কালোজিরা খাওয়ার উপকারিতা-কালোজিরার ৩০টি আশ্চর্যজনক পুষ্টিগুণ
কালোজিরা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে আপনি কি জানতে চাচ্ছেন, তাহলে আপনি সঠিক জায়গায় এসেছেন। আমরা সবাই জানি মৃত ব্যতীত সকল রোগের মহাঔষধ কালোজিরা। কালোজিরা স্বাস্থ্য উপকারিতা বহুগুণ। তাই প্রাচীনকাল থেকেই এর ব্যবহার চলে আসছে।
আমরা যদি সঠিক নিয়মে কালোজিরা খেতে পারি, তাহলে আমাদের শরীরের বিভিন্ন ধরনের রোগ থেকে মুক্তি পাবো। আপনি যদি কালোজিরার উপকারিতা সম্পর্কে না জানেন, তাহলে আমার লেখা আর্টিকেল টি ধৈর্য সহকারে পড়ুন। আমার লেখা আর্টিকেলে কালোজিরা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেছি। চলুন তাহলে জানা যাক কালোজিরা খাওয়ার উপকারিতা কি?
পোস্ট সূচিপত্রঃ কালোজিরা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
- কালোজিরা খাওয়ার উপকারিতা
- কালোজিরার পুষ্টি উপাদান
- সকালে খালি পেটে কালোজিরা খেলে কি হয়?
- রাতে কালো জিরা খেলে কি হয়?
- সকালে খালি পেটে কি কালোজিরা খাওয়া যায়?
- মধু ও কালোজিরা খাওয়ার উপকারিতা
- কালোজিরা খাওয়ার নিয়ম
- প্রতিদিন কালোজিরা খেলে কি হয়?
- কালোজিরার অপকারিতা
- প্রতিদিন কাদের কালোজিরা খাওয়া উচিত নয়
- কালোজিরা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে লেখকের মন্তব্য
কালোজিরা খাওয়ার উপকারিতা
কালোজিরা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে অনেকেই জানিনা। আমরা অনেকেই কালোজিরা খাওয়ার উপকারিতা না জেনেও কালোজিরা খেয়ে থাকি। আমাদের সবার কোন কিছু খাবার বা ব্যবহার করার আগে সেই সম্পর্কে বিস্তারিত জানা উচিত। কালোজিরা ও সেই ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম নয়। কালোজিরা কে আমরা মৃত্যু ছাড়া সকল রোগের ঔষধ বলতে পা্রি। এ কারণে এই কারণে কালোজিরা কে আমাদের প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় রাখা উচত।
আরো পড়ুনঃ আমলকির উপকারিতা ও অপকারিতা
কালোজিরা একটি বিশেষ ভেজোস খাবার। স্বাস্থ্য উপকারিতার জন্য প্রাচীনকাল থেকেই ব্যবহার করা হচ্ছে। আমরা যদি সঠিক নিয়মে কালোজিরা খায় তাহলে আমাদের নানান রোগ থেকে শরীরকে রক্ষা করতে পারি। আজ আমি আপনাদের কালোজিরা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানাবো। আপনি যদি কালোজিরা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চান তাহলে আমার আর্টিকেল জুড়ে থাকুন।
- কালোজিরা হজম শক্তি বৃদ্ধিতে সাহায্য করেঃ কালোজিরা তে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার আছে, যা আমাদের হজম শক্তি বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। কালোজিরা খাবারের ফলে পরিপাকতন্ত্রের প্রক্রিয়াকে সহজ করে। আমরা যদি নিয়মিত কালোজিরা খাই, তাহলে গ্যাসের মত সমস্যাগুলো প্রতিরোধ করা সম্ভব। কালোজিরার মধ্যে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান বিদ্যমান থাকায় আমাদের শরীরকে ক্ষতিকর উপাদান থেকে রক্ষা করে।
- কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করেঃ অতিরিক্ত তেল ও মসলা জাতীয় খাবারের ফলে আমাদের মাঝে অনেকেরই কোষ্ঠকাঠিন্য হতে দেখা যায়। কোষ্ঠকাঠিন্যের ফলে আমরা নিজেকে অনেকটাই অসুস্থবোধ মনে করি। কারণ কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা জনিত কারণে মলদ্বার দিয়ে রক্ত বের হতে থাকে এবং অনেক জ্বালাপোড়া করে। আমরা যদি নিয়মিত কালোজিরা খাই তাহলে কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো মারাত্মক ব্যাধি থেকে মুক্তি পাবো।
- হজমতন্ত্র কে সুস্থ্য রাখেঃ তার মাঝে কালোজিরার মাঝে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বিদ্যমান থাকায় শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং আমাদের হজম তন্ত্র কে সুস্থ্য রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে।
- পুষ্টি উপাদান শোষণে সহায়তা করেঃ নিয়মিত কালোজিরা ব্যবহারের ফলে হজমের এনজাইম নিঃসরণকে উজ্জিবিত করে এবং সঠিকভাবে খাবারের ফলে পুষ্টি উপাদান শোষণে সহায়তা করে।
- শরীরের প্রদাহ কমাতে সাহায্য করেঃ আমাদের মাঝে অনেকের আছে শরীর জ্বালাপোড়া করে। আলসারেটিভ কোলাইটিসের মত প্রদাহ জনিত রোগ সারাতে কালোজিরা বেশ উপকারী। নিয়মিত কালোজিরা খাবারের ফলে আমাদের শরীরের বিভিন্ন রোগ জনিত জ্বালাপোড়া ও প্রদাহ কমাতে কালোজিরা বিশেষ ভূমিকা পালন করে।
- অতিরিক্ত মেদ কমাতে সাহায্য করেঃ আমাদের মাঝে অনেকের পেটে অতিরিক্ত চর্বি জমে থাকার কারণে পেট বড় হতে দেখা যায়। ফলে তারা বিভিন্ন ধরনের সমস্যা মনে করে। নিয়মিত কালোজিরা খাবারের ফলে পেটের অতিরিক্ত চর্বি কমতে সাহায্য করে অস্বস্তিকর অবস্থা থেকে শরীরকে রক্ষা করে।
- খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করেঃ কালোজিরাতে টাইমোকুইনোন নামক এক প্রকার যৌগ আছে, যা আমাদের শরীরের খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে এবং ভালো কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়াতে সাহায্য করে।
- উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করেঃ গবেষণায় দেখা গেছে আমাদের মাঝে যাদের উচ্চ রক্তচাপ বিদ্যমান তারা যদি নিয়মিত কালোজিরা গ্রহণ করে তবে উচ্চ রক্তচাপের মাত্রা অনেকটাই কমিয়ে আনা সম্ভব। নিয়মিত কালোজিরা ব্যবহারের ফলে আপনি ঘরোয়া উপায়ে উচ্চ রক্তচাপ কমাতে পারেন। উচ্চ রক্তচাপে আছে প্রদাহ বা জ্বালাপোড়া। কালোজিরা রক্তের প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে।
- হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করেঃ মধ্যে এক ধরনের চর্বি থাকে। যা উচ্চমাত্রা থাকার কারণে আমাদের হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়। নিয়মিত কালোজিরা খাবারের ফলে রক্তের উচ্চমাত্রার চর্বি কমাতে সাহায্য করে।নিয়মিত কালোজিরা খাবারের ফলে হৃদরোগের ঝুঁকি থাকে না। তাই আমাদের প্রত্যেকের নিয়মিত কালোজিরা খাওয়াউচিত।
- ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করেঃ কালোজিরার অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান বিদ্যমান। নিয়মিত কালোজিরা ব্যবহারের ফলে রক্তের শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ রাখতে সাহায্য করে এবং ইনসুলিন ব্যবহারের ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। কালোজিরার মাঝে বিশেষ প্রদাহ বিরোধী বৈশিষ্ট্য আছে যা প্রদাহের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে এবং ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমাতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে।
