আদা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা। আদার ২০টি ঔষধি গুণ জানলে অবাক হবেন

আদা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে আমাদের মাঝে অনেকেই জানে না। কিন্তু আমাদের আদার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জেনে শুনে আদা খাওয়া উচিত। আবার একটি ভেষজ মসলা জাতীয় উদ্ভিদ যা আমাদের ঔষধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। মসলা জাতীয় উদ্ভিদের মধ্যে আদা অন্যতম। আদায় সুগন্ধ আছে কিন্তু স্বাদ ঝাঁঝালো হয়ে থাকে। 

আদা-খাওয়ার-উপকারিতা-ও-অপকারিতা

আদা, খাদ্য, পানিয় ,আচার, ঔষধ এবং বিভিন্ন পারফিউমে ব্যবহার করা হয়। প্রাচীনকাল থেকে আবার চলে আসছে। প্রাচীনকালে গ্রীক এবং রোমানরা সর্দি নিরাময়ে আদা বেশি ব্যবহার করতেন। আদার অপকারিতা ও উপকারিতা দুটোই আছে। কিন্তু অপকারিতার চেয়ে উপকারিতা বেশি। চলুন জেনে নেওয়া যাক আদার উপকারিতা কি?

পোস্ট সূচিপত্রঃ আদার ২০টি ঔষধি গুণ

আদা খাওয়ার উপকারিতা

আদা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে অনেকেই জানেনা। আপনি যদি আধা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জানতে চান। তাহলে আমার আর্টিকেলটি ধৈর্য সহকারে পড়ুন। কথায় আছে আদা সকল রোগ নিরাময়ের দাদা। অর্থাৎ আমাদের শরীরের সকল রোগ নিরাময় করতে আদা যথেষ্ট পরিমাণে ভূমিকা রাখতে সক্ষম। 

আরো পড়ুনঃ নিমপাতা ও কাঁচা হলুদের উপকারিতা

আদায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম, আয়রণ, ক্যালসিয়া্ম, ম্যাগনেসিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, সোডিয়াম, জিংক, ফসফরা্স, ভিটামিন এ, ভিটামিন বি-৬, ভিটামিন ই, ভিটামিন সি, এন্টি ইনফ্লামেটরি ও এন্টি ব্যাকটেরিয়াল এজেন্ট বিদ্যমান। সব বয়সের মানুষ আদা খেতে পারেন। বিশেষ করে শিশুদের সুস্থ দেহ ও সতেজ মনের জন্য আদা খুবই কার্যকরী।

