মুলতানি মাটির উপকারিতা। ত্বক ও চু্লের যত্বে ১০টি আশ্চর্যজনক টিপস
মুলতানি মাটির উপকারিতা সম্পর্কে আপনি কি জানতে চাচ্ছেন। তাহলে আপনি সঠিক
জায়গায় এসেছেন। আজ আমি আপনাকে মুলতানি মাটির উপকারিতা, ত্বক ও চুলের যত্নে ১০টি
আশ্চর্যজনক টিপস নিয়ে আলোচনা করব।
মুলতানি মাটি ব্যবহারে শুধু উপকারী হয় না। এর সঠিক ব্যবহার না জানলে ত্বকে
মারাত্বক ক্ষতি হতে পারে। চলুন আজ আমি আপনাদের মুলতানি মাটি উপকারিতা, ত্বক ও
চুলের যত্নে এর ব্যবহার এবং মূলতানি মাটি ব্যবহারে অপকারিতা রয়েছে কি না, এ
সম্পর্কে বিস্তারিত জানাবো।
পেইজ সুচীপত্রঃ মুলতানি মাটির উপকারিতা। ত্বক ও চুলের যত্নে ব্যবহার
মুলতানি মাটির উপকারিতা
সৌন্দর্য বাড়াতে মুলতানি মাটি বহু কাল থেকেই পরিচিত। যদিও আজকাল অনেকেই ত্বকের
যত্নে নামিদামি প্রোডাক্ট ব্যবহার করেন এর সাথে অনেকেই চোখ বুজে
ঘরোয়া উপায়ে মুলতানি মাটির উপর আস্থা রাখে। আপনারা কি জানেন মুলতানি মাটি
ও বাড়াতে পারে আপনার ত্বকের সমস্যা। এ মাটির কারণে যেমন আপনার ত্বক হতে পারে
উজ্জ্বল তেমনি এর সঠিক ব্যবহার না জানা থাকলে আপনার ত্বক হয়ে যাবে নিষ্প্রাণ। তা
কি আপনার জানা আছে? চলুন তাহলে মুলতানি মাটির উপকারিতা সম্পর্কে জেনে নিন।
তোকে সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য মুলতানি মাটির পেস্ট একটি ঘরোয়া ত্বকের সৌন্দর্য
বাড়াতে এ মাটির জুড়ি নেই। সুন্দর্য বৃদ্ধির জন্য এ মাটি খুবই উপকারী ও নিরাপদ।
মুখের বলিরেখা দূর করতে এবং তেল তেল ভাব দূর করতে এ মাটি দুর্দান্ত কার্যকর।
কিন্তু আপনি জানেন কি এ মাটি অতিরিক্ত ব্যবহার করার কারণে ত্বকের বেশ কিছু ক্ষতিও
হতে পারে।
আরো পড়ুনঃ ত্বকের উজ্জলতা বৃদ্ধির ঘরোয়া উপায়
মুলতানি মাটি ত্বকের যত্নে নিরাপদ হলেও অনেক সময় ত্বকের উপকার না এসে বহুমাত্রাই
ক্ষতিও হতে পারে। মুলতানি মাটির সঠিক ব্যবহার না জানলে ত্বক সংক্রান্ত অনেক
সমস্যা দেখা দিতে পারে। যাদের ত্বক তৈলাক্ত ও আঠালো, তাদের জন্য মুলতানি মাটির
পেস্ট অত্যন্ত কার্যকর। ত্বকের তেল তেল ভাব শুষে নিতে মুলতানি মাটি বিশেষ ভূমিকা
পালন করে।
তবে আবহাওয়ার দিকে খেয়াল করে মুলতানি মাটির ব্যবহার করতে হবে। আপনাদের যাদের তৈ
লাগত তারা শীতকালে মুলতানি মাটির পেস্ট ব্যবহার করতে পারেন কিন্তু যাদের ত্বক
শুষ্ক তারা এই প্যাকটি শীতকালে এড়িয়ে চলবেন। কেননা শুষ্ক ত্বকের জন্য মুলতানি
মাটির ব্যবহার অত্যন্ত বিপদজনক। এতে করে ত্বক শুষ্ক হয়ে বুড়িয়ে ভাব দেখা
