কলা খাওয়ার উপকারিতা ও ১৪ টি আশ্চর্য জনক পুষ্টিগুণ
কলা খাওয়ার উপকারিতা ও ১০টি আশ্চার্যজনক পুষ্টিগুণ সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন। তাহলে আপনি সঠিক জায়গায় এসেছেন। আমরা ছোট বড় সবাই কলা খেতে ভালবাসি। কিন্তু কলা খাওয়ার উপকারিতা ও এর পুষ্টিগুণ সম্পর্কে আমরা অনেকেই জানিনা।
কলার পুষ্টিগুণ সম্পর্কে আমাদের সবার জানা উচত। কলা কি শুধু আমাদের উপকারে আসে না এর কোন ক্ষতিকর দিক আছে। এ সম্পর্কে আমাদের বিস্তারিত জানা দরকার চলুন তাহলে কলা খাওয়ার উপকারিতা ও পুষ্টিগুণ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব।
পোস্ট সূচীপত্রঃ কলার খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
- কলা খাওয়ার উপকারিতা
- রাতে কলা খাওয়ার উপকারিতা
- সকালে কলা খাওয়ার উপকারি
- পাকা কলা খাওয়ার পুতাস্টিকর দিক
- দুধ ও কলা খাওয়ার উপকারিতা
- কলার আশ্চর্যজনক পুস্টিগুন
- কলা খাওয়ার সময়
- কলা খাওয়ার অপকারিতা
- কলা যৌন ক্ষমতা বাড়ায়
- কলার উপকারিতা ও পুষ্টিগুণ নিয়ে লেখকের মন্তব্য
কলা খাওয়ার উপকারিতা
কলা খাওয়ার উপকারিতা জেনে না জেনেই আমরা কলা খেয়ে থাকি। কলায় একটি সহজলভ্য ফল। আমরা সহজেই এটাকে হাতের কাছে পেয়ে থাকি। কলাতে আছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন বি-৬ ও ভিটামিন সি যা আমাদের দেহের রক্তস্বল্পতা দূর করে। ভিটামিন সি আমাদের ত্বকের উজ্জলতা বাড়ায়। এছাড়াও রয়েছে ফাইবার যা আমাদের হজম শক্তিতে সাহায্য করে।
আরো পড়ুনঃ ক্ষতস্থানে ডালিমের রস ব্যবহার করবো কিভাবে
কলা কে সুপার ফুড বলে আখ্যায়িত করেছেন। তারা আরো জানিয়েছেন যে, কলার
মধ্যে সব ধরনের ভিটামিন উপস্থিত আছে। কলা ভিটামিন বি-৬ মিনারেল, আইরন,
ক্যালশিয়াম, ম্যাগনেসিয়া্ম, পটাশিয়াম সমৃদ্ধ ফল। তাই আমাদের খাদ্য তালিকায় কলা
রাখা উচিত। কলার মাঝে যে সমস্ত উপকারিতা রয়েছে তা আপনাদের সুবিধার্থে নিচে
বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
- খাদ্য হজমে সাহায্য করে
- মানসিক চাপ কমায়
- শরীরে শক্তি যোগায়
- সুনিদ্রায় সাহায্য করে
- ক্যান্সারের ঝুঁকি কম
- পাকস্থলীর আলসার রোধ করে
- শরীরের অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট বৃদ্ধি করে
- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
- কিডনি সুস্থ রাখে
- হৃদ যন্ত্র ভালো রাখে
- চুলের সৌন্দর্য বাড়ায়
- রক্তচাপ নিয়ন্রণ করে
- ওজন কমাতে সাহায্য করে
- স্মৃতিশক্তি বাড়ায়
খাদ্য হজমে সাহায্য করেঃ কলাতে আছে প্রচুর পরিমাণে খাইবার যা আমাদের খাদ্য হজমে সহায়তা করে। আমাদের মাঝে অনেকেরই কোষ্ঠকাঠিন্য হতে দেখা যায়। আমরা যদি নিয়মিত কলা খায় তবে আমাদের আর কোষ্ঠকাঠিন্য থাকবে না। কলা আমাদের পরিপাকতন্ত্রকে শীতল করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য নিয়ন্ত্রণ করে।