  • হার্টের জন্য আদাঃ আমাদের মাঝে যদি কারো হার্টের থাকে তারা যেন নিয়মিত আদা খান। কারণ আদা রক্তের অনুচক্রিকা এবং হৃদ যন্ত্রের কার্যক্রম ঠিক রাখতে খুবই কার্যকরী।
  • ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণেঃ আপনাদের যদি কারো ডায়াবেটিকস হয় তারা যেন আদা সেবন করে। আদা ডায়াবেটিস এবং কিডনির জটিলতা দূর করতে কাঁচা আদা বিশেষ সহায়ক।
  • কাশি কমায়ঃ আমাদের মাঝে কমবেশি সবারই কাশি হতে দেখা যায়। গলার খুসখুশে কাশ খুবই বিরক্তিকর। খুসখুসে কাশ নিরাময়ের জন্য কাঁচা আদা লবণের সঙ্গে খেতে পারেন। এতে করে আপনি খুসখুসে কাশ থেকে উপশম পাবেন। তাছাড়া চায়ের মধ্যে আদা দিয়ে খেলেও কাশের উপকার হয় অনেক বেশি। চায়ের সাথে আদা এবং অন্যান্য মসলা যোগ করলে দ্রুত ফলাফল পাওয়া যায়।
  • জমে থাকা কফ দূর করতেঃ ঠান্ডা জনিত কারণে অনেকের বুকে কফ জমে থাকে। এসব থেকে নিরাময় পেতে হলে প্রতিদিন দু বেলায় এক চামচ করে আদার রস এক চামচ লেবুর রস ও এক চামচ মধু এক কাপ গরম পানিতে মিশিয়ে চায়ের মত করে খেলে কাশি এবং কফ দুটোই দূর হয়ে যায়।
  • ঠান্ডার জন্য আদাঃ ঠান্ডা জনিত রোগ প্রতিরোধে আদা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আপনি আদার রসের সাথে সমপরিমাণ মধু মিশিয়ে গরম পানির সাথে খেতে পারেন। এভাবে কয়েকদিন খেলে আপনার ঠান্ডা লাগা সেরে যাবে।
  • আমাশয় জনিত রোগঃ আপনাদের মধ্যে যদি কারো আমাশয় জনিত রোগ থাকে। তাহলে আপনারা তাকে আদার রস খাওয়াতে পারেন। কারণ আদার রস খেলে আমাশয় ভালো হয়।
  • হাঁপানি ও ফুসফুস সংক্রান্ত রোগঃ হাঁপানি ও ফুসফুস সংক্রান্ত রোগে আদা অত্যন্ত কার্যকর। আপনি হাঁপানি ও ফুসফুস সংক্রান্ত রোগের জন্য আদা খেতে পারেন। একমাত্র আদায় পারে হাঁপানি ও ফুসফুস সংক্রান্ত রোগ থেকে মুক্তি দিতে।
  • পেটফাঁপা রোধ করেঃ খাবারের সমস্যা জনিত কারণে যদি কখনো কারো পেট ফেপে থাকে। তাহলে আপনি তাকে আদার রস খাওয়াতে পারেন। কারণ আদার রস পেট ফাঁপা রোধ করে।
  • পেট ব্যথা দূর করেঃ আমাদের মাঝে অনেকেরই খাদ্য হজমের সমস্যা জনিত কারণে পেট ব্যথা হয়ে থাকে। আপনি তাকে অবশ্যই আদার রস খাওয়াতে পারেন। আদার রস হজমজনিত সমস্যা দূর করতে এবং পেট ব্যথা ভালো করতে সাহায্য করে।
  • ক্যালসিয়াম জনিত রোগঃ আদার মাঝে আছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম। যদি কারো ক্যালসিয়াম জনিত সমস্যা হয় আপনি তাকে আদা খাওয়াতে পারেন। আদা খাওয়ালে ক্যালসিয়ামের সমস্যা দূর হতে পারে।
  • গলা ব্যথা সারাতেঃ অনেকের আছে ঠান্ডা জনিত কারণে এবং অন্যান্য কারণে গলা ব্যথা হয়ে থাকে। আদার রস গলা ব্যথা দূর করতে সাহায্য করে।
  • মাথা ব্যথা সমস্যা দূর করেঃ আমাদের অনেক সময় মাথাব্যথা সমস্যা দেখা দেয়। আমরা যদি মাথাব্যথা সময় আদা খেয়ে থাকি। তবে আমাদের মাথা ব্যাথা সমস্যা এবং মাইগ্রেনের সমস্যা দূর হবে।
  • বমি বমি ভাব দূর করেঃ জ্বর জনিত কারণে, খাদ্য হজমের সমস্যা, মাথা ব্যথার সমস্যা এবং এসিডিটিক সমস্যার কারণে বমি বমি ভাব লাগতে পারে। এমন সময় যদি আপনি আদার রস খেয়ে থাকেন তবে আপনার বমি বমি ভাব দূর হবে।
  • হাই প্রেসার নিয়ন্ত্রণ করেঃ আপনাদের মাঝে যদি কারো হাই প্রেসার থাকে। তাহলে তাকে নিয়মিত আদার রস খাওয়াতে পারেন। কারণ আদার রস হাই প্রেসার নিয়ন্ত্রণ রাখতে সক্ষম।
  • মুখে রুচি বাড়েঃ অনেকে নানান সমস্যা জনিত কারণে খাবারের রুচি কমে যায়। তারা যদি আদা চিবায় খেতে পারলে অনেকটা ভালো ফলাফল দিবে। আদা মুখে রুচি বাড়াতে সাহায্য করে।
  • রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়ঃ আদা খেলে আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে।
  • কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়ঃ কারো যদি কোষ্ঠকাঠিন্য হয়ে থাকে সে যদি নিয়মিত আদা খায়। তাহলে নিয়মিত আদা খাবারের ফলে কোষ্ঠকাঠি নজনিত সমস্যা দূর হবে।
  • ডায়াবেটিসের সমস্যা সমাধানেঃ আদা ডায়াবেটিসের সমস্যার সমাধানে খুবই উপকারী। সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে যদি আপনি ডায়াবেটিসের ঔষধ খান, তাহলে আপনাকে আদা খাওয়া বাদ দিতে হবে।