যায়।
শুষ্ক ত্বকের জন্য শীতকালে মুলতানি মাটির পেস্ট ব্যবহার এড়িয়ে চলায় ভালো। শুধু
মুলতানি মাটির পেস্ট মুখে লাগালে আপনার ত্বকে ব্রণ ও ফুসকুড়ি দেখা দিতে পারে।
তবে আপনারা সরাসরি মুলতানি মাটি ব্যবহার না করে এর সাথে এলোভেরা জেল,
বাদামের পেস্ট বাদামের তেল ও মধু ব্যবহার করতে পারেন।
এতে করে ত্বকের সমস্যা হবে না। ত্বক প্রাকৃতিকভাবেই উজ্জ্বল হয়ে উঠবে।ত্বকের
পাশাপাশি চুলের জন্য এ মাটি ভীষণ উপকারী।এ মাটি ব্যবহারে চুলের খুশকি দূর
হয়, চুলের আগাফাটা দূর হয়, কোকড়ানো চুল লম্বা ও সোজা হয়।
কোথায় পাওয়া যায় মুলতানি মাটি
পৃথিবীর সব দেশে মুলতানি মাটি পাওয়া যায় না। পাকিস্তানের মুলতান নগরে এ মাটি
পাওয়া যায়। এ মাটির নাম কে কেন্দ্র করে এ শহরের নামকরণ করা হয়েছে মুলতান
শহর। রূপচর্চায় মুলতানি মাটির বর্তমানে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এ মাটিতে
রয়েছে ম্যাগনেসিয়াম ক্লোরাইড সমৃদ্ধ উপাদান। মাটি ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা
প্রাকৃতি কভাবে দূর করে ।
ত্বকের ভিতর থেকে উজ্জ্বল করতে সাহায্য করে। ত্বকের যত্নের পাশাপাশি চুলের
পরিচর্যা ও আপনি মুলতানি মাটি ব্যবহার করতে পারেন। মুলতানি মাটির উপকারিতা বলে
শেষ করা যাবে না। চলুন আজ আমি আপনাদের মুলতানি মাটির উপকারিতা ও ব্যবহার
সম্পর্কে জানাবো।
ত্বকের যত্নে মূলতানি মাটি
ত্বকের যত্নে বিভিন্ন রকমের ফেসপ্যাক এর গুণের কথা আমরা কম বেশি সবাই জানি
কিন্তু মুলতানি মাটি ব্যবহারের কথা আমরা জানি না। মুলতানি মাটি ত্বক উজ্জ্বল
করার সাথে সাথে ত্বকের কোষ পুনর্গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। মুলতানি
মাটি তৈলাক্ত ত্বকের যত্নে এর ব্যবহার বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
কেননা মুলতানি মাটি ত্বকের অতিরুক্ততে তেল শুষে নিতে সাহায্য করে। যাদের ত্বক
তৈলাক্ত, তারা এই ঘরোয়া প্যাকটি ব্যবহার করতে পারেন।মুলতানি মাটি গোলাপ জলের
সাথে মিশিয়ে পেস্ট বানিয়ে নিন, এই পেস্টিটি মুখে লাগিয়ে নিন। ১৫-২০ মিনিট
পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। এতোক্ষনে আপনার ত্বকে লাগানো পেস্টগুলো শুকিয়ে
যাবে।
এখন পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। ত্বকের তেলতেলে ভাব নিয়ন্ত্রণে মুলতানি মাটি খুবই
কার্যকর।শুস্ক ত্বকে সরাসরি মুলতানি মাটি ব্যবহার করা যাবে না। যাদের ত্বক