মানসিক চাপ কমায়ঃ আমাদের মাঝে যারা অতিরিক্ত মানসিক চাপে আছেন। তারা
প্রতিদিন কলা খাবেন কেননা কলা মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে।
শরীরে শক্তি যোগায়ঃ আপনাদের পরিবারের যদি কারো অসুস্থতা দেখা
যায়, কাজ করার শক্তি পায় না অতিরিক্ত দুর্বল মনে হয়, প্রতিদিন তাকে কলা
খাওয়াতে ভুলবেন না,কারণ কলাতে আছে ভিটামিন, কার্বোহাইড্রেড, খনিজ, ক্যালসিয়াম
যা আমাদের শক্তি যোগাতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে।
সুনিদ্রায় সাহায্য করেঃ আমাদের মাঝে অনেকেই আছেন যারা অনেক টেনশন জনিত
কারণে কারণ এ রাতে ঘুমাতে পারে না। এই কারণে চোখে ঝাপসা দেখা, মাথা ঝিমঝিম করা
ইত্যাদি হতে দেখা যায়। এমনত অবস্থায় আপনারা যদি দৈনিক একটি করে কলা খাওয়াতে
পারেন, তাহলে সুনিদ্রা আসবে।
ক্যান্সারের ঝুঁকি কমঃ কলায় থাকা এন্টিঅক্সিডেন্ট ও ভিটামিন সি, যা
আমাদের শরীরের ক্যান্সার হওয়া থেকে ঝুকিমুক্ত করে বা ক্যান্সারের ঝুঁকি
কমায়।
পাকস্থলীর আলসার রোধ করেঃ আমাদের মাঝে কারো যদি পাকস্থালির মধ্যে
আলসার দেখা দেয়। তাকে নিয়মিত কলা খাওয়া প্রয়োজন। কেননা কলা পাকস্থানের আধার
রাতে সাহায্য করে।
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বৃদ্ধি করেঃ কলা আমাদের শরীরের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এর
পরিমাণ বৃদ্ধি করে। এন্টি অক্সিডেন্ট আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
দেহকে শক্তিশালী করে ত্বককে সজীব ও রাখে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়ঃ আমরা যদি দৈনিক খাবারের তালিকায় কলা রাখে।
তাহলে আমাদের শরীরে কোন ভিটামিনের অভাব দেখা দিবে না। শরীর কোন প্রকার রোগে
আক্রান্ত হবেনা। কেননা কলা আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
কিডনি সুস্থ রাখেঃ আপনারা যদি কেহ কিডনি সমস্যা জানত কারণে ভোগেন তাহলে
আপনাদের খাদ্য তালিকায় কলা রাখেন। কেননা কলা কিডনিকে নানা সমস্যা থেকে মুক্ত করে
এবং কিডনিকে সুস্থ রাখে।
হৃদরোগের ঝুকি কমায়ঃ কলাতে আছে প্রচুর পরিমাণ ক্যালসিয়াম ও
ম্যাগনেসিয়াম। নিয়মিত কলা খাওয়ার কারণে হৃদরোগের ঝুঁকি অনেকটাই কমে যায়।
চুলের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করেঃ কলা আমাদের শুধু শরীর সুস্থ রাখে না আমাদের
ত্বককে ভালো রাখে সেই সাথে চুলের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে।
রক্ত চাপ নিয়ন্ত্রণ করেঃ অনেকেরই বয়স বাড়ার সাথে সাথে উচ্চ রক্তচাপ
জনিত কারণে ভোগেন। চিকিৎসকগণ তাদেরকে নিয়মিত কলা খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