আদা খাওয়ার অপকারিতা

আদা খাওয়ার অপকারিতা সম্পর্কে আমাদের জানা উচিত। শুধু উপকারিতা জানলেই চলবে না। যে কোন কিছুর উপকারিতা ও অপকারিতা জেনেশুনে খাওয়া উচিত। আদার ক্ষেত্রেও এর বিকল্প নয়। এমন কিছু লোক আছে, যারা আদা খেলে শরীরে এলার্জি বেড়ে যায়। তাদের জন্য আদা খাওয়া উচিত নয়। যাদের উচ্চ রক্তচাপ আছে, তাদের জন্য ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী আবা খাওয়া উচিত। 


তাছাড়া বেশি আদা খেলে সমস্যা হতে পারে। যেকোনো কিছুই অতিরিক্ত পরিমাণে খেলে শরীরের ক্ষতি হয়। আদা আমাদের শরীরের রক্ত সঞ্চালনকে বাড়িয়ে দেয়। ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য আদা উপকারী হলেও ঔষধ সেবনের সময় আধা পরিহার করাই ভালো। কারণ আদা ইনসুলিন এর মত ওষুধের প্রভাব কমিয়ে দিতে পারে।

আদার ২০টি ঔষধি গুণ

আদার বিভিন্ন ঔষধি গুণ জানলে অবাক হবেন। কথায় আছে আদা সকল রোগ নিরাময়ে দাদা। উপরের আলোচনা থেকে আদার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। এখন আমি আদার ওষুধিগুণ সম্পর্কে আলোচনা করব। দেরি না করে চলুন তাহলে জানা যাক
  • আদায় আছে প্রচুর পরিমাণে ক্রোমিয়াম, জিংক এবং ম্যাগনেসিয়াম। এসকল উপাদান আমাদের শরীরের রক্তের প্রবাহকে স্বাভাবিক রাখে।
  • শ্বাস-প্রশ্বাসের সাধারণত সমস্যা দূর করে আদা। তাছাড়া ফুসফুসের যেকোনো সংক্রমণ এবং গলার স্বতন্ত্রী পরিষ্কার রাখতে আদা বেশ কার্যকরী।
  • আদা খাদ্য হজমের পাশাপাশি খাবারের বিভিন্ন গুনাগুন শরীরের বিভিন্ন অংশে পৌঁছে দিতে সক্রিয় ভূমিকা রাখে।
  • পেটের পিড়ায় আদাকে একটি আদর্শ পথ্য বলা চলে। পেটের যেকোনো ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ প্রতিরোধ এবং পেট ব্যথার মতো সমস্যা হলে তার জন্য আদার রস বিশেষ ভূমিকা রাখে।
  • আদায় আছে ইনফ্লামেটরি উপাদান। যা আমাদের শরীরের কোথাও ক্ষত থাকলে এবং কাটা ছেঁড়া ভালো করতে দ্রুত কাজ করে।
  • ওজন কমাতে আদা কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। কিন্তু আপনি যদি মোটা হতে চান তাহলে আদা পরিহার করাই উচিত।
  • আদা শরীরের অতিরিক্ত চর্বি কমাতে সাহায্য করে।
  • আদা মাইগ্রেনের সমস্যা তথা মাথাব্যথা সমস্যা সমাধান করতে আদা কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।