শুষ্ক তারা কাঁচা দুধ এবং এলোভেরার সাথে মুলতানি মাটির পেস্ট বানিয়ে মুখে
ব্যবহার করতে পারেন। এতে কোন সাইটিফিড নেই।
ব্রণের দাগ দূর করে- আপনাদের ত্বকে যদি ব্রণ দেখা দেয় তবে আপনি মুলতানি মাটির
পেস্ট ব্যবহার করতে পারেন। কেননা মুলতানি মাটির ব্রণ সারাতে অত্যন্ত কার্যকর।
ব্রণের সমস্যায় মুলতানি মাটি কিভাবে ব্যবহার করবেন তা আলোচনা করা যাক। চলুন
বন্ধুরা, পরিমাণ মতো মুলতানি মাঠের সাথে টমেটো রস, কাঁচা হলু্দ স্যানডালউড
পাউডার মিশিয়ে একটি ঘরোয়া ফেসপ্যাক তৈরী করে নিন।
এর পর তৈরি পেস্টটি মুখে লাগিয়ে নিন। ১০ থেকে ১৫ মিনিট পর্যন্ত অপেক্ষা ক্রুন।
পরে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এই প্যাকটি ত্বক ক্লিনজাল করতে সাহায্য করবে। এভাবে
সপ্তাহে ২-৩ দিন ব্যবহার করুন।দেখবেন আপনার ত্বকে থাকা ব্রণের দাগগুলো রিমুভ
হয়ে গেছে।
আরো পড়ুনঃ চর্বি কমাতে খাবারে পূর্ন মনোযোগী হন
ব্রণের সমস্যা যদি আরো বেশি হতে থাকে তবে মুলতানি মাটির সাথে নিম পাতা পেস্ট
করে মুখে লাগিয়ে নিন।১৫ থেকে ২০ মিনিট পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। এরপর মুখ
পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। নিয়মিত এটি ব্যবহার করলে ব্রণের সমস্যা
একেবারেই থাকবে না এটি পরীক্ষত।
মেছতা দূর করে- বয়স বাড়ানোর সাথে সাথে অনেকের ত্বকে মেছতার মত কালো দাগ হতে
দেখা যায়।এই মেছতা দূর করতে মুলতানি মাটি খুবই কার্যকর। আপনারা মুলতানি মাটির
সাথে আমন্ড অয়েল বা কেস্টরেল অয়েল মিশিয়ে ফেসপ্যাক তৈরী করে নিন। পরে তা মুখে
তা এপ্লায় করুন। ১০-১৫ মিনিট পর্যন্ত অপেক্ষা করুন।পরে পানি দিয়ে ধুয়ে
ফেলুন।দেখবেন মেছতার দাগ দূর হওয়ার সাথে সাথে ত্বক নরম করতে ও সাহায্য করে।
ঘাড়ে কিম্বা কণুর কালো দাগ দূর করে- আপনাদের মাঝে অনেকের ঘাড়ে কিম্বা কনুতে
কালো দাগ হতে দেখা যায়।এসব দাগ দূর করতে মুলতানি মাটি বেশ সহায়ক। এক চামুচ
মুলতানি মাটির সাথে আমন্ড গুড়া ও গ্লিসারিন মিশিয়ে হালকা ভাবে ঘুষতে
থাকুন। কারো যদি নাকের দুইপাশে কালো দাগ থাকে তবে সামান্য চিনির সাথে মুলতানি
মাটি মিশিয়ে ঘুষতে থাকুন।দেখবেন আপনার কালো দাগ দূর হয়ে গেছে।
ত্বকে বার্ধক্যের ছাপ দূর করে- মুলতানি মাটি বার্ধক্যের ছাপ দূর করতে সাহায্য
করে। যদি আপনি বার্ধকের কালো দাগ দূর করতে চান, তবে মুলতানি মাটির ব্যবহার করুন
এক চামচ মুলতানি মাটির সাথে এক চামচ টক দই ও একটি ডিমের সাদা অংশ মিশিয়ে একটি
