বিড়ালের কামড়ে কত দিনের মধ্যে টিকা দিতে হয়
ইট পাথরের দুনিয়ায় মানুষের সম্পর্ক দিন দিন যান্ত্রিক হয়ে যাচ্ছে। একাকীত্ব দূর করার জন্য মানুষ পোষা প্রাণীকে বেছে নিচ্ছে। পোষা প্রাণীর মধ্যে বিড়াল সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়।
কিন্তু এর পোষা প্রাণীটি যদি আপনাকে কামড় দেয় কিংবা আপনার শরীরে আঁচড় দেয় তবে করণীয় কি। এ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে আজকের এই আর্টিকেলে, চলুন তাহলে জানা যাক বিড়াল কামড়ালে কত দিনের মধ্যে টিকা দিতে হয়।
পোস্ট সূচিপত্রঃ বিড়ালের কামড় অত্যন্ত ক্ষতিকর
- বিড়ালের কামড়ে কত দিনের মধ্যে টিকা দিতে হয
- বিড়ালের কামড়ে টিকা বিষয়ে কিছু প্রয়োজনিয় তথ্য
- আপনার পোষা প্রাণীটি র্যাবিস আক্রান্ত কিনা
- আক্রান্ত ব্যক্তিকে কি ধরনের টিকা দিতে হবে
- আক্রান্ত ব্যাক্তিকে কত দিনের মধ্যে টিকা নেয়া উচিৎ
- র্যাবিস ভ্যাকসিন কোথায় পাওয়া যায়
- র্যাবিস ভ্যাকসিনের দাম কত
- পোষা প্রাণীকে কেন টিকা দেওয়া প্রয়োজন
- রেবিস ভ্যাকসিন এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া
- সচার আচার জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন উত্তর
- বিড়ালের কামড়ে কত দিনের মধ্যে টিকা দিতে হয় এই নিয়ে মন্তব্য
বিড়ালের কামড়ে কত দিনের মধ্যে টিকা দিতে হয়
বিড়ালের কামড়ে কত দিনের মধ্যে টিকা দিতে হয়। এটাই আজকের আলোচনার বিষয়। বাড়ির পোষা বিড়াল কিংবা কুকুর আপনাকে যদি কামড় দেয় কিংবা আচড় দেয় দুটোই মারাত্মক বিপদ। এ বিপদের কারণ হচ্ছে ভাইরাস। যার নাম র্যাবিস। এটি একটি আরএনএ ভাইরাস। আরে ভাইরাসের কারণে জলাতঙ্ক রোগ হয়।
এই রোগটি প্রাচীনকাল থেকেই মানুষের কাছে পরিচিত ছিল। এই রোগটি অত্যন্ত ভয়ানক। এ রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির মৃত্যু নিশ্চিত শতভাগ। পুরো পৃথিবী জুড়ে এখনো প্রতিবছর প্রায় ৬০,০০০ লোক জলাতঙ্ক রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করছে। এশিয়া এবং আফ্রিকা মহাদেশ প্রায় ৯৬% মানুষ জলাতঙ্ক রোগে মৃত্যুবরণ করে।
আরো পড়ুনঃ দাতের রুট ক্যানেল প্রতিরোধের উপায়
আপনার ঘরে থাকা পোষা প্রাণীটি যদি আপনাকে কামড় দিয়ে থাকে কিংবা আপনার শরীরে আঁচড় দিয়ে থাকে। তবে ২৪ ঘন্টার মধ্যেই আপনাকে জলাতঙ্কের টিকা নেওয়া উচিৎ।
বিড়ালের কামড়ে তাৎক্ষণিক করণীয় কিঃ
- অতি দ্রুত ক্ষতিস্থান পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে।
- ক্ষতস্থানটি ১৫ থেকে ২০মিনিট পানির নিচে রাখতে হবে।
- রক্ত ঝরা যদি বন্ধ না হয়, তাহলে চেপে ধরে কিংবা ব্যান্ডেজ এর সহায়তায় রক্তঝরা বন্ধ করতে হবে।
- আক্রান্ত স্থানে এন্টিবায়োটিক ক্রিম দিতে হবে যদি সম্ভব হয়।
- যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ডাক্তারের কাছে নিয়ে যেতে হবে।
- কামড় দেওয়ার ২৪ ঘন্টার মধ্যে ভ্যাকসিন দেওয়া উচিত।
বিড়ালের কামড়ে টিকা বিষয়ে কিছু প্রয়োজনিয় তথ্য
- আপনার পোষা প্রাণী বিড়ালটি যদি আপনাকে কামড় দিয়ে থাকে। এমনবস্থায় যদি ত্বক ভেঙে গেছে কিংবা রক্ত ঝরছে, তাহলে অবশ্যই আপনাকে টিকা নিতে হবে।