  • একজন গর্ভবতী মা গর্ভধারণের পূর্ব সময় কিছু খারাপ লাগা অনুভব করে। এই সময় যদি তাকে আদা খাওয়ানো যায়। তাহলে অনেকটা স্বস্তি মিলবে। এজন্য আপনাকে কাঁচা আবা খেতে হবে।
  • ভাইরাস জ্বর সারাতে আদা বিশেষ ভূমিকা রাখে। আদার রসের সাথে সমপরিমাণ মধু মিশিয়ে কুসুম গরম পানির সঙ্গে খেতে পারেন। তাহলে ভাইরাস জ্বর সেরে যাবে।
  • ডায়াবেটিস এবং কিডনিজনিত সমস্যা সমাধান করে কাঁচা আদা।
  • ঠান্ডা লাগা প্রতিরোধে আদা বিশেষ ভূমিকা রাখে।
  • যানবাহনে ওঠার সময় অনেকের মাথা ঘোরা বমি বমি ভাব দেখা যায়। সেসময় কাঁচা আদা চিবিয়ে খেলে অনেক উপকার পাওয়া যায়।
  • আদা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপকারী হলেও ওষুধ গ্রহণের সময় তা পরিহার করা উচিত।
  • উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে আধাক কার্যকরী হলেও ঔষধ গ্রহণের সময় তা পরিহার করা উচিত। অথবা ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
  • অফিসের কর্মকাণ্ডে ব্যস্ত সময় এবং অনেক জার্নি করার কারণে অস্বস্তি লাগে। এমন সময় আপনি যদি এক কাপ আদা দিয়ে চা খেতে পারেন। তাহলে শরীরের অনেকটাই ক্লান্তি দূর হবে।
  • মহিলাদের পিরিয়ডের সময় ব্যথা হলে আপনি তাকে বা খাওয়াতে পারেন। আবার থাকা এন্টি ইনফ্লেমেটরি আপনার পেটের ব্যথা কমিয়ে দেয়। আর গরম চা স্বাভাবিকভাবে আপনাকে আরাম দিবে।

আদার পুষ্টি উপাদান

আদার পুষ্টি উপাদান সম্পর্কে আমরা অনেকেই জানিনা। আদায় থাকা পুষ্টি উপাদান সম্পর্কে আমাদের সবার জ্ঞান রাখা উচিত। চলুন দেরি না করে জানা যাক আদার পুষ্টি উপাদান গুলো কি? প্রতি ১০০ গ্রাম আদার মাঝে আছে ৮০ গ্রাম ক্যালরি শক্তি, 0.৮ গ্রাম স্নেহ পদার্থ, সম্পৃক্ত চর্বি 0.২ গ্রাম, পলি সেচুুরেটেড চর্বি 0.২ গ্রাম, সোডিয়াম ১৩ মিলিগ্রাম, পটাশিয়াম ৪১৫ মিলিগ্রাম আছে। 


কার্বোহাইড্রেট ১৮ গ্রাম, ফাইবার ২ গ্রাম, সুগার ১.৭ গ্রাম, প্রোটিন১.৮ গ্রাম, ভিটামিন সি ৮%, ভিটামিন বি-৬ ১০%, ক্যালসিয়াম ১%, আয়রন ৩%, ম্যাগনেসিয়াম ১০%। উল্লেখিত পুষ্টিগুণে ভরপুর আদা। আপনি বলেন আদা কে কেন সকল রোগ নিরাময়ের দাদা বলা হয়। নিশ্চয়ই আপনি এখন ব্যাপারটি বুঝতে পেরেছেন।

সকালে খালি পেটে আদা খেলে কি হয়?

