মাশরুম খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা। মাশরুমের আশ্চর্য পুষ্টিগুণ জানলে অবাক হবেন।

মাশরুম খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে আপনি কি জানতে চাচ্ছেন। তাহলে আপনি সঠিক জায়গায় এসেছেন। মাশরুম খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা জানতে আগে আপনাকে  সম্পর্কে জানতে হবে। মাশরুম এক ধরনের ছত্রাক এবং ক্লোরোফিল বিহীন উদ্ভিদ। 

মাশরুম-খাওয়ার-উপকারিতা

মাশরুম এক ধরনের সবজি, যা সম্পূর্ণ হালাল সুস্বাদু পুষ্টিকর ও উচ্চ খাদ্য শক্তি এবং ভেষজ গুণে ভরপুর। মাশরুমে রয়েছে ২৫-৩০% প্রোটিন সহ উপকারী শর্করা, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, ভিটামিন বি, ভিটামিন সি, ভিটামিন ডি থাকে। চলুন তাহলে মাশরুম্মের উপকারিতা সম্পর্কে জেনে আসি।

পোস্ট সূচিপত্রঃ মাশরুম খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা

মাশরুমের খাওয়ার উপকারিতা

মাশরুম খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে অনেকেই জানেনা। আবার অনেকেই মাশরুম খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জানতে চায়। আপনি যদি মাশরুম খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জানতে চান তাহলে আমার লেখা আর্টিকেলটি ধৈর্য সহকারে পড়ুন। মাশরুম ছত্রাক জাতীয় উদ্ভিদ। প্রায় ১৪ হাজার প্রজাতির মাশরুম দেখতে পাওয়া যায়। তবে সব ধরনের মাস্টার মাশরুম খাওয়ার জন্য উপযোগী নয়। 

বনে জঙ্গলে যে মাশরুমগুলো হতে দেখা যায় এগুলো খাওয়ার জন্য উপযুক্ত নয়, এগুলো বিষাক্ত মাশরুম। খাবারের জন্য উপযুক্ত মাশরুম হচ্ছে অর্গানিকভাবে যেটি চাষ করা হয়। নিজেদের চাষ করা মাশরুম খাওয়ায় সর্বোত্তম। খাবারের জন্য কতগুলো জনপ্রিয় মাশরুম পাওয়া যায়। যেমন বাটন মাশরুম, ওয়েস্টার মাশরুম, পোর্টেবল মাশরুম ইত্যাদি। 

আরো পড়ুনঃ কালোজিরা খাওয়ার উপকারিতা

যেখানে সেখানে জন্মানো মাশরুমগুলো খাবারও উপযুক্ত নয়। অর্গানিক বা নিজে চাষ করা মাশরুম খাওয়ার জন্য নিরাপদ এবং স্বাস্থ্যসম্মত। আমাদের মধ্যে অনেকেই আছেন যে তারা জানেন না কিভাবে মাশরুম খেতে হয় এবং কিভাবে চাষ করতে হয়। আবার মাশরুম গুলোর মধ্যে কোনগুলো বিষয় সেটি নিয়ে অনেকেই সংশয় থাকেন। মাশরুমের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে অনেকেই জানেন না। 

যে কারণে গরু, খাসি কিংবা মুরগির মাংস খাওয়ার প্রতি প্রবণতা বেশি। মাশরুম এমন একটি পুষ্টিকর খাবার যা সুপ কিংবা সবজি হিসেবে কিংবা অন্যান্য খাবারের সাথে খাওয়া যায়, তাহলে সব বয়সী মানুষের প্রোটিনের চাহিদা পূরণ করতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে। আসন আজ আমি আপনাদের মাশরুম খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে আলোচনা করব-

  • রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করেঃ মাশরুমে প্রচুর পরিবারে ফাইবার থাকে এবং সোডিয়াম এর পরিমাণ কম থাকে আরও আছে পটাশিয়াম যা আমাদের শরীরের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে এবং হৃদপিন্ডের কাজের সহায়তা করে।
  • ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়ঃ নিয়মিত খাবারের ফলে ব্রেস্ট ক্যান্সার এবং প্রটেস্ট ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি থাকে না। মাশরুম ক্যালসিয়াম এবং ফসফরাসের শোষণ বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।
  • ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করেঃ মাশরুম খাবারের ফলে রক্তে চীনের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ থাকে। মাশরুমে এনজাইম ও প্রাকৃতিক থাকে যা চিনি কে ভাঙতে পারে।
  • পরিপাকতন্ত্রকে নিয়ন্ত্রণ করেঃ মাশরুমে ফাইবার বিদ্যমান থাকায় ইনজয়িম ও খাদ্য হজমে সাহায্য করে। তাছাড়া মাশরুম অন্তরে উপকারী ব্যাকটেরিয়ার কাজ বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে এছাড়া কোন এর পুষ্টি উপাদান শোষণকে বাড়াতে সাহায্য করে।
  • শিশুদের হাড় ও দাত গঠনে অত্যন্ত কার্যকরীঃ মাশরুমে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম,ফসফরাস এবং ভিটামিন-ডি। যা আমাদের শিশুদের হাড় ও দাত গঠনে অত্যন্ত কার্যকরি।
  • রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করেঃ নিয়মিত মাশরুম খাবারের ফলে শরীরে অ্যান্টিবডিস সৃষ্টি হয়। যা আমাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। মাশরুম আমাদের দৈনন্দিন কিছু অসুখ যেমন ঠান্ডা ও পথ থেকে রক্ষা করে।
  • অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এর কাজ করেঃ মাশরুমে প্রচুর পরিমাণ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বিদ্যমান। নিয়মিত মাশরুম খাবারের ফলে মারাত্মক কিছু রোগ যেমন স্ট্রোক, স্নায়ুতন্ত্রের রোগ এবং ক্যান্সার থেকে আপনার শরীরকে রক্ষা করবে।
  • ওজন নিয়ন্ত্রণ করেঃ মাশরুমে প্রচুর পরিমাণে ফাইভার আছে। নিয়মিত মাশরুম খাবার ফলে আপনার পাকস্থলী দীর্ঘক্ষণ ভরা রাখতে সাহায্য করবে।
  • স্নায়ুতন্ত্রের জন্য বেশ উপকারীঃ মাশরুমে ভিটামিন থাকায় স্নায়ুতন্ত্রের জন্য বেশ উপকার করে। তো মাশরুম খাবারের ফলে নিয়মিত মাশরুম খাবারের ফলে বয়স জনিত রোগ থেকে রক্ষা করে।
  • হাইপারটেনশন দূর করেঃ মাশরুমে ভিটামিন বি ১২ বেশি থাকায় স্নায়ুতন্ত্র ও স্পাইনাল কট সুস্থ রাখে। তাছাড়া নিয়মিত মাশরুম খেলে হাইপারটেনশন দূর হয় এবং মেরুদন্ড মজবুত থাকে। সেই সাথে হেপাটাইটিস বি ও জন্ডিস প্রতিরোধে সহায়ক ভূমিকা রাখে।
  • ভিটামিন ডি ধারণ করেঃ মাশরুম ভিটামিন ডি ধারণ করার ক্ষমতা রাখে। সূর্যের আলোর সংস্পর্শে যে মাশরুম গুলো উৎপন্ন হয় তাতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ডি থাকে। যা আমাদের শরীরের ক্যালসিয়াম ও ফসফরাসের শোষণ বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।
  • ত্বক সুস্থ রাখেঃ মাশরুমে আছে নিয়ে আসেন ও রিবোফ্লোবি নামক পুষ্টি উপাদান। যা আমাদের ত্বকের জন্য খুবই উপকারী। নিয়মিত মাশরুম খাবারের ফলে আমাদের ত্বককে নরম ও কমল রাখতে সাহায্য করে। মাশরুমে আছে ৮০ থেকে ৯০ ভাগ পানি যা আমাদের দেহকে সতেজ রাখতে সাহায্য করে।
  • দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি করেঃ মাশরুমে আছে খনিজ লবন,যা আমাদের দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।
  • রক্তস্বল্পতা দূর করেঃ মাশরুমে আছে অ্যানিমিয়া যা আমাদের রক্তস্বল্পতা দূর করে এবং শরীরের রক্ত বৃদ্ধি করে।