কারণ কলায় আছে পটাশিয়াম যা উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে।
ওজন কমাতে সাহায্য করেঃ আপনাদের যদি কারো ওজন বাড়তে থাকে, তাহলে
আপনারা নিয়মিত কলা খান। কলা খেলে ক্ষুধা দূর হয়। ওজন বাড়ানোর সম্ভাবনা কমে
যায়।
স্মৃতিশক্তি বাড়ায়ঃ গলায় আছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন বি সিক্স যা
আমাদের মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বাড়ায় সেই সাথে স্মৃতিশক্তি ও বাড়ায়। তাই
আমাদের স্মৃতিশক্তি বাড়াতে খাবারের তালিকায় কলা রাখা উচিত।
রাতে কলা খাওয়ার উপকারিতা
রাতে কলা খাওয়ার বেশ উপকারিতা আছে। পুস্টিবিদ্গণ কলার পুষ্টিগুণ সম্পর্কে বলেছেন খাবার অন্যান্য ফলের তুলনায় কলায় সবচেয়ে বেশি উপকারিতা আছে। যা আমাদের শরীরে প্রচুর শক্তি দেয়। সারাদিনের কর্ম ক্লান্তির পর গভীর ঘুমের জন্য রাতে কলা খাওয়া উপকারী। কলাতে আছে পটাশিয়াম যা আমাদের পেশিকে আরাম দেয়।
রাত্রে ঘুমানোর জন্য আমরা দিন শেষে বিকেলে কিংবা সন্ধ্যায় দুটি একটি কলা খেলে রাতের জন্য ভালো ঘুমের প্রস্তুতি নিতে পারি। বড় একটি কলার মধ্যে রয়েছে ৪৮৭ মিলিগ্রাম পটাশিয়াম। একজন প্রাপ্তবয়স্ক লোকের দেহে প্রতিদিনের চাহিদার ১০ শতাংশ পটাশিয়াম কলা থেকে সংগ্রহ করে। একটি কলায় আছে ১০৫ গ্রাম ক্যালোরি। আপনি যদি দুপুরে ৫০০ মিলিগ্রামের কম ক্যালোরি গ্রহণ করতে চান।
আরো পড়ুনঃ ওজন বাড়াতে বাদামের ব্যবহার
তাহলে এক কাপ দুধের সাথে দুটি কলা খেলেই যথেষ্ট হবে। রাতের বেলা কলা খাওয়ার কোন সমস্যা হয় না। কিন্তু আপনাদের কারো যদি এজমা, সাইনাস কিংবা সর্দি জাতীয় সমস্যা থাকে। তাদের জন্য রাতে কলা খাওয়া এড়িয়ে চলাই সবচেয়ে ভালো হবে। যাদের অ্যাজমা কিম্বা সর্দি আছে , দিনের বেলা ব্যায়াম করার পর দুইটা-একটা কলা খাওয়া বেশ উপকার। কিন্তু রাতে তাদের জন্য কলা খাওয়া ক্ষতির কারন হতে পারে।
সকালে কলা খাওয়ার উপকারিতা
সকালে কলা খাওয়ার বেশ উপকার রয়েছে। কলা দেয়া আছে পটাশিয়াম যা আমাদের শরীরে শক্তি যোগায়। কলা হেলদি খাবারের সাথে খাওয়া সর্বোত্তম। সকালের নাস্তায় ডিম টোস্ট কিংবা কমপ্লেক্সের সাথে অনেকেই কলা খেতে পছন্দ করেন। এতে যেমন আপনার পেট ভরা থাকে তেমনি পুষ্টিও পাবেন। যাদের শরীরচর্চা করতে দেখা গেছে তারা সকালের নাস্তায় অবশ্যই কলা খেয়ে থাকেন।
কলায় আছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার, যা আমাদের খাদ্য হজমে বেশ সহায়তা করে। যাদের
খাদ্য হজমের সমস্যা থাকে, চিকিৎসা বিজ্ঞানীগণ তাদেরকে কলা খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে
থাকেন। আমরা যদি সকালে নাস্তার সাথে দুটি কলা খেয়ে থা্কি, তবে সারাদিনের কাজের
ক্লান্তি থাকবে না। খেলোয়ারদের মাঠে নামানোর আগে তাদের কলা খেতে দেওয়া হয়। কারণ
কলা খেলে তাদের সহজে ক্লান্তি আসে না।