সকালে খালি পেট আদা খেলে কি হয় ? আমাদের সকলের তা জানা উচিত। সকালে খালি পেটে আদা খাওয়ার অনেক উপকারিতা আছে। আদা আমাদের খাদ্য হজমে সাহায্য করে তাছাড়া শরীরের ওজন কমাতে সাহায্য করে। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। খালি পেটে আদা খেলে গ্যাস জনিত সমস্যা বদহজম এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়। 

সকালে-খালি-পেটে-আদা-খেলে-কি-হয়?

তাছাড়া খালি পেটে আদা খেলে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমে যায়। আমাদের যদি কারো হৃদরোগ এর সমস্যা থাকে তাহ... সকালে খালি পেটে আদা খেলে হৃদরোগ সহ স্ট্রোকের মত রোগের ঝুঁকি থাকে না। আদা আমাদের শরীরের অতিরিক্ত ওজন কমাতে সাহায্য করে এবং শরীরের রক্ত সঞ্চালন বাড়ায়। আদা খেলে নানা রকম সংক্রমণ রোধে সাহায্য করে। তাছাড়া আদার সাথে দুধ মিশিয়ে খাওয়া যেতে পারে। এটাতে অনেক উপকার পাওয়া যায়।

ভরা পেটে আদা খাওয়ার উপকারিতা

ভরা পেটে আদা খাওয়ার উপকারিতা অনেক। আমরা ভরা পেটে আদা জল খেতে পারি। এতে আমাদের হজম শক্তি ভালো হওয়ার এবং অস্বস্তি দূর হয়। তাছাড়া আদায় থাকা প্রাকৃতিক উপাদান গুলো আমাদের বমি ভাব দূর করতে সাহায্য করে। বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা গলা ব্যথা, শ্বাসনালীতে ফুলা ভাব কমাতে সাহায্য করে। 


এছাড়াও আদা আমাদের শরীরের অতিরিক্ত ওজন কমাতে সাহায্য করে। ভরা পেটে আদার সাথে মধু মেশে খেলে অনেক উপকার পাওয়া যায়। আদা মেহ রোগীদের জন্য অত্যন্ত উপকারী। অনেক বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, আমাদের খাদ্য তালিকায় ৫ গ্রাম পর্যন্ত আদা রাখা যায়। তবে অতিরিক্ত ওজন কমানোর জন্য একগ্রাম আদায় যথেষ্ট।

আদায় থাকা পুষ্টি উপাদান গুলো হল;
  • ভিটামিন এ-১.৮ গ্রাম
  • ভিটামিন বি-৬-১০%
  • ভিটামিন সি-৮%
  • আয়রন-৩%
  • ক্যালসিয়াম-১%
  • ম্যাগনেসিয়াম-১০%
  • পটাশিয়াম ৪১৫ মিলিগ্রাম
  • সুগার-১.৮ গ্রাম
  • সোডিয়াম-১৩ মিলিগ্রাম
  • পলি সেচুরেটেড চর্বি-০.২ গ্রাম
  • চর্বি-0.২ গ্রাম
  • ক্যালোরী-০.৮ গ্রাম
  • কার্বোহাইড্রেট-১৮ গ্রাম
  • প্রোটিন-১.৮ গ্রাম।

পুরুষদের জন্য আদা খাওয়ার উপকারিতা

পুরুষদের জন্য আদা খাওয়ার উপকারিতা অনেক বেশি। আদা খেলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে এবং হজম শক্তি বৃদ্ধি পায়। তাছাড়া আদা পুরুষের জন্য শরীরে তাপমাত্রা বাড়াতে সাহায্য করে এবং শুক্রাণু উৎপাদনে সাহায্য করে। তাছাড়া আধা রয়েছে প্রচুর পরিমাণে এন্টি এক্সিডেন্ট, ফাইবার এবং মাইক্রোবিয়াল বৈশিষ্ট্য। 