প্যাক তৈরি করুন। এবার এটি মুখে লাগিয়ে নিন। ২০ মিনিট পর্যন্ত অপেক্ষা করুন,
তারপর মুখ ধুয়ে ফেলুন। এই প্যকটি আপনার ত্বককে টানটান করবে এবং স্কিনটন সমান
করতে সাহায্য করবে।
হাত-পায়ের কাল ভাব দূর করে- অনেকের আছে, মুখের তুলনায় হাত পায়ের রঙ কাল দেখায়।
এটা আমাদের ত্বকের একটা কমন সমস্যা। ত্বকের এই সমস্যা দূর করতে পারে একমাত্র
মুলতানি মাটি। এই সমস্যা সমাধানে আপনি মুলতানি মাটির সাথে বেসন আর কাচা হলুদ
বাটা মিশিয়ে প্যাক তৈরী করুন।
এবার মিশ্রনটি হাত পায়ে ভালোভাবে লাগিয়ে নিন.২০-৩০ মিনি্ট পর্যন্ত অপেক্ষা
করুন। এরপর কুসুম গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এভাবে নিয়মিত গোসলের আগে ব্যবহার
করতে পারলে আপনার ত্বক নরম ও উজ্জ্বল হবে।
চুলের যত্নে মুলতানি মাটির ব্যবহার
চুলের যত্নে মুলতানি মাটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। অনেকের চুল কোঁকড়ানো।
উস্কো খুশকো বাজে হতে দেখা দেয়। চুলের নেই কোন ভারসাম্যতা, নেই কোন কমলতা ।
এমন চুল দেখতে এমন মোটেই ভালো লাগেনা। এলোমেলো এই অগোছালো চুল গুলোকে সুন্দর,
ঝলমলে ও প্রাণবন্ত করে তুলতে পারে একমাত্র মুলতানি মাটি।
মুলতানি মাটির এই প্যাকটি ব্যবহার করতে কখনো ভুলবেন না। চলুন জেনে নেই কিভাবে
এই প্যকটি তৈরি করবো। এক কাপ মুলতানি মাটির সাথে ৫ চামচ চালের গুড়া ও সাথে একটি
ডিমের সাদা অংশ ভালো ভাবে মিশিয়ে নিন। মিশ্রনটি আঠালো হলে সামান্য পানি ব্যবহার
করুন। এরপর আপনার চুলে লাগিয়ে নিন।
চুলে লাগানো শেষ হলে চিরুনি দিয়ে নীচের দিক থেকে চিরুনী করতে থাকুন। চুল শুকানো
পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। এরপর শ্যাম্পু আর কন্ডিশনার দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন। নিয়মিত
ব্যবহারে আপনার চুল সিল্কি ও সোজা করবে। এটি পরিক্ষিত একটি হেয়ার প্যাক। এটি
ব্যবহার করতে কখনই ভুলবেন না।
খুশকি মুক্ত রাখে-বন্ধুরা আপনাদের মাথায় যদি কারো খুশকির সমস্যা থাকে,
তবে মুলতানি মাটি ব্যবহার করুন।আপনার চুলে কোন ভাবেই খুশকি থাকবে না। চলুন
তাহলে জেনে নেই। তিন টেবিল চামুচ মুলতানি মাটি, সামান্য অলিভ অয়েল, দুই টেবিল
চামুচ লেবুর রস, আধা বাটি টক দই মিক্স করে প্যক বানিয়ে পুরো মাথায় হাল্কা ভাবে
মাছাজ করুন।
আরো পড়ুনঃ
৩০ মিনিট পর শ্যাম্পু দিয়ে মাথা ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে দুই বার এই প্যাক ব্যবহার
করুন। নিজের তোয়ালে, চিরুনি নিজে ব্যবহার করুন। অন্যের তোয়ালে, চিরুনি ব্যবহার