মাশরুমে থাকা পুষ্টি উপাদানের কার্যকারিতা

মাশরুমে থাকা পুষ্টি উপাদানের কার্যকারিতা অনেকেই জানেনা। পুষ্টি উপাদানে ভরপুর মাশরুম একটি অত্যন্ত চমকপ্রদ স্বাস্থ্যকর খাবার। মাশরুমের পুষ্টি তুলনামূলকভাবে অত্যধিক এবং এর প্রোটিন অতি উন্নত মানের যা মানব দেহের জন্য খুবই উপকারী। মানুষ জন্য অত্যাবশ্যকীয় ৯টি এসিডের উপস্থিত থাকা দরকার যা মাশরুমের মধ্যে রয়েছে। 

আরো পড়ুনঃ আমলকির ২০টি স্বাস্থ্যুপকারিতা সম্পর্কে জানুন

মাছ, মাংস, ডিম এবং নামিদামি খাবার গুলো অতিরিক্ত খেলে শরীরের কোলেস্টেরল বৃদ্ধি পেয়ে বিভিন্ন সমস্যার সৃষ্টি করে। যার ফলে অনেক সময় মেদ ও ভুডির সৃষ্টি হয়। ডায়াবেটিস উচ্চ রক্তচাপ হৃদরোগ এবং আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে। কিন্তু মাশরুমে ৯টি এমাইনো এসিড বিদ্যমান থাকায় হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, মেদ বা ভুড়ির সৃষ্টি হওয়া থেকে বিরত রাখে। 

মাশরুম খাওয়ার ফলে শরীরে বহুদিনের জমানো কোলেস্টরেল ধীরে ধীরে নষ্ট হতে থাকে। ১০০ গ্রাম শুকনো মাশরুমে প্রোটিন রয়েছে ২৫-৩৫ গ্রাম। আর ১০০ গ্রাম মাছে প্রোটিন রয়েছে ১৬-২২ গ্রাম,আর ১০০গ্রাম গোস্তে প্রোটিন রয়েছে ২২-২৫ গ্রাম এবং ডিমে প্রোটিন রয়েছে মাত্র ১৩ গ্রাম।

মাশরুম খাওয়ার নিয়ম

মাশরুম খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে অনেকেই আমরা জানি না। কোন কিছু খাবার আগে তার পুষ্টিগুণ এবং নিয়ম জেনে খাওয়া দরকার। নিয়ম না জেনে খেলে অনেক সময় ক্ষতি হতে পারে। আপনাদের সুবিধার্থে মাশরুম খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে নিচে আলোচনা করা হলো-

  • আপনি মাশরুমকে সবজির সাথে মিশিয়ে খেতে পারেন।
  • মাশরুমকে নুডুলসের সাথে মিশিয়ে খাওয়া যায়।
  • মাশরুমের সুপ খাওয়া যায়। সুপের মধ্যে আস্ত মাশরুম না দিয়ে মাশরুমের পাউডার ব্যবহার করা যেতে পারে। এতে করে বেশি সুস্বাদু হবে। 
  • যদি মাশরুমের পাউডার না থাকে তাহলে মাশরুম ছোট ছোট টুকরা করে গরম পানিতে সিদ্ধ করে নিতে হবে। এই সিদ্ধ করা মাশরুম আপনি সুপেও ব্যবহার করতে পারেন আবার সবজির মাঝে মেশাতেও পারেন।
  • মাশরুমের সাথে পনির, ঘি,কাচা লবণ মিশিয়ে পরিবেশন করতে হবে। 
  • মাশরুমকে আমরা ফ্রাই করেও খেতে পারি।

কিভাবে মাশরুম চাষ করা যায়

কিভাবে মাশরুম চাষ করা যায় আমরা অনেকেই জানিনা। চলুন মাশরুম কিভাবে চাষ করা যায় তা জেনে নেই। বর্তমান বাংলাদেশে বাণিজ্যিক আকারে ঝিনুক মাশরুম চাষের প্রচলন বেশি। চাষীদের জন্য স্পন ভর্তি ব্যাগ সরবরাহ করা হয়। সরবরাহ কৃত এসব ব্যাগ  থেকে চাষিরা মাশরুম উৎপাদন করে থাকেন। ৫০০ গ্রাম ওজনের পলিব্যাগ এর ভিতরে মোট উপাদান থাকে-