পাকা কলা পুস্টিকর দিক
পাকা কলা স্বাস্থ্যের জন্য বেশি উপকার। আমরা কেহ কাচা কলা খাই না। কাঁচা কলা সবজি হিসেবে খাওয়া যায়, এটাও স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। কলায় রয়েছে আইরন পটাশিয়াম ক্যালসিয়াম। যা আমাদের শরীরে রক্তের অভাব পূরণ করবে, অ্যানিমিয়া নামক রোগ থেকে মুক্তি দিবে, শরীরের শক্তি যোগাবে হাড় গঠনে সাহায্য করবে। কলার মাঝে অনেক পুষ্টিগুণ রয়েছে। তাই আমরা কলা কে সবচেয়ে বেশি উপকারী ফল। তাই কলা আমাদের জন্য অনেক হেলদি এবং স্বাস্থ্যকর খাবার।
আরো পড়ুনঃ ওলিভ অয়েল রক্তের শর্করা কমাতে সাহায্য করে
- আপনি যদি প্রতিদিন সকালের নাস্তায় কলা রাখেন এটা আপনার জন্য অনেক স্বাস্থ্যকর। একটি পাকা কলার মাঝে প্রচুর পরিমাণে আইরন পটাশিয়াম ও ক্যালসিয়াম রয়েছে।
- আইরন আমাদের শরীরের রক্তস্বল্পতা দূর করে। পটাশিয়াম আমাদের দেহে শক্তি যোগায়। ক্যালসিয়াম আমাদের দেহের হাড় গঠনে সাহায্য করে।
- তাছাড়াও কলাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার যা আমাদের খাদ্য হজমে সহায়তা করে। আমাদের যাদের কোষ্ঠকাঠিন্য আছে আমরা যদি প্রতিদিন সকালের খাদ্য তালিকায় কলা রাখি তবে আর কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা থাকবে না।
- গলায় থাকা পুষ্টি উপাদান গুলো আমাদের উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে সাথে রিলের ঝুঁকি কমাতেও সাহায্য করে তাছাড়া যাদের অতিরিক্ত ডায়াবেটিসের সমস্যা আছে তারা যদি নিয়মিত কলা খেতে পারেন তাহলে ডায়াবেটিসের সমস্যা নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
- আপনি যদি দুর্বল হয়ে থাকেন, অল্প কিছুতেই ক্লান্তিবোধ মনে হয় এবং অল্পতেই অসুস্থ হয়ে পড়েন, তাহলে কলা আপনার জন্য বেশ উপকারী ফল। আপনার নিয়মিত খাদ্য তালিকায় কলা রাখা উচিত। তাহলে আপনার দুর্বলতা থাকবে না থাকবে না ক্লান্তি বোধ। কেননা কলাতে আছে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা।
দুধ ও কলা খাওয়ার উপকারিতা
দুধ কলা একটি সুস্বাদু খাবার। সুস্বাদু খাবারের মধ্যে দুধ কলার বিকল্প নেই। যারা ওজন বাড়াতে চান চিকিৎসা বিজ্ঞানীগণ তাদের দুধ কলা একসাথে খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। কলা আমাদের দেহের ওজন নিয়ন্ত্রণ করে, কিন্তু দুধ কলা একসঙ্গে খেলে আমাদের ওজন বাড়াতে সাহায্য করে। দুধ ও কলার মাঝে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফ্যাট।
দুধ কলার সাথে যদি আমরা ভাত যোগ করতে পারি কিম্বা ভেজা চিড়া যোগ করতে পারে তবে মন্দ হয় না। এটা যেমনি খেতে সুবিধা ও সুস্বাদু হবে তেমনি ওজন বাড়াতে বিশেষ ভূমিকা পালন করবে। কলা একটি সুমিষ্ট ফল। আর এই মিষ্টি ফলে রয়েছে প্রতি ১০০ গ্রাম এর মধ্যে ৮৯ গ্রাম ক্যালরি। আমরা অনেকেই দুধ কলা, কলা রুটি ইত্যাদি খেয়ে থাকি দুটি উচ্চ পুষ্টি সম্পন্ন খাবার।