এড়িয়ে চলুন। এতে করে খশকি দূর হবেই হবে।
চুলের আগা ফাটা রোধ করে- মুলতানি মাটি চুলের আগা ফাটা রোধ করতে সাহায্য
করে। আপনার চুলের যদি আগা ফেটে যায় ,তাহলে মুলতানি মাটি, কাচা দুধ ও বাসার হট
অয়েল দিয়ে একটি পেস্ট বানিয়ে নিন। এই পেস্ট আপনার চুলে লাগিয়ে নিন। তারপর পানি
দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এভাবে চুলের আগা ফাটা কমে যাবে। নিয়মিত ব্যবহারে চুলের আগা
ফাটআ একেবারেই থাকবে না।
মাসলের ক্লান্ত দূর করে- সারাদিন হাটাচলা করবার পর যখন ক্লান্ত অনুভব
হয়,মুলতানি মাটির তৈরী পেস্ট আপনার সারাদিনের ক্লান্ত দুর করতে সাহায্য করবে।
মুলতানি মাটির সাথে পানি মিক্স করে পেস্ট করে আপনার পায়ে লাগিয়ে নিন। শুকিয়ে
গেলে কসম গরম পানি দিয়ে পা দুট ধুয়ে ফেলুন। দেখবেন সারাদিনের ক্লান্ত দূর হয়ে
গেছে। ব্লাড সার্কুলেশন বাড়িয়ে মাসলের ক্লান্তি দূর করে দেয় মুলতানি মাটি।
মুলতানি মাটি খাওয়া খুবই ক্ষতিকর- এতে রয়েছে টক্সিন, যা বমি বমি ভাব
কিম্বা ডায়রিয়া হতে পারে। এটা আমাদের জানা উচিত যে, এমাটি দেখতে অনেকটা
কাদামাটির মতো ভারি উপাদান রয়েছে। যা খেলে মারাত্নক ক্ষতি হতে পারে। সুতরাং
আমরা ভুলেও কখোন মুলতানি মাটি খাবো না।
মুলতানি মাটির অপকারিতা
ত্বকের উজ্জলতা ও টান্টান করবার জন্য অনেকে সপ্তাহে তিন থেকে চারবার মুলতানি
মাটি ব্যবহার করেন। কিন্তু এর প্রক্রিতি গরম হওয়ায় আতিরক্ত ব্যবহারা ত্বকে
ফুস্কুড়ি সহ ত্বকের নিস্তেজ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই আপনাদের অতিরক্ত মুলতানি
মাটি ব্যবহার করা উচিৎ নয়। সবকিছুতেই অতিরক্ত ব্যবহারে ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা
বেশি থাকে। এই মাটিএ ক্ষতিকারক দিক তুলে ধরা হলো।
তবে ত্বক যদি অতিরিক্ত শুস্ক হয় তবে মুলতানি মাটি ব্যবহার না করাই
ভালো। যাদের ত্বক সংবেদনশীল ও শুষ্ক মুলতানি মাটি তাদের এড়িয়ে চলা উচিত কারণ এ
মাটির ব্যবহারে মুখে ফুসকুড়ি হতে পারে।শুকনো ত্বকের জন্য মুলতানি মাটি ব্যবহার করা উচিত নয়। শুকনো ত্বকে মুলতানি
মাটি ব্যবহার করলে ত্বক বুড়িয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
যদি সর্দি বা কাশির উপসর্গ থাকে তবে মুলতানি মাটি ব্যবহার থেকে দূরত্ব বজায়
রাখা উচিত, কারণ মুলতানি মাটিতে শীতল প্রভাব রয়েছে। সে কারণে সর্দি-কাশির
সমস্যা বাড়তে পারে।মুলতানি মাটি নিয়মিত ব্যবহারে মুখের বলিরেখা হতে পারে।