- স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করেঃ আমাদের মাঝে অনেকেরই আছে যারা কোন কিছু সহজেই মনে রাখতে পারে না। স্মৃতিশক্তি কমে যাওয়ার ফলে এমন হতে দেখা যায়। এমনত অবস্থায় আমরা যদি তাকে নিয়মিত কালোজিরা খাওয়াতে পারি তাহলে তার দ্রুত স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি পাবে। কারণ কালজিরা আমাদের স্মৃতিশক্তি এবং মনস্থির করার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অতিরিক্ত টেনশনের কারণে আমাদের স্মৃতিশক্তি লোপ পায়। এক্ষেত্রে আমরা যদি নিয়মিত কালোজিরা খেতে পারি তাহলে আমাদের মেজাজ উন্নত হবে এবং স্মরণশক্তি বৃদ্ধির পাশাপাশি মেধাবিকাশে সহায়তা করবে।
- গ্যাস্টিকের সমস্যা কমায়ঃ গ্যাস্ট্রিকের প্রধান কারণ হলো পেটের জ্বালাপোড়া হওয়া। কালোজিরা আমাদের পেটের প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে, সেই সাথে গ্যাস্ট্রিকের মত নানান উপসর্গগুলোকে ঠিক করতে সাহায্য করে। নিয়মিত কালোজিরা খাবারের ফলে হজম প্রক্রিয়া উন্নত হয়, পেট ফোলা ভাব কমে যায়। তাছাড়া অর্জিনের মত সমস্যায় বিভিন্ন গ্যাস্ট্রিক নিরাময়ে সাহায্য করে।
- কালোজিরা পেটের পেশিগুলোকে শিথিল করেঃ নিয়মিত কালোজিরা ব্যবহারের ফলে গ্যাস্ট্রিকজনিত পেটের অস্বস্তি ব্যথা কমাতে সাহায্য করে এবং পেটের পেশিগুলোকে শিথিল করতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে।
- কিডনি সমস্যা দূর করেঃ কিডনি সমস্যা দূর করতে কালোজিরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আমরা যদি সঠিক নিয়মে নিয়মিত কালোজিরা খেয়ে থাকি, তাহলে আমাদের কিডনিতে পাথর হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না। কালোজিরা সাথে মধু মিশিয়ে খেলে ফলাফল আরো ভালো পাওয়া যায়। নিয়মিত পরিমাণ মতো কালোজিরা খেলে অকালে কিডনি সমস্যা থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব।
- ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করেঃ কালোজিরাতে এন্টিঅক্সিডেন্ট এর পরিমাণ বেশি থাকায় ফ্রী রেডিকেল এর ক্ষতিকর প্রভাব থেকে ত্বককে রক্ষা করতে সাহায্য করে। ফ্রী রেডিক্যাল ত্বকের ভাঁজ পড়া এবং বলিরেখার জন্য দায়ী। তাই আমরা যদি নিয়মিত কালোজিরা চিবিয়ে খায় তাহলে আমাদের ত্বকের বার্ধক্য জনিত ছাপ, ভাঁজ পড়া এবং বলিরেখা দূর করতে সাহায্য করবে। সেই সাথে ত্বক উজ্জ্বল ও লাবণ্যময় করে তুলবে।
- ত্বকের চুলকানি দূর করেঃ কালোজিরাতে ব্যাকটেরিয়া প্রতিরোধক উপাদান বিদ্যমান থাকায় ত্বকের চুলকানি কমাতে বিশেষ ভাবে কার্যকর। নিয়মিত কালোজিরা খাবারের ফলে ত্বকের কোষ পুনরায় তৈরি হয়, ফলে ত্বকের উজ্জ্বলতা আরো বৃদ্ধি পায় এবং ত্বককে ভিতর থেকে মসৃণ করে তোলে।
- যৌন শক্তি বৃদ্ধিতে সাহায্য করেঃ নিয়মিত কালোজিরা সেবনের ফলে টেস্টোরেস্ট্রনের মাত্রা বৃদ্ধি করতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। তাছাড়া কালোজিরা আমাদের শরীরের ক্লান্তি কমায় এবং এবং শক্তির স্তর উন্নত করতে সাহায্য করে।
