুনে ভরপুর। খেজুরে আছে ফাইবার, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট,  আইরন,  ভিটামিন এ, ভিটামিন বি, ভিটামিন সি, ভিটামিন কে,  ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, পটাশিয়াম, ও ম্যাঙ্গানিজ সহ নানা প্রয়োজনীয় পুস্টি উপাদান। এজন্য খেজুর কে কিং ফ্রট বলা হয়। সব রকমের ফল থেকে খেজুরে পুষ্টির পরিমাণ বেশি। নিচে খেজুরের পুষ্টি উপাদান এবং তার পরিমাণ উল্লেখ করা হলো-
খেজুরে ক্যালরির পরিমাণ ২৭৭ গ্রাম
প্রোটিনের পরিমাণ ১.৮১ গ্রাম
চর্বির পরিমাণ ০. ১৫ গ্রাম 
ভিটামিন বি এর পরিমাণ ৬০.২৪ মিলিগ্রাম
ম্যাঙ্গানিজ এর পরিমাণ ০.৩ মিলিগ্রাম
তামার পরিমাণ ০. ৩৫ মিলিগ্রাম এবং 
পটাশিয়ামের পরিমাণ ২৯২ মিলিগ্রাম

খেজুর কেন খাবেন

খেজুরা আছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ও মিনারেল যা আমাদের শরীরে দৈহিক চাহিদা মেটাতে সাহায্য করে। যা আমাদের শরীরকে কোলেস্টেরল থেকে মুক্তি দেয়, লাঞ্চ ও ক্যাভিটি থেকে মুক্তি দেয়, সারাদিন রোজা রাখার পর আপনার শরীরে গ্লুকোজের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয় খেজুর সেটা দ্রুত পূরণে সাহায্য করে। খেজুর কে পানিতে ভিজিয়ে সেই পানি পান করলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়।


খেজুর ভালোভাবে খাবারের সঙ্গে মিশতে সাহায্য করে ফলে বদহজম দূর হয়।নারীদের শ্বেদ প্রদর ও শিশুর রিকেট নিরাময়ে খেজুর অত্যন্ত কার্যকর। খেজুরে রয়েছে ৬৩ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম, ৭.৩ মিলিগ্রাম লৌহ যা আমাদের হাড়, দাঁত, নখ ও চুলকে ভালো রাখতে সাহায্য করে। খেজুরের মাঝে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম বিদ্যমান, যা আমাদের শরীরের নার্ভ সিস্টেমকে সচল রাখে।
 
গবেষণায় দেখা গেছে, খেজুরের মধ্যে ৪০০ মিলিগ্রাম পটাশিয়াম বিদ্যমান যা মানুষকে স্ট্রোক হওয়ার আশঙ্কাকে ৪০% কমিয়ে দেয়। ভিটামিন এ সমৃদ্ধ এই ফলটি দৃষ্টিশক্তির জন্য খুবই ভালো। খেজুরে থাকা খনিজ পদার্থ দৈহিক পুষ্টি যোগান দিতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে দাঁত ও হাড়কে মজবুত করে।প্রতি ১০০ গ্রাম খেজুরে ৩২৪ মিলিগ্রাম ক্যালোরি আছে, যা আমাদের দেহে ক্যালসিয়াম সরবরাহ করে।

খেজুরে আছে উচ্চমাত্রায় খাদ্য শক্তি যা আমাদের স্নায়বিক দুর্বলতা দূর করে ,দেহের শক্তি যোগান দেয়, হজম শক্তি বৃদ্ধি করে, পাকস্থলির শক্তি বাড়ায় এবং ত্বক ভালো রাখে আজওয়া খেজুর কে বিষের মহৌষধ বলা হয়।

খেজুরের অপকারিতা কি

খেজুরের অনেক উপকারিতা থাকলেও কিছু কিছু ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করতে হয়। আপনাদের মাঝে যাদের ডায়াবেটিস আছে, তারা খেজুর গ্রহণের পূর্বে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিবেন যাদের দেহে পটাশিয়ামের পরিমাণ বেশি তারা খেজুর খাওয়ার ব্যাপারে সাবধানতা অবলম্বন করবেন।

খেজুর খাওয়ার উপকারিতা নিয়ে লেখকের শেষ কথা

খেজুরের উপকারিতা আলোচনা করতে গিয়ে খেজুর সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করতে সক্ষম হয়েছি খেজুরের মধ্যে কি উপকার রয়েছে কোন কোন ক্ষেত্রে খেজুর খাওয়া একেবারে উচিত নয় গর্ভবতী মায়ের জন্য খেজুর খাওয়া কতটুকু যুক্তিযুক্ত, খেজুর খাওয়ার উপযুক্ত সময়। এ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।

খেজুর সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা যদি আপনার ভালো লাগে এবং আমার লেখা আর্টিকেল যদি আপনার উপকারে আসে, এই ধরনের আর্টিকেল পেতে নিয়মিত আমার ওয়েব সাইট ফলো করবেন। আমার লেখা আর্টিকেল পড়ে যদি আপনি কস্ট পেয়ে থাকেন, তবে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন





এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url