তাহলে দেখুন চোখ বুঝে মুলতানি মাটির উপর ভরসা করা উচিত নয়। আপনার ত্বক কেমন তা
বুঝে মুলতানি মাটি ব্যবহার করবেন।
আসল মুলতানি চেনার উপায়
আসল মুলতানি মাটি চেনার উপায় জানার খুবই জরুরী। মুলতানি মাটি আমাদের প্রায় সব
ধরণের প্রসাধনির দোকানে পাওয়া যায়।নকলের দুনিয়ায় আসল মুলতানি পাওয়া বড়
কঠিন।পাকিস্তানের মুলতান নগরে ১৮ শতাব্দীতে সর্বপ্রথম মুলতান নগরে এ মাটির সন্ধান
যায়। এই শহরের নাম অনুসারে এ মাটির নাম রাখা হয়েছে মুলতানি মাটি।
আরো পড়ুনঃ মেথির উপকারিতা জানলে চমকে যাবেন
ত্বক পরিষ্কারের জন্য বহুকাল থেকে ব্যবহার হয়ে আসছে। বিভিন্ন ঐতিহাসিক জানান
মুলতানি মাটি দিয়ে কোন ভাস্কর্যের উপর প্রলেপ দেওয়া হতো ধীরে ধীরে এটা
রুপচর্চায় ব্যবহারিত হতে লাগলো। মুলতানি মাটির রং সাধারণত হলুদ ও ধুসর রঙের হয়ে
থাকে। আমাদের রূপচর্চার জন্য ধুসর মাটির চেয়ে হলুদ মাটির গুরুত্ব বেশি ।
তাই ত্বকের যত্নে মুলতানি মাটি সংগ্রহের সময় হলুদ মুলতানি মাটি নেওয়াটাই অধিক
যুক্তিযুক্ত। আসল মুলতানি মাটির নিজস্ব কোন গন্ধ না থাকলেও বাণিজ্যিক ভাবে ও
প্যাকেজিং এর সময় কোম্পানি বিভিন্ন ধরনের সুগন্ধি মুলতানি মাটির সাথে যুক্ত করে।
মুলতানি মাটির বাজার মুল্য
বাজারের ফেসপ্যাক হিসেবে মুলতানি মাটি কিনতে পাওয়া যায়। মুলতানি মাটি
পাকিস্থানের মুলতান শহর থেকে আসে।মুলতানি মাটির মান অনেকটায় ভালো।রুপ চর্চার জন্য
বহুকাল ধরে তুমুল্ভাবে ব্যবহারিত হয়ে আসছে।বাজারের কিছু অসাধু ব্যবসায়ীরা মুলতানি
মাটিরসাথে ভেজাল মিশিয়ে বাজার জাত করছে।আসল মুলতানি মাটি বাজারের সনাম ধন্য
দোকানগুলোতে পাওয়া যায়।
মুলতানি মাটির দাম ধরণ হিসেবে আলাদা আলাদা হতে পারে। প্রতিটা প্যাকেটের পাইকারি
মূল্য ৩০ থেকে ৪০ টাকা এবং খুচরা মূল্য ৭০ থেকে ৯০ টাকা হয়। প্রতিটা প্যাকেটে
২০০ থেকে ২৫০ গ্রাম মুলতানি মাটি থাকে। মুলতানি মাটি মূলত ফুলেট নামে পরিচিত।
পাকিস্তানের মুলতান শহরে এ মাটির প্রথম সমধান পাওয়া যায়।
এ মাটি মুর্তির উপর প্রলেপ দেয়া হতো। ধীরে ধীরে রূপচর্চার কাজে ব্যবহার করা হয়।
মুলতানি মাটি ত্বকের গভীর থেকে ময়লা কেটে আনতে সাহায্য করে। মুলতানি মাটি
ব্যবহারে ত্বক ফর্সা হওয়ার পাশাপাশি উজ্জ্বল ও মসৃণ হয় । ত্বকের উজ্জ্বলতা
বাড়াতে মুলতানি মাটির ব্যবহারের বিকল্প নাই।
সচার আচার জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন উত্তর
প্রশ্নঃমুলতানি মাটির উৎপত্তি স্থান কোথায়?