- মানসিক চাপ কমায়ঃ মানসিক চাপ আমাদের জীবন অবসানের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। আমরা যদি নিয়মিত কালোজিরা ভাজা অবস্থায় চিবিয়ে খায় তাহলে আমাদের মানসিক চাপ কমে যাবে এবং কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে।
- জন্ডিস ও লিভারের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করেঃ আমাদের মাঝে যদি কারো জন্ডিস এবং লিভার জনিত সমস্যা দেখা যায়, তাহলে তাকে নিয়মিত কালোজিরা খাওয়ানো উচিত। কেননা কালোজিরায় আছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা আমাদের লিভারের কোষগুলিকে ক্ষতি থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে এবং জন্ডিস থেকে মুক্ত করে। এছাড়া কালোজিরা লিভারের ফাংশন উন্নত এবং কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
- কালোজিরা পিত্ত উৎপাদন করতে সাহায্য করেঃ কালোজিরায় বিদ্যমান অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আমাদের শরীরের লিভারে এক ধরনের পিত্ত তৈরি করে যা চর্বি হজম করতে সাহায্য করে। কালোজিরা লিভারের কার্য উৎপাদনে বিশেষ ভূমিকা পালন করে।
- শ্বাসকষ্ট রোগ নিরাময় করেঃ আপনাদের পরিবারের যদি কারো শ্বাসকস্ট বা হাঁপানি রোগ হয়ে থাকে, তাহলে আমরা তাকে নিয়মিত কালোজিরা খাওয়াতে পারি। কারণ নিয়মিত কালোজিরা খাওয়ানোর ফলে শরীরের শ্বাসকস্ট নিরসনে সাহায্য করে এবং শ্বাসকষ্টের বিভিন্ন উপসর্গগুলো উন্নত করে। হাঁপানি হলে আমাদের শ্বাস নালীর পেশিগুলো সংকুচিত হয়, ফলে শ্বাস নিতে কষ্ট হয়। আমরা যদি নিয়মিত কালোজিরা চিবিয়ে খায়, তাহলে শ্বাসনালীর পেশিগুলোকে শীতল করে এবং শ্বাস-প্রশ্বাস প্রতিক্রিয়া উন্নত করে।
- এলার্জি সমস্যা দূর করেঃ এলার্জির প্রতিক্রিয়া প্রধান উপকরণ হচ্ছে হিস্টামিন। কালোজিরা খাবারের ফলে হিস্টামিন এর প্রভাবকে প্রতিহত করে। তাই এলার্জি সমস্যা আর থাকে না। এলার্জি জনিত কারণে শ্বাসকষ্টের উপসর্গগুলো দেখা যায়। আপনি যদি নিয়মিত কালোজিরা খেয়ে থাকে তাহলে আপনার কখনো এলার্জি এবং শ্বাসকষ্টের ঝুঁকি থাকবে না।
- পিরিয়ডের সমস্যা দূর করেঃ কিছু কিছু মানুষের পিরিয়ডের সমস্যা হতে দেখা যায়, যেমন অনিয়মিত ঋতুস্রাব, পেট ব্যথা ইত্যাদি। পেট ব্যথা হওয়ার প্রধান কারণ হলো রক্তের পরিবহন কমে যাওয়া। কালোজিরা পারে রক্তের পরিবহন ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে। নিয়মিত কালোজিরা খাবারের ফলে পিরিয়ডের সমস্যা দূর হয়।
- পিঠের ব্যাথা নিরাময়ে সাহায্য করেঃ পিঠের ব্যথা নিরাময়ে সাহায্য করতে কালোজিরা বিশেষ ভূমিকা পালন করে। নিয়মিত কালোজিরা খাবারের ফলে জয়েন্ট এর ব্যথা ও ফোলা ভাব কমাতে সাহায্য করে। কালোজিরা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির পাশাপাশি পিঠের ব্যথা কমাতে সাহায্য করে।
- শিশুর দৈহিক ও মানসিক শক্তি বৃদ্ধি করেঃ কালোজিরাতে আছে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন ক্যালসিয়াম এবং লোহার মতো গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদান। যা ব্যবহারের ফলে শিশুর দৈহিক ও মানসিক শক্তি বৃদ্ধি পায়। আমরা যদি শিশুদের কালোজিরার গুড়া খাওয়াতে পারি, তাহলে সবচেয়ে বেশি উপকার পাওয়া যায়। তাছাড়া শিশুদের কালোজিরা খাওয়ার ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