দুধে আছে প্রোটিন ভিটামিন ও খনিজ পদার্থ একই সাথে রয়েছে ক্যালসিয়াম ভিটামিন বি ১২ এ ভরপুর। ১০০ গ্রাম দুধে আছে ৪২ গ্রাম ক্যালোরি, ভিটামিন সি তে পরিপূর্ণ। কিন্তু কলায় আছে ভিটামিন বি-৬, পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এবং প্রচুর পরিমাণে ফাইবার। কিন্তু দুধে অন্যান্য উপাদান থাকলেও ফাইবার নেই।
কলার আশ্চর্যজনক পুষ্টিগুণ
কলায় আছে আশ্চর্যজনক পুষ্টিগুণ। যা আপনি জানলে অবাক হবেন। চলুন কলার পুষ্টিগুণ সম্পর্কে জানা যাক। কলা একটি উচ্চ পুষ্টি সম্পন্ন খাবার। প্রতি ১০০ গ্রাম কলা এর মধ্যে আছে ৮৯ গ্রাম ক্যালরি তাছাড়াও কলাতে আছে ভিটামিন বি-৬, প্রোটিন, মেঙ্গানিজ, ভিটামিন সি ম্যাগনেসিয়াম পটাশিয়াম ও ফাইবার।
তাছাড়াও কলাতে আছে কার্বোহাইড্রেট যা খাবারের আগে ও পরে একটি দুর্দান্ত খাবার
হিসেবে বিবেচনা করা হয়। কেননা এটি আমাদের দীর্ঘ সময় পেট ভরা অনুভব করায়।
সুস্বাদু ভোজ্য ও পুষ্টিগুণের দিক বিবেচনায় কলা কে সুপার ফুড বলেছেন।
কলা খাওয়ার সময়
কলায় একটি খুবই উপকারী, স্বাস্থ্যকর ও সহজলভ্য ফল। সারা বছর এই ফল পাওয়া যায়। কলা খাওয়ার উপযুক্ত সময় কখন? কখন কলা খেলে বেশি উপকার পাওয়া যায় এ নিয়ে বিশেষজ্ঞরা বলেছেন যে সারা দিনের উপকারিতা পেতে হলে সকালে কলা খাওয়ায় ভালো। সকালে খালি পেটে কলা না খেয়ে খাবারের পর খাওয়া উচিত।
কথায় আছে ভরা পেটে ফল, খালি পেটে জল খাওয়া ভালো। কলা দিনের বেলায় যে কোন এক
সময় খাওয়া যেতে পারে। তবে সকালে খাওয়া সবচেয়ে উপকারী। সকালবেলা কলা খেলে
শরীরের শক্তি বৃদ্ধি হয় এবং সারাদিনের কাজ করার এনার্জি থাকে।
কলা খাওয়ার অপকারিতা
কলা বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় ফল। এটি সারা বছর পাওয়া যায়। এর ফলে প্রচুর
পরিমাণে স্বাস্থ্য উপকারিতা আছে। এটি পাকলে খাওয়া যায় ফল হিসেবে, কাঁচা খাওয়া
যায় সবজি হিসেবে। কলার মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার, প্রোটিন,
স্বাস্থ্যকর অন্যান্য খনিজ উপাদানে ভরপুর। তবে কলার সাথে কিছু খাবার খেলে ক্ষতি
হয় একথা ও শোনা যায়, চলুন তাহলে কলার সাথে ক্ষতিকর খাবারগুলো সম্পর্কে জানা
যাক।
দুধের সাথে কলাঃ একদিকে কলা অম্লীয় খাবার, অন্যদিকে দুধ মিষ্টি খাবার।
এটি হজমে সমস্যা সৃষ্টি করে দুটি খাবার একসাথে খেলে আম নামক একটি বিষাক্ত
পদার্থের সৃষ্টি হয় যা শরীরের ভারসাম্যহীনতা হারিয়ে ফেলে। হজম প্রক্রিয়ায়
বিঘ্ন ঘটে দুধের সাথে কলা খেলে সর্দি কাশি সহ অন্যান্য স্বাস্থ্যঝির ঝুঁকির
সম্ভাবনা থাকে।
রেডমিটের সাথে কলাঃ রেডমিটের সাথে কলা খাওয়ার প্রচলন আগে থেকেই দেখা