উত্তরঃ মুলতানি মাটি পাকিস্থানের মুলতান শহর থেকে উৎপত্তি।
প্রশ্নঃ কত শতকে মুলতানি মাটি উৎপত্তি হয়
উত্তরঃ ১৮০০শতাব্দীতে।
প্রশ্নঃ পাকিস্থানে এ মাটি কি কাজে ব্যবহার করতো
উত্তরঃ পাকিস্থানা মুলতানি মাটিকে মুর্তির উপত প্রলেপ দেয়ার কাজে ব্যবহার করা
হতো,পরে এটি রুপ চর্চার কাজে ব্যবহারিত হয়ে আসছে।
প্রশ্নঃ মুতানি মাটি দেখতে কেমন হয়ে থাকে
উত্তরঃ মুলতানি মাটি দেখতে ধুসর ও হলুদ বর্নের হয়ে থাকে।
প্রশ্নঃ রুপচর্চার জন্য কোন রঙের মাটি ভালো
উত্তরঃরুপচর্চার জন্য ধুসর মাটির চেয়ে হলুদ রঙের মাটি ভালো।
প্রশ্নঃ মুলতানি মাটির বাজার মূল্য কত
উত্তরঃ মুলতানি মাটির প্রতি ২৫০ গ্রামের পাইকারী মুল্য ৪০-৫০ টাকা খুচরা মূল্য
৭০-৯০ টাকা।
প্রশ্নঃ মুলতানি মাটি কি সব ধরণের ত্বকের জন্য উপযোগী
উত্তরঃ সংবেদনশীল ত্বকের জন্য এড়িয়ে চলার কথা বলা হয়েছে। অতিরক্ত শুস্ক ত্বকের
জন্য সরাসরি মাটি ব্যবহার না করে, মাটির সাথে মধু কিম্বা এ্যলোভেরা মিশিয়ে
ব্যবহার করলে ত্বকের কোন ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না।
প্রশ্নঃ মুলতানি মাটির কাজ কি
উত্তরঃ মুলতানি মাটি তৈলাক্ত ত্বকের অতিরক্ত তেল শোষণ করে নিয়ে ত্বককে ফর্সা,
সুন্দর ও স্বাস্থ্যউজ্জল করে তোলে।
প্রশ্নঃ মুলতানি মাটি কি শুধু ত্বকের জন্য ব্যবহার করা হয়
উত্তরঃ না। মুলতানি মাটি ত্বকের যত্নের পাশাপাশি চুলের যত্নেও ব্যবহার করা হয়।
মুলতানি মাটি নিয়ে লেখকের শেষ কথা
মুলতানি মাটির উপকারিতা বর্ননা করতে গিয়ে আমরা মুলতানি মাটি সম্পর্কে বিস্তারিত
আলোচনা করতে সক্ষম হয়েছি। আপনি যদি মুলতানি মাটি ব্যবহার করতে চান, তাহলে আপনাকে
অবশ্যই মুলতানি মাটি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে হবে। মুলতানি মাটি ব্যবহারে কিছু
অপকারিতা রয়েছে যদি জানতে চান তাহলে প্রথমে এই বিষয় গুলো জানতে হবে।
এতোক্ষন আপনাকে সাথে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। যদি আপনি এই ধরনের আর্টিকেল পেতে
চান তাহলে নিয়মিত আমার অয়েবসাইট ফলো করুন। কারন আমরা নিয়মিত এই ধরণের আর্টিকেল
প্রকশ করে থাকি।আমার লেখায় যদি ভুল হয়ে থাকে,তাহলে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url