- মায়ের বুকের দুধ বাড়াতে সাহায্য করেঃ কালোজিরা এমন একটি ভেজস উপকারী উপাদান। যা প্রসূতি মায়েরা নিয়মিত খাবারের ফলে বুকের দুধ উৎপাদনে কালোজিরার সুনাম আগের থেকেই রয়েছে। যারা প্রথমবারে মা হয়েছে তাদের জন্য কালোজিরা বেশ উপকারী। কালোজিরা মায়েদের দুধ তৈরির প্রক্রিয়াকে উন্নত করে।
- চুল পড়া রোধ করেঃ কালোজিরা তে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং খনিজ পদার্থ থাকে, যা আমাদের চুলের গোড়াকে শক্ত করে এবং নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে। তাছাড়া কালোজিরা চুল লম্বা করতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। চুলের গ্রোথ বৃদ্ধিতে কালোজিরা এক অনন্য উপাদান।
- বিভিন্ন ধরনের রোগ থেকে রক্ষা করেঃ কালোজিরা আছে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিকারী উপাদান। নিয়মিত কালোজিরা খাবারের ফলে বিভিন্ন ধরনের রোগ থেকে আমাদের শরীরকে রক্ষা করে।
- স্বাস্থ্য ভালো রাখেঃ স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য কালোজিরা বিশেষ ভূমিকা পালন করে। আপনি যদি স্বাস্থ্য ভালো রাখতে চান তাহলে আপনার খাদ্য তালিকায় কালোজিরা রাখেন। প্রতিদিন খালি পেটে মধুর সাথে কালোজিরা খেলে স্বাস্থ্য ভালো থাকে।
- কালোজিরা কৃমি দূর করেঃ কালোজিরা কৃমি রোগে অত্যন্ত সহায়ক। আপনাদের পরিবারে কারো যদি কৃমি রোগ থাকে, তাহলে কৃমি দূর করার জন্য আপনি তাকে কালোজিরা খাওয়াতে পারেন। কারণ কালোজিরা কৃমি দূর করতে বিশেষ ভুমিকা পালন করে।
- সর্দি কাশি থেকে নিরাময় করেঃ সর্দি কাশির মত সমস্যা দূর করতে সক্ষম কালোজিরা। আমাদের মধ্যে যারা সর্দি কাশির মত সমস্যায় ভুগছেন, তারা নিয়মিত এক চা চামচ কালোজিরা তেলের সাথে সমপরিমাণ মধু মিশিয়ে দিনে তিনবার সেবন করুন। এতে করে খুব সহজেই সর্দি কাশি থেকে নিরাময় পাওয়া যায়।
- কালোজিরা মাথা ব্যথা দূর করেঃ কালোজিরা তেল মাথা ব্যথার জন্য বেশ উপকারী। আপনাদের পরিবারের যদি কারো মাথা ব্যথা হয়।তাহলে সে যেন মাথায় কালোজিরার তেল মাসাজ করে।কালোজিরার তেল ব্যবহারে খুব দ্রুত মাথা ব্যাথা উপশম হয়।কেননা কালোজিরার তেলে আছে ব্যাথা উপশমকারী উপাদান।
কালোজিরার পুষ্টি উপাদান
ক্রমিক নম্বর | পুস্টি উপাদানের নাম | পুস্টি পরিমান |
---|---|---|
১ | ভেজিস তেল ও চর্বি | ৩৫ শতাংশ |
২ | আমিষ | ২১ শতাংশ |
৩ | শর্করা | ৩৮ শতাংশ |
৪ | ফোলাসিন | ৬১০ আইউ |
৫ | নিয়াসিন | ৫৭ মাইক্রোগ্রাম |
৬ | প্রোটিন | ২০৮ মাইক্রোগ্রাম |
৭ | আইরন | ১০৫ মাইক্রোগ্রাম |
৮ | কপার | ১৮ মাইক্রোগ্রাম |
৯ | জিংক | ৬০ মাইক্রোগ্রাম |
১০ | ফসফরাস | ৫.২৬ মিলিগ্রাম |
১১ | কপার | ১৮ মাইক্রোগ্রাম |
১২ | ক্যালশিয়াম | ১.৮৫ মাইক্রোগ্রাম |
সকালে খালি পেটে কালোজিরা খেলে কি হয়?
রাতে কালো জিরা খেলে কি হয়?
- রাতে কালোজিরা খাবার অ্যান্টিবায়োটিক বা এন্টিসেপটিক হিসেবে কাজ করে।
- রাতে কালোজিরা খাবারের ফলে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পায় এবং স্মরণশক্তি বাড়ে।
- রাতে কালোজিরা খাবারের ফলে গ্যাস্ট্রিকজনিত সমস্যা থাকে না এবং খাদ্য হজমে সাহায্য করে।
- রাতে কালোজিরা খাবারের ফলে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পায়।
সকালে খালি পেটে কি কালোজিরা খাওয়া যায়?