যা আমাদের শরীরের রক্তের সঞ্চালন বাড়িয়ে দেয়, হজম শক্তি বাড়িয়ে দেয়, হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া ঠিক রাখে, কোলেস্ট্রল এর মাত্রা কমিয়ে ্দেয়, হার্ট অ্যাটাকের সমস্যা বা ঝুঁকি থাকে না। নিয়মিত আদা খেলে শরীরের আর্থাইটিস থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। একজন পুরুষ দৈনিক আদা খাবারের ফলে স্ট্রোকের মত রোগী থাকে না।

রাতে আদা খাওয়ার উপকারিতা

রাতে আদা খাওয়ার অনেক উপকারিতা রয়েছে। আমাদের মাঝে যাদের কোষ্ঠকাঠিনের সমস্যা আছে। তাদেরকে রাতে আদা খাওয়া উচিত। রাতে আধা খাবারের ফলে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর হতে পারে। তাছাড়া রাতে আদা খাবারের ফলে হজম শক্তি বাড়ে এবং এসিডিটির সমস্যা থাকে না। রাতে আদা খাবারের ফলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে এবং আদা খেলে স্বাস্থ্য ভালো থাকে। 

রাতে-আদা-খাওয়ার-উপকারিতা

রাতে নিয়মিত আদা খেলে শরীরের প্রদাহ কমে যায়। একজন সুস্থ মানুষ দৈনিক ৫ গ্রাম আদা খেতে পারে। ওজন কমানোর জন্য এক গ্রাম আদায় যথেষ্ট। একজন গর্ভবতী মহিলা প্রতিদিন ২.৫ গ্রাম আদা খেতে পারেন। তাছাড়া গর্ভবতী মায়েদের জন্য চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী আদা খাওয়া যথেষ্ট হবে।

আদা খাওয়ার নিয়ম

  • আমরা বিভিন্নভাবে আদা খেতে পারি। সকালে খালি পেটে কাঁচা বা চিবিয়ে খেতে পারি। 
  • ভরা পেটেও আমরা কাঁচা বা চিবিয়ে খেতে পারি।
  • আদা থেতলা করে লবণের সঙ্গে মিশিয়ে রোদে শুকিয়ে তা হজমি হিসেবে খেতে পারে।
  • ঠান্ডা এবং জ্বর হলে আদা রসের সাথে মধু মিশিয়ে সমপরিমাণ কুসুম গরম পানি মিশিয়ে খেতে পারি।
  • পেট ফুলা বা হজম জনিত সমস্যা হলে কাঁচা আদার সাথে লবণ মিশিয়ে খাওয়া যায়।
  • বিভিন্ন সালাদ এর সাথে আদা যোগ করে খেতে পারি।
  • মুড়ি কিংবা চাল ভাজির সাথে আদা কুচি মিশিয়ে খেতে পারি। 
  • ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ঔষধ খাওয়ার আদা খাওয়া উচিত নয়।
  • উচ্চ রক্তচাপ জনিত রোগীদের জন্য ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী নিয়ম মেনে আদা খাওয়া উচিত।
  • খাবারের জিনিস পরিমিত খাওয়া উচিত। অতিরক্ত খেলে স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর।

লেখক এর শেষ মন্তব্য

উপরে উল্লেখিত আলোচনায় আমরা আদা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা আলোচনা করতে গিয়ে আদার ঔষধি গুণ এবং পুষ্টিগুণ সহ বিভিন্ন বিষয় আলোচনা করা হয়েছে। আপনারা যদি আমার আর্টিকেলটি ধৈর্য সহকারে পড়ে থাকেন তাহলে নিশ্চয়ই আপনি আধা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে পেরেছেন। 

আপনি যদি আমার আর্টিকেল পড়ে উপকৃত হন, তাহলে এর তথ্যসমৃদ্ধ আর্টিকেল পেতে নিয়মিত আমার ওয়েবসাইট ফলো করুন। আপনাদের follow আমাকে নতুন নতুন আর্টিকেল লিখতে উৎসাহিত করবে। আমার লেখায় আপনি যদি কোন কষ্ট পেয়ে থাকেন, তবে নিজ গুণে ক্ষমা করবেন। এতক্ষণের সঙ্গে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url