কাঠের গুড়া ৬৪%
গমের ভুসি ৩২% এবং
ধানের তুষ ৪%
  • সব কিছু দিয়ে একটি মিশ্রণ তৈরি করতে হবে। 
  • উক্ত মিশ্রণের সাথে সামান্য পরিমাণে চুন এবং পানি মেশাতে হবে। 
  • মিশ্রন ভর্তি প্যাকেট গুলো ঘরের চালা বিশিষ্ট বাশের বেড়া কিংবা পাকা মেঝের ঘরে কাঠ কিংবা বাঁশের তৈরি তাকে প্যাকেটগুলো সারি করে সাজিয়ে রাখতে হবে।
  • সারিবদ্ধ ব্যাগের দুই দিকে অর্ধচন্দ্র আকৃতি করে কাটতে হবে এবং কাটা অংশের কিছু অংশ চেছে ফেলে দিতে হবে।
  • চাছার পর ব্যাগটি পরিষ্কার পানিতে ২০ থেকে ৩০ মিনিট ডুবিয়ে রাখতে হবে।
  • ব্যাগটি পাকা পরিস্কার ফ্লোর কিংবা তারের জালির উপর আধা ঘন্টা উল্টে রাখতে হবে যাতে ভেতরের বাড়তি পানি সম্পূর্ণভাবে ঝরে পড়ে যায়।
  • তারপর ব্যাগগুলো চাষ ঘরের ভিতরে কাঠ বা বাঁশের মাথার উপর সারিবদ্ধ ভাবে রাখতে হবে।
  • বাহিরের তাপমাত্রা কম থাকলে ব্যাগের উপর পলিথিন দিয়ে দুই তিন দিন ঢাকে রাখতে হবে যাতে করে ব্যাগের ভিতর তাপমাত্রা বেড়ে যায়। এ সময় ঘরের আদ্রতা ৮০% এবং তাপমাত্রা ২৫-৩০ সেন্টিমিটার হওয়া দরকার।
  • ব্যাগগুলোতে নিয়মিত পানি স্প্রে করতে হবে।
  • যদি ব্যাগগুলোর উপর পলিথিন দিয়ে ঢাকা থাকে তাহলে ৩/৪ বার ১০-১৫ মিনিট সময় পর্যন্ত বায়ু চলাচলের ব্যবস্থা করে দিতে হবে।
  • ২/৩ দিন পর ব্যাগের কাঁটা অংশ দিয়ে সাদা পিন এর মত দেখা যাবে। আরো দুই তিন দিন পর মাশরুম বড় হলে সংগ্রহ করতে হবে।
  • অন্য দুপাশ থেকে একইভাবে শেষে দিয়ে পানি স্প্রে করলে নতুন করে আবার মাশরুম উৎপাদন হবে।
  • একটি মাশরুমের ব্যাগ থেকে ৩/৪ বার ফসল তোলা যায়।

কিভাবে ওয়েস্টার মাশরুম চাষ করা যায়

কিভাবে ওয়েস্টার মাশরুম চাষ পদ্ধতি অনেকেই জানেনা। আপনি যদি ওয়েস্টার মাশরুম চাষ করতে চান তাহলে স্পনগুলোতে নিয়মিত পানি দিয়ে স্যাত স্যাতে রাখতে হবে। ওয়েস্টার মাশরুম শীতকাল ও বর্ষাকালে অধিক পরিমাণে হয়ে থাকে। একটি ভালো মানের স্পন থেকে প্রতিমাসে ২০০-২৫০ গ্রাম মাশরুম উৎপাদন করা যায় শীতকালে। 

কিভাবে-ওয়েস্টার-মাশরুম-চাষ-করা-হয়

তাছাড়া গ্রীষ্মকালে একটি ভালো মানের স্পন থেকে প্রতি মাস ৯০-১০০ গ্রাম ওয়েস্টার মাশরুম পাওয়া সম্ভব। নিচে ওয়েস্টার মাশরুম চাষ পদ্ধতি আলোচনা করা হলো-