মধু ও কালোজিরা খাওয়ার উপকারিতা
- মধু কালোজিরা খেলে শরীরের প্রতিটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ হতে থাকে।
- শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে।
- কালোজিরা খাবারের ফলে নিম্ন রক্তচাপ বৃদ্ধি করে স্বাভাবিক করতে সাহায্য করে।
- মধুর সাথে কালোজিরা খাবারের ফলে দেহের কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে এবং উচ্চ রক্তচাপ কমিয়ে আনে।
- মধু ও কালোজিরা খাবারের ফলে আপনার ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে সাহায্য করে।
- কালোজিরা এ্যান্টিঅক্সিডেন্টের সাথে মিলে ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো রাখে।
- মধু প্রাকৃতিকভাবে আমাদের খাবারের এনার্জি বাড়ায় আর কালোজিরা বাড়ায় মেটাবলিজম। দুই উপাদান একসাথে মিলে ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণ করে এবং বাড়তি মেদ কমিয়ে আনে।
- মধু ও কালোজিরা একসাথে খাবারের ফলে দীর্ঘদিনের ব্যথা ও প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে।
- মধু কালোজিরা একসাথে খাবারের ফলে মস্তিষ্ক ভালো রাখে এবং কর্মক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়।
- মধু ও কালোজিরা খাবারের ফলে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি থাকে না।
কালোজিরা খাওয়ার নিয়ম
- কালোজিরা কে আপনারা তরকারির মসলা হিসেবে খেতে পারেন।
- কালোজিরা কে মধুর সঙ্গে মিশিয়ে খেতে পারেন।
- কাঁচা কালোজিরা চিবিয়ে খেতে পারেন। অথবা কালোজিরা হালকা তাপে ভেজে চিবিয়ে খেতে পারেন।
- রুটি বানানোর সময় কালোজিরা রুটির খাবারের সঙ্গে মিশিয়ে দিতে পারেন।
- কালোজিরা ভর্তা বানিয়ে খেতে পারেন।
- সালাদের সঙ্গে মিশিয়ে মিশিয়ে খেতে পারেন।
- তাছাড়া বিস্কিট, কেক, সিঙ্গারা, পুরি ও লুচির সাথে মিশিয়ে কালোজিরা খেতে পারেন।
- কালোজিরা প্রতিদিন সকালে খালি পেটে এক চিমটি পরিমাণ কালোজিরা একগ্লাস পানির সাথে মিশিয়ে খাওয়া উচিত।
- গরম ভাতের সাথে কালোজিরা মিশিয়ে খেতে পারেন।
প্রতিদিন কালোজিরা খেলে কি হয়?
কালোজিরার অপকারিতা
- কালোজিরার তেল অতিরিক্ত ত্বকে লাগালে এলার্জি হতে পারে। এজন্য নিয়ম মেনে পরিমিত কালোজিরা তেল ব্যবহার করা উচিত।
- অতিরিক্ত কালোজিরা তেল সেবন করার ফলে রক্ত জমাট বাঁধা কমে যেতে পারে। যার ফলে রক্তপাত হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে। তাই অতিরিক্ত কালোজিরা তেল না খাওয়াই ভালো।
- অতিরিক্ত কালোজিরা তেল খাবারের ফলে রক্তের শর্করার পরিমাণ কমে যেতে পারে।
- আপনাদের মাঝে যদি কারো ডায়াবেটিসের সমস্যা থাকে তাহলে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে কালোজিরা তেল খেতে পারেন।
- কালোজিরা খাবারের ফলে কারো কারো বমি বমি ভাব হতে পারে। তাই কালোজিরা অতিরক্ত না খেয়ে বুঝে শুনে পরিমিত খাওয়া উচিত।
প্রতিদিন কাদের কালোজিরা খাওয়া উচিত নয়
- গর্ভ অবস্থায় কালোজিরা তেল খাওয়া উচিত নয়।
- দুই বছরের কম বয়সী বাচ্চাদের কালোজিরা তেল খাওয়া যাবেনা।
- নকল কালোজিরা তেল এড়িয়ে চলা উচিত। কৃত্রিম কালোজিরা তেল কখনোই খাবেন না।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url