- কামড়ের স্থানটি যদি মুখ, ঘাড়, মাথা, হাত হয় তাহলে আপনাকে এন্টি র্যাবিস ভ্যাকসিনের পাশাপাশি ইমিউনোগ্লোবিলিন টিকা নিতে হবে।
- আপনার পোষা প্রাণীটি যদি কামড়ের ১০ দিন পর্যন্ত সুস্থ থাকে তবে আপনাকে ১৪ দিন এবং ২৮ দিনের টিকা না দিলেও চলবে।
- যদি কামড় দেওয়া স্থানে রক্ত বের না হয় তাহলে টিকা দিতে হবে না।
- আপনার পোষা প্রাণী বিড়াল কিংবা কুকুর যদি আপনাকে কামড় দেয় তবে প্রাণী নিয়ন্ত্রককে তাৎক্ষণিক কল করুন।,
- জলাতঙ্ক রোগ কুকুর এবং বিড়ালের জন্য শতভাগ মারাত্মক, কোন চিকিৎসা নাই। প্রতিরোধী মুখ্য বিষয়।
আপনার পোষা প্রাণীটি র্যাবিস আক্রান্ত কিনা
- বিড়ালের আচরণের পরিবর্তন আসবে, বিড়ালটি আগ্রাসী হয়ে উঠবে।
- ঘন ঘন শ্বাস নিতে থাকবে।
- আপনার পোষা প্রাণী বিড়ালটির মুখ দিয়ে লালা ঝরতে থাকবে।
- তার কণ্ঠস্বর পরিবর্তন হবে।
- অল্প দিনে বিড়ালটি মারা যাবে।
আক্রান্ত ব্যক্তিকে কি ধরনের টিকা দিতে হবে
আক্রান্ত ব্যাক্তিকে কত দিনের মধ্যে টিকা নেয়া উচিৎ
- টিকা দেয়ার প্রথম ধাপঃ ৫ বছরে যাদের টিকা দেওয়া হয়নি এমন ব্যক্তিদের জন্য বা শিশুদের জন্য ০ দিনে দুইটি টিকা দুই বাহুর মাংসপেশিতে দিবে। এরপরে সাত দিনে একটা ১৪ দিনে একটা এবং ২৮ দিনে একটা করে টিকা দিবে। আবার ০ শূন্য দিনে দুই বাহুতে দুইটি করে টিকা এবং ৭ ও ২১তম দিনে একটি করে এভাবেও টিকা দেয়া যেতে পারে।
- দ্বিতীয় ধাপঃ কোন কারণবশত যদি ইমিউনোগ্লোবিন পাওয়া না যায় সেহেতু ০তম দিনে দুইটি বাহুতে দুইটি টিকা নিতে হবে। এবং ৩, ৭, ২১ ও ২৮ তম দিনে টিকা ডোজ পূর্ণ করতে হবে।
- তৃতীয় ধাপঃ তবে পাঁচ বছরের মধ্যে টিকা নেওয়া থাকলে ০ তম দিনে ও তৃতীয় দিনে বুস্টার টিকা দিলেই চলবে।
- চতুর্থ ধাপঃ পোষা প্রাণীটি কামড়ের পর যদি ১০ দিন পর সুস্থ হয় তবে ১৪ তম এবং ২৮তম দিনের টিকা না দিলেও চলবে।
র্যাবিস ভ্যাকসিন কোথায় পাওয়া যায়
- রেবিস ভ্যাকসিন দুই ধরনের হয়ে থাকে। একটি মাংসপেশিতে উভয় বাহুতে দিতে হয় আর একটি চামড়ার নিচে দিত হয়।
- রেবিস ভ্যাকসিনের ডোজ ত্বক পেশিতে ইনজেকশনের মাধ্যমে দেওয়া হয়। তাই কুকুর কিংবা বিড়াল কামড় দিলে দেরি না করে সাথে সাথে জলাতঙ্কের টিকা নিতে হবে।
- জলাতঙ্কের টিকা জলাতঙ্ক রোগ প্রতিরোধে ব্যবহার করা হয় তবে বেশ কিছু জলাতঙ্কের টিকা পাওয়া যায় যেগুলো সর্বদা নিরাপদ ও কার্যকরী।
- এটি মূলত জলাতঙ্ক ভাইরাস সংস্পর্শে আসার আগে রোগ প্রতিরোধের জন্য সুপ্ত সময়ের মধ্যে দেওয়া উচিত।
- মানুষের মধ্যে জলাতঙ্কের ভাইরাসের সংক্রামক মূলত একটি প্রাণী কুকুর বিড়াল বা অন্যান্য পোষা প্রাণীর মাধ্যমে ঘটে থাকে।
- আক্রান্ত ব্যক্তির লালার সাথে পরোক্ষভাবে যোগাযোগের মাধ্যমেও জ্বালাত্নক ছড়াতে পারে।
র্যাবিস ভ্যাকসিনের দাম কত
পোষা প্রাণীকে কেন টিকা দেওয়া প্রয়োজন
রেবিস ভ্যাকসিন এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া
- ইঞ্জেকশন দেওয়ার কারণে সাইটে ব্যথা
- বমি বমি ভাব
- পেট ব্যথা
- মাথাব্যথা
- বেশি ব্যথা ইত্যাদি
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url