  • গমের ভুসি, কাঠের গুড়া ও ধানের তুষ দিয়ে একটি মিশ্রণ তৈরি করতে হবে। 
  • উক্ত মিশ্রণগুলো পলিথিন কাগজে ভরিয়ে ভালো রাবার দিয়ে আটকে দিতে হবে যাতে বাহিরের কোন বাতাস ভিতরে প্রবেশ করতে না পারে। 
  • মিশ্রণ ভর্তি প্যাকেট গুলোর সাইটের তাদের আকৃতির অংশ করে কাটতে হবে। 
  • এরপর চামচ দিয়ে এক সেন্টিমিটার গভীর করে শেষে ফেলে দিতে হবে। 
  • পরিষ্কার পানিতে প্যাকেট গুলো অল্প কিছুক্ষণ ভেজাতে হবে। 
  • তারপর পরিষ্কার জায়গায় উল্টো করে রাখতে হবে। যাতে করে তার গায়ে সম্পূর্ণ পানি ঝরে পড়ে যায়।
  • তারপর ব্যাগগুলো সুন্দর করে চাষ ঘরের মধ্যে সাজিয়ে রাখতে হবে। 
  • বাহিরের তাপমাত্রা কম থাকলে পলিথিন ব্যাগগুলো পেপার কিংবা পলিথিন দিয়ে ঢাকে রাখতে হবে। 
  • এ সময় ঘরের ভিতর আদ্রতা ৮০ সেন্টিমিটার এবং তাপমাত্রা ২৫-৩০ সেন্টিমিটার থাকতে হবে।
  • ব্যাগগুলোতে নিয়মিত পানি স্প্রে করতে হবে। 
  • যদি ব্যাগগুলো পলিথিন দিয়ে ঢাকে রাখে তাহলে প্রতিদিন ২-৩ বার ১০-১৫ মিনিটের জন্য পলিথিনের ঢাকনা সরিয়ে রাখতে হবে, যাতে করে বাতাস চলাচল করতে পারে। 
  • ২-৩দিন পর দেখা যাবে ব্যাগের কাটা জায়গা গুলোতে সুচের আকৃতি দেখা যাচ্ছে। 
  • আরো দুই-তিনদিন পর মাশরুম সংগ্রহ করা যেতে পারে। এভাবেই ওয়েস্টার মাশরুম চাষ করা হয়।

ওয়েস্টার মাশরুম এর উপকারিতা

ওয়েস্টার মাশরুম এর উপকারিতা সম্পর্কে সকলের জানা উচিত. আসুন আমরা সবাই ওয়েস্টার মাশরুম এর উপকারিতা সম্পর্কে জেনে নিই।

  • ওয়েস্টার মাশরুম শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
  • মাশরুমে শর্করা ও চর্বির পরিমাণ কম থাকায় ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য খুবই উপকারী।
  • মাশরুমে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকায় কোলেস্টেরলের মাত্রা কমতে থাকে এবং খাদ্য হজমে সহায়তা করে।
  • মাশরুমে খুব অল্প পরিমাণে কোলেস্টেরল, ফ্যাট ও কার্বোহাইড্রেট থাকে।
  • মাশরুমে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম ফসফরাস ও ভিটামিন ডি থাকে।
  • মাশরুমে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন, এন্টিঅক্সিডেন্ট, এন্টিবায়োটিক, জিংক, মিনারেল,সেলেনিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়াম থাকে।
  • মাশরুমে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন এ্যামাইনো অ্যাসিড, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন বি, ভিটামিন ডি, ভিটামিন সি থাকে যা আমাদের দেহের কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে।

মাশরুম এর প্রকার ভেদ

মাশরুম এর প্রকার নিয়ে অনেকেরই অজানা। কিন্তু আমাদের মাশরুম এর প্রকার সম্পর্কে জানা দরকার। চলুন তাহলে মাশরুম এর প্রকার সম্পর্কে জেনে আসি। সম্প্রীতি এক তথ্যে জানা গেছে পৃথিবীতে এখন পর্যন্ত প্রায় ১৪ হাজার ৬ মাস জুন প্রজাতির মাশরুম পাওয়া যায়। আরো জানা গেছে কিছু প্রকৃতির মাশরুম আছে যেগুলো খুব তাড়াতাড়ি বৃদ্ধি হয়। 

আরো পড়ুনঃ আমলকির ৩০টি আশ্চার্য পুস্টিগুন

এমন কি এক রাতেই মধ্যে উৎপাদিত হতে পারে। মাশরুমের মধ্যে সকল প্রজাতির মাশরুম খাওয়া যায় না। বন জঙ্গলে যেগুলো মাশরুম হয় এগুলো বিষাক্ত মাশরুম। তাই মাশরুম খাওয়ার আগে নিশ্চিত হতে হবে যে, এ প্রজাতির মাশরুম খাওয়া যাবে কিনা। বিষাক্ত মাশরুমের রঙ সাধারণত আকর্ষণীয় বা উজ্জ্বল হয়। 

মাশরুমের মাথায় যদি ক্যাপ কিংবা ছোট ছোট সাদা দাগ বা ফোটা থাকে সেই মাশরুমটি বিষাক্ত হতে পারে। নিম্নে আপনাদের সুবিধার্থে মাশরুমের প্রকার নিয়ে আলোচনা করা হলো-

  • ওয়েস্টার মাশরুম 
  • বাটন মাশরুম বা গুটি মাশরুম
  • মিল্ক হোয়াইট মাশরুম
  • ঋষি মাশরুম বা শুকনো ও গুড়া মাশরুম।
  • স্ট্র মাশরুম
  • শিং অফ প্রচুর মাশরুম। এছাড়া মাশরুমের আরো প্রকার রয়েছে। যেমন-
  • বোলেটস মাশরুম।
  • ব্র্যাকেট ফাঙ্গি।
  • এগারিক্স এবং সেন্টারেলেস ইত্যাদি

মাশরুমের দাম ২০২৪

মাশরুমের দাম সম্পর্কে আমরা অনেকেই জানিনা। কিন্তু আমরা যদি মাস্টারকে মাশরুমকে পুষ্টিকর খাবার হিসেবে দৈনন্দিন খাদ্য তালিকায় রাখি, তাহলে মাশরুমের দাম জানা প্রয়োজন। বিভিন্ন ধরনের মাশরুমের দামও বিভিন্ন হতে পারে। বিশ্বের সবচেয়ে দামি মাশরুম হল ইউরোপিয়ান সাদা কাপড় মাশরুম। 

  • আন্তর্জাতিক বাজারে এর দাম হচ্ছে প্রতি কেজি ৭ থেকে ৯ লাখ টাকা।
  • বাটন মাসে বা গুটি মাসুম প্রতি কেজির মূল্য ১২০০ টাকা
  • ওয়েস্টার মাশরুমের দাম প্রতি কেজি ২৫০ টাকা
  • ওয়েস্টার মাশরুমের গুঁড়া প্রতি কেজি ১৪০০ টাকা।
  • ঝিনুক মাশরুমের দাম প্রতি কেজি ৫২০ থেকে ২৬০০ টাকা। এছাড়াও 
  • ১ কেজি বাটন মাশরুমের দাম ৫০০-১১০০টাকা
  • ১ কাজি শুকনো বা গুড়ো মাশরুমের দাম ৪০০০-৪৫০০ টাকা।
  • ১ কেজি তাজা কান মাশরুমের দাম ২০০-২৫০ টাকা।
  • ১ কেজি শুকনো কান মাশরুমের দাম ১২০০-১৫০০টাকা। এছাড়াও আরো অনেক আইটেমন আছে মাশরুমের আচার এক কেজি যার মূল্য ১৪০০-১৮০০ টাকা

মাশরুমের স্পনের দাম কত?

মাশরুমের স্পনের দাম আমরা অনেকেই জানিনা। মাশরুম চাষাবাদ করতে গেলে স্পনের দাম জানতে হবে। চলুন তাহলে আজ আমরা জানবো মাশরুমের স্পন্দনের দাম কত? বাণিজ্যিক ইসকন বা ব্যাগ তৈরি করার জন্য প্রতি পিস মাদারের দাম ৩৫ টাকা। কিন্তু আপনি যদি মাশরুম চাষ করতে চান তাহলে আপনাকে সর্বনিম্ন ৪০ পিস অর্ডার করতে হবে। তার সাথে প্যাকেট ও ভ্যান ভাড়া খরচ যোগ করতে হবে।

মাশরুমের এলার্জি আছে কি?

মাশরুমে এলার্জি আছে কি? একথা আমাদের জানা উচিত। কারণ যাদের শরীরে মাশরুম জনিত এলার্জি আছে, তাদের জন্য মাশরুমকে এড়িয়ে চলায় সবচেয়ে কার্যকরী চিকিৎসা। যদি মাশরুম খেয়ে এলার্জি হয় তাহলে শরীরে উচ্চমাত্রায় lgE এন্টিবডি নির্দেশিত হয়। মাশরুমে এলার্জি থাকলে হোয়াইট বোতাম এবং ঝিনুক মাশরুম সহ সব ধরনের মাশরুম এড়িয়ে চলা দরকার। 

ভিন্ন প্রজাতির মাশরুমে বিভিন্ন ধরনের টনিক্স থাকে। আর এমাটোনিক্স হল সবচেয়ে মারাত্মক বিষক্রিয়া ঘটায়। তাছাড়া মাশরুমে আমিষ, শর্করা, চর্বি, ভিটামিন এবং মিনারেল থাকে। মাশরুমে ফ্যাট ও শর্করা কম এবং ফাইবার বেশি থাকায় ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য মাশরুম অত্যন্ত উপকারী। এছাড়াও মাশরুমে ট্রাইটারপিন উপস্থিত থাকায় এটি HIV ভাইরাস প্রতিরোধ হিসেবে ব্যবহারিত হয়।

মাশরুম সব বয়সী মানুষের জন্য উপযোগী খাদ্য

মাশরুম সব বয়সী মানুষের জন্য উপযোগী খাদ্য। কারণ মাশরুমে আছে প্রচুর পরিমাণে, আমিষ, শর্করা, চর্বি, ভিটামিন ও মিনারেলসহ আরো অন্যান্য পুষ্টি উপাদান। যা খেলে আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়। বিশেষ করে গর্ভবতী মা নিয়মিত মাশরুম খেলে দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। 

মাশরুম-সব-বয়সী-মানুষের-খাবারের-উপযোগী

মাশরুমে চর্বি এবং শর্করা কম থাকায় এবং আঁশ এর পরিমাণ বেশি থাকায় ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য আদর্শ খাদ্য হিসেবে বিবেচনা করা হয়। মাশরুমে আছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম, আয়রন, পটাশিয়াম ও সেলেনিয়াম। আমাদের মধ্যে যারা নিরামিষভুজি আছেন তারা মাশরুমের মাধ্যমে সব ধরনের উপকারই উপাদান গ্রহণ করতে পারেন। 

এ ছাড়াও মাশরুমে বিদ্যমান এরগোথিওনেইন নামে এক ধরনের শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে যা মানবদেহ ঢাল স্বরূপ কাজ করে। তাই আমরা আমাদের খাদ্য তালিকায় মাশরুম রাখতে ভুলবোনা।

মাশরুমের খাওয়ার অপকারিতা

মাশরুম খাওয়ার অপকারিতা সম্পর্কে চলুন জেনে আসি। অনেক প্রজাতির মাস্টারম আছে যা বিষাক্ত হতে পারে। এ ধরনের মাশরুমে টনেস থাকে। আর এমটনিক মাশরুমে এমন একটি বিষক্রিয়া ঘটতে পারে যার কারণে প্রাণহানির ঘটনাও ঘটতে পারে। স্বাস্থ্য সমস্যা থাকলে মাশরুম খেলে সমস্যাগুলো আরো বাড়তে পারে।

আরো পড়ুনঃ কালোজিরার ৩০টি পুষ্টিগুন সম্পর্কে জনুন

মাদক সেবনকারী যারা নিজেদের উপর কোন নিয়ন্ত্রণ থাকেনা, তারা যদি মাশরুম খেয়ে থাকে তবে তাদের জন্য শারীরিক ও মানসিক ক্ষতি হতে পারে। মাশরুম জনিত যাদের এলার্জি রয়েছে তাদের জন্য মাশরুম কে এড়িয়ে চালায় ভালো। তাছাড়া মাশরুম খেলে এলার্জির প্রকোপ আরো বাড়তে পারে।

মাশরুম খাওয়ার উপকারিতা নিয়ে লেখকের শেষ কথা

মাশরুম খাওয়ার উপকারিতা নিয়ে আলোচনা করতে গিয়ে মাশরুম সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। আপনি যদি আমার লেখা আর্টিকেলটি ধৈর্য সহকারে পড়ে থাকেন তাহলে মাশরুম সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে পারবেন। এছাড়াও আপনি মাশরুম সম্পর্কে আরো যদি তথ্য জানতে চান তাহলে আমার ওয়েবসাইটে কমেন্টের মাধ্যমে জানাতে পারেন। 

তাহলে আমি আপনাকে মাশরুম সম্পর্কে আরো তথ্য দিতে সক্ষম হব। এছাড়াও আমার লেখা আর্টিকেল পড়ে আপনার যদি ভালো লাগে তাহলে নিয়মিত আমার ওয়েবসাইট ভিজিট করুন। আমার লিখার মাধ্যমে আমি যদি আপনাদের কোন কষ্ট দিয়ে থাকি তবে আমাকে নিজ গুনে ক্ষমা করে দিবেন।


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url