যায়। কিন্তু এটা আমাদের শরীরে ক্ষতি করতে পারে। কলায় আছে ফাইবার যা আমাদের
তাড়াতাড়ি হজম করতে সাহায্য করে। কিন্তু রেডমি মিট হচ্ছে উচ্চ প্রোটিন
সমৃদ্ধ খাবার যা হজম প্রক্রিয়াকে ধীর করে দেয়। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন কলা এবং
রেডমিট দুটি বিপরীত প্রকৃতির খাবার একসঙ্গে খেলে গ্যাসের সমস্যা হতে পারে।
বেকট খাবারের সাথে কলাঃ আমাদের অনেক বাড়িতে কলার রুটি তৈরি করে খাওয়ার
প্রচলন আছে। এখানেই শেষ নয় সকালে নাস্তার সাথে কলা ও রুটি খাওয়ার অভ্যাস বহু
পুরনো। কিন্তু আপনি কি জানেন এই রুটি এবং বেকট খাবার অস্বাস্থ্যকর হতে পারে? কারণ
রুটি তে আছে কার্বোহাইড্রেট যা হজম হতে বেশি সময় লাগে অন্যদিকে কলায় আছে ফাইবার
যা হজম প্রক্রিয়াকে তাড়তাড়ি করে। দুটি খাবার একসাথে হলে স্বাস্থ্যঝুঁকির আশঙ্কা
বহুবনে বেড়ে যেতে পারে।
সাইট্রাক ফলের সাথে কলাঃ বিপরীত প্রক্রিয়ার খাবার একসাথে খেলে নানা
স্বাস্থ্য ঝুঁকি দেখা দেয়। যার ফলে বাত, পিত্ত, কফ ও ভারসাম্যহীনতা হতে পারে। এ
কারণে স্বাস্থ্য বিজ্ঞানীগণ বলেছেন কলার সাথে অম্লীয় খাবার যেমন- লেবু, ডালিম,
স্ট্রবেরি খাওয়া থেকে বিরত থাকায় সবচেয়ে ভালো। কিছু গবেষণায় দেখা গেছে কলা
এবং এসিডিটিক ফল এক সঙ্গে খেলে বমি বমি ভাব, মাথা ব্যথা ইত্যাদি সমস্যা হতে
পারে।
কলা যৌন ক্ষমতা বাড়ায়
কলা পুষ্টিগুনে ভরপুর। এতে আছে, পটাশিয়াম আইরন, ভিটামিন এ, ভিটামিন সি, ভিটামিন
বি-৬ এবং ম্যাঙ্গানিজ, ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়া্ম, প্রোটিন, ফুলেট,
কার্বোহাইড্রেট পাওয়া যায়। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন পুরুষদের ডায়েটে অবশ্য কলা রাখা
উচিত। এই কলা বিভিন্ন রোগ সংক্রামক থেকে রক্ষা করে এবং যৌন ক্ষমতা বাড়ায়। তাই
আমাদের প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় কলা রাখা উচিত।
কলার উপকারিতা ও পুষ্টিগুণ নিয়ে লেখকের মন্তব্য
কলা একটি মিষ্ট এবং আংশিক অম্ল জাতীয় ফল। আমরা ছোট বড় সবাই এ ফল খেতে
ভালোবাসি। এটি সহজলভ্য হাতের কাছে অনায়াসে পাওয়া যায়। আমরা সময় অসময়ে কলা
খেয়ে থাকি। কিন্তু কলার মাঝে যে উপকারিতা ও পুষ্টিগুণ আছে, আমি আমার লেখা
আর্টিকেলের মাঝে বিস্তারিত আলোচনা করতে সক্ষম হয়েছি। আশা করি আপনি আমার আর্টিকেল
পড়ে কলা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন।
আমার লেখা আর্টিকেলটি যদি আপনার ভালো লেগে থাকে তবে এ ধরনের আর্টিকেল পেতে
নিয়মিত আমার ওয়েবসাইট ভিজিট করে আমাকে উৎসাহিত করবেন। যদি আমার লেখায় কোন ভুল
হয়তে আর যদি আপনাদের মনে কোন কষ্ট দিয়ে থাকি তবে আমাকে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে
দেখবেন। এতক্ষণে আমার